শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

নরসিংদীতে ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক খুন

মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
নরসিংদীতে ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক খুন

নরসিংদীর সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল হাসান (৪০) সন্ত্রাসীদের হামলায় খুন হয়েছেন। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সঙ্গে থাকা দুই কর্মী। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ভগীরথপুর এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ভগীরথপুর গ্রামের ইমাম উদ্দিনের ছেলে।

গুলিবিদ্ধ দু'জন হলেন- নিহত মাহবুবুল হাসানের কর্মী সাঈদ হাসান (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৩৭)।

স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক পৌনে ১২টায় ভগীরথপুর চেয়ারম্যান মার্কেটে অবস্থিত পার্টি অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন মাহবুবুল হাসান। প্রথমে তাকে ককটেল ও গুলি করে, পরে কুপিয়ে মৃতু্য নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় খুনিরা। হামলার পর স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহত মাহবুবুল হাসানের সঙ্গে থাকা কর্মী রবিউল হাসান ও অপু মিয়া বলেন, 'রাত পৌনে ১২টার দিকে ইউনিয়নটির বর্তমান চেয়ারম্যান আজাহার অমিতের ব্যক্তিগত কার্যালয়সংলগ্ন ওবায়দুলস্নাহ টেক্সটাইল মিলের সামনে যাওয়ার পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটে।'

মাহবুব চেয়ারম্যানের ছোট ভাই হাফিজুল হাসান ও হাফেজ মো. অলিউলস্নাহ বলেন, 'ভাইয়ের জনপ্রিয়তার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার প্রতিপক্ষের লোকেরা ভয় পেয়েছে, কারণ তিনি বেঁচে থাকলে আগামী নির্বাচনে তারা বিজয়ী হতে পারবে না। তারা বহুবার ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। তারা ভাইয়ের জন্য মাদক কারবারি, চাঁদাবাজি করতে পারে না। এজন্য তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাই হত্যার বিচার চাই। এই হত্যার বিচার না হলে ভালো মানুষরা জনগণের সেবা করতে আসবে না।'

সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল হাসানকে হত্যার বিষয়ে মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান বলেন, 'নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে পুলিশ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করেছে। তদন্তের স্বার্থে আটকদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।'

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে? ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের ফলে কিছুদিন পর পর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটত। প্রাথমিকভাবে দ্বন্দ্বের ফলেই নারকীয় এই হত্যাকান্ডটি ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ৮ মে নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগের দ্বন্দ্ব আবারও মাথাচারা দিয়ে ওঠে। দলীয় কোন্দলের কারণে মাহবুবুল হাসান নির্বাচন করে কাপ-পিরিচ মার্কার প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেনের পক্ষে। অন্য গ্রম্নপগুলো নির্বাচন করে আনারস মার্কার প্রার্থী আব্দুল বাকিরের পক্ষে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেহেরপাড়ার বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্বাচনের দিনও দুই পক্ষের সংঘাত হয়। দেশীয় অস্ত্রসহ রড, লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ। নির্বাচনের দুই দিন পর ১০ মে আবারও আনারস ও কাপ-পিরিচ মার্কার সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন দুই পক্ষের প্রায় সাতজন আহত হয় এবং প্রায় ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস ভাঙচুর করা হয়।

এর আগে মাধবদী থানার আমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রুবেলকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে