বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডেভিড স্স্নেটন মিলকে মনোনয়ন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস বৃহস্পতিবার এতথ্য জানায়।
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে অনুমোদনের জন্য মিলের নাম মার্কিন সিনেটে পাঠানো হয়েছে। সিনেটে শুনানির পর মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে মিলকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঢাকায় পাঠানো হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে কাউকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মনোনয়ন অনুমোদনের জন্য সিনেটে পাঠানো হয়। সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর নতুন রাষ্ট্রদূতকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ করা হয়।
অনুমোদন চূড়ান্ত হলে ২০২১ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন ডেভিড মিল। এর আগে ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে উপমিশন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা এই কূটনীতিক বর্তমানে বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে উপমিশন প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
অভিজ্ঞ কূটনীতিক মিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনীতি ও ব্যবসাবিষয়ক বিভাগে উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন। একই বিভাগের নিষেধাজ্ঞানীতি ও বাস্তবায়নবিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ঢাকা, বেইজিং ছাড়াও তিনি ইউক্রেনের মার্কিন দূতাবাসে কাজ করেছেন।
ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে, স্প্রিন্ট টেলিকমিউনিকেশনের করপোরেট ফাইন্যান্স কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন মিল। ভার্জিনিয়ায় জন্ম নেওয়া এই কূটনীতিক ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ও টুলেন ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) শেষ করেন।
পরে তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির আইজেনহাওয়া স্কুল থেকে আরেকটি স্নাতোকত্তর ডিগ্রি নেন। তা ছাড়া কর্মক্ষেত্রে সফলতা পেতে তিনি চীনা, ইউক্রেনীয় ও ফরাসি ভাষাও রপ্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগে অসামান্য অবদান রাখায় বেকার-উইলকিন্স পুরস্কার পেয়েছেন ডেভিড মিল।
স্বাগত জানাল বাংলাদেশ
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্স্নেটন মিলকে মনোনীত করার সিদ্ধান্তকেত স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ মনোনয়নকে আমরা স্বাগত জানাই। মাস দেড়েক আগে এ বিষয়টা আমাদের জানানো হয়েছে। এখন তারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। আশা করছিত্ম নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বিশ্বের কোনো দেশেই মানবাধিকার আদর্শ অবস্থানে নেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ যেভাবে দমন করছে, সেটি আমরা টিভির পর্দায় দেখছি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নাগরিক আন্দোলনকে কীভাবে পুলিশ দমন করছে, সেটিও আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, সব দেশের উচিত মানবাধিকার উন্নয়নে একযোগে কাজ করা। আমরাও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই।