বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী

যতই মুরুব্বি ধরুক, এদের আমরা ছাড়ব না

প্রকাশ | ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেওয়ার পর জোটের নেতারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান -ফোকাস বাংলা
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যতই মুরুব্বি ধরুক, এদের আমরা ছাড়বো না। এদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কল্যাণ হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আরও সুসংগঠিত হওয়ার পরামর্শ দেন। ১৪ দল নেতাদের তিনি বলেন, 'আপনারা এসেছেন, ভালো হয়েছে। আমি খুশি হয়েছি। সবার কথা শুনব। কীভাবে কী করা যায়।' স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আরও সুসংগঠিত হয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে উলেস্নখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কল্যাণ হবে না। গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি; ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে রোজই আন্দোলন, সরকার উৎখাতসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেয়। যতক্ষণ জনগণ আছে সঙ্গে ওটা আমি কেয়ার করি না। এরপরও দেশে জ্বালাও-পোড়াও-অগ্নিসংযোগ এগুলো যেন না করতে পারে। এগুলো যারা করবে, তাদের কোনো ছাড় নাই।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মুদ্রাস্ফীতি সব দেশের মতো বাংলাদেশেও হচ্ছে। একই কথা রিজার্ভেও। রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কেননা, আপৎকালীন খাদ্য মজুত রয়েছে। এতবেশি আলোচনার কারণে আজ প্রায় সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। এই সতর্কতা দেশের জন্য ভালো।' সমবায়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ধান-মাছ চাষ হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'সেখানে ছয় বিঘা জমি দিয়েছি আমি। সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে এখন শরীয়তপুরের সবজি। ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত অতিক্রম করেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।' সবসময় সাধারণ-নির্যাতিতদের পাশে আছেন বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গারা কবে ফেরত যাবে, জানি না। প্রতিদিন সেখানে নতুন নতুন শিশু জন্মাচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ-সংঘাত করতে যাইনি আমরা। আলোচনা চালানো হচ্ছে। তবে মিয়ানমারের নিজেদেরই অবস্থা ভালো না।' তিনি বলেন, 'উৎপাদনে কোনো সংকট নেই দেশে, তবে ইনফ্লেশন কমানোটা চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতের করণীয় ঠিক করতে আলোচনা হবে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, যেটা গেল ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এরপরও শুনতে হয়, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সরকার তো কারও গলা টিপে ধরেনি?' শেখ হাসিনা বলেন, 'বিজয় ও স্বাধীনতার চেতনা নস্যাৎ করতেই ২৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয়। এর পর থেকেই দেশটা শুধু পেছাতে থাকে। সরকার যে জনগণের জন্য কাজ করে, কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ এটা বুঝতে পারে।' গ্যাস বিক্রির চুক্তিতে রাজি হননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'শক্তিশালী (যুক্তরাষ্ট্র) দেশটি সেই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মতো দৈনতায় ছিলাম না কখনো।' বাংলাদেশে এয়ার বেজ বানাতে দিলে, 'কারও কারও নির্বাচনে জিততে কোনো সমস্যা নেই... এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু রাজি হইনি আমি। বে অব বেঙ্গলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঘাঁটি বানাবে। ভারত মহাসাগরের এই শান্তিপূর্ণ জায়গাটার ওপর তাদের নজর। এখানে বেজ বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়? আমি এটা করতে দিচ্ছি না বলেই খারাপ।' চক্রান্ত এখনো চলমান রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'জনগণ সঙ্গে রয়েছে, তারাই সামনে চলার মূল শক্তি।'