শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১
সংগঠনের নেতাকে হত্যার হুমকির জের

রাবিতে মাঝরাতে অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের মহড়া

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সোমবার রাতে মাদার বখশ হলের সামনে দেশীয় অস্ত্র, রামদা, রড ও ইট-পাটকেল নিয়ে মহড়া দেন -সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী হলে শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের রেশ কাটতে-না কাটতেই সংগঠনের এক নেতাকে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সোমবার রাতে মাদার বখশ ও হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী হলের মধ্যবর্তী রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র, রামদা, রড ও ইট-পাটকেল নিয়ে মহড়া দেন।

পরে রাত সোয়া ৩টায় হল প্রশাসন ও পুলিশ সোহ্‌রাওয়ার্দী হলে তলস্নাশি করে। অভিযান শেষে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

হোসেন শহীদ সোহ্‌রায়ার্দী হলের সহসভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, 'হলে যাওয়ার সময় গেটে হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ ও তার অনুসারীদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। ওই সময় তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিতে থাকেন। এমনকি আমার পা ভেঙে হত্যার হুমকিও দেয়। পরে বিষয়টি জানালে নেতাকর্মী হলের সামনে জড়ো হন।'

সরেজমিন দেখা যায়, মাদার বখশ ও সোহ্‌রাওয়ার্দী হলের মধ্যবর্তী রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুলস্না-হিল-গালিবের অনুসারীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। এক পক্ষের এই উত্তেজনা ও অস্ত্রশস্ত্র দেখে কয়েক গাড়ি পুলিশ এবং পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের (ডিবি) সদস্যরা সেখানে যোগ দেন।

খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ প্রশাসক প্রণব কুমার পান্ডে, সোহ্‌রাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন।

এরপর রাত সোয়া তিনটার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান এবং আসাদুলস্না-হিল-গালিব অভিযোগ করেন, সোহরাওয়ার্দী হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে। পরে হল প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা ওই হলে অভিযান চালায়। এরপর মঙ্গলবার ভোর প্রায় পাঁচটার দিকে

নেতাকর্মী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নিয়াজ বলেন, 'রাতে সবার সামনেই আমি কয়েকজন ছোটভাই নিয়ে হলে প্রবেশ করি। প্রবেশ করার সময় আতিকের সঙ্গে দেখা হয় ঠিকই; কিন্তু কোনো কথা হয়নি। আবার মূল গেট দিয়েই বের হয়েছি আমি। তবে এ সময় আমার সঙ্গে কোনো বহিরাগত ছিল না।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুলস্না-হিল-গালিব সাংবাদিকদের বলেন, 'ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পার্শ্ববর্তী জোহা হল এবং মাদার বখ্‌শ হলের ছাদ থেকে বেশকিছু বহিরাগতকে ডাইনিংয়ের ছাদ দিয়ে হলে প্রবেশ করতে দেখে। তাই ওরা প্রক্টর স্যারকে জানায়। এরপর প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় হলে অভিযান চালায়। তবে তাদের এক নেতাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে নেতাকর্মী জড়ো হয়েছিল।'

সোহ্‌রাওয়ার্দী হলে অভিযান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা বেশকিছু সূত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, এই হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে আমরা অভিযান চালাই। এ সময় একটি চাইনিজ কুড়ালের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। কিছু সন্দেহজনক কক্ষে অভিযান চালিয়ে সেখানে কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়েছি। কিন্তু কোনো বহিরাগতদের হলে পাওয়া যায়নি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে