মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় : দুই পুলিশ সদস্যসহ ৩ জনের কারাদন্ড

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার তৎকালীন এএসআই মো. মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল এস এম জুলফিকার আলীসহ তিনজনকে সাড়ে চার বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন, মো. নূর উদ্দীন আহমেদ। এছাড়াও অভিযোগ প্রামাণিত না হওয়ায় মো. নিরব হাসান সজিব নামে এক আসামির খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দন্ডবিধি আইনের ৩৪২ ধারায় ছয় মাসের কারাদন্ড ও ৩৮৮ ধারায় চার বছর সবশ্রম কারাদন্ড, চার হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও চার মাসের কারাভোগ করতে হবে। আসামিদের সবগুলো সাজা একত্রে ভোগ করতে হবে। এদিন রায় ঘোষণার আগে আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। মামলার অভিযোগে বলা হয়, মামলার বাদী খন্দকার নুরুজ্জামান রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের সঙ্গে কাজ করতেন। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বাদীর মোবাইলে উবারের মাধ্যমে মালিবাগ গুলবাগ রোড থেকে একটি কল রিসিভ করেন। রাস্তা কাটা বলে কল দেওয়া ব্যক্তি জানায় তার ছোট ভাই বাদীকে মালিবাগ মোড়ের ভেতরে স্বপ্ন নামে দোকানের সামনে থেকে পথ দেখিয়ে পিকআপ পয়েন্টে নিয়ে আসবে। সেই মোতাবেক বাদী স্বপ্ন দোকানের সামনে গেলে নিরব হাসান সজিব পথ দেখানোর কথা বলে মালিবাগ কালসির গলির শেষপ্রান্তে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশের পোশাকে আসামি মনিরুল ও জুলফিকারকে বাদী দেখতে পায়। আসামিরা বাদীর পরিচয় জিজ্ঞাস করে ও বাদীর গাড়ি তলস্নাশি করে। পরে ড্রাইভার সিটের পেছনে হাত বুলিয়ে একটি লম্বা ট্যাপে মোড়ানো ৪/৫টি ইয়াবা টেবলেটের মতো জিনিস কিছু বাদীকে দেখায় এবং বাদীকে ওই পণ্যের কারবারি বলে অভিযুক্ত করে। ওই সময় আরেক আসামি সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ও এস এম জুলফিকার বাদীকে মাদককারবারি বলে জানায় এবং হাতকড়া পরিয়ে আটকে ফেলে। অভিযোগে আরও বলা হয়, এক আসামি বাদীর গাড়িতে উঠে এবং গাড়ি চালিয়ে বড় গেট লাগানো খালি এক জায়গায় নিয়ে যেতে বলে। বাদী ওখানে যাওয়ার পর এক আসামি গেট বন্ধ করে দেয় একটি একচালা টিনের ঘরে নিয়ে যায়। এরপর বাদীকে বসতে বলে, একপর্যায়ে আসামিরা সমঝোতা করতে চাপ প্রয়োগ করে। বাবু নামে আরেক আসামির সঙ্গে কথা বলে ৬০ হাজার টাকায় সমঝোতা হয়। বাদী টাকা দিতে না চাইলে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ধরিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয় আসামিরা। বাদী অসুস্থ ও ডাইবেটিসের রোগী বলে শেষ নাগাদ ২৫ হাজার টাকায় রফাদফা হয়। আসামিদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে শাহজাহানপুর থানায় পাঁচজনের নাম উলেস্নখ করে খন্দকার নুরুজ্জামান মামলাটি দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু সিদ্দিক ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলার সময়ে ১২ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।