পরামর্শে কর ছাড় প্রত্যাহারে সতর্ক হতে হবে :সিপিডি
প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে; যেসব প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো এখন কমাতে হবে। দক্ষতা, স্বচ্ছতা, সততা ও জনমানুষের কথা মাথায় রেখে এসব প্রত্যাহার করার পরামর্শ দিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, যেসব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উপকৃত হয়েছে সেগুলো সুরক্ষা দেওয়া উচিত।
মঙ্গলবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক সভার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেবপ্রিয় বলেন, এবারের সরকারের শক্তি জায়গা হলো ফসল ভালো হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এবারের আউস-আমন-বোরোর উৎপাদন বেড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রথম কাজ হবে সরকারি গোডাউনগুলো ভর্তি করা। স্টক বাড়ান। বাজারকে প্রভাবিত করার জন্য স্টক হলো প্রথম কাজ।
তিনি বলেন, কার্ডের মাধ্যমে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়, সেই তালিকা আপডেট ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ে তালিকা যাচাইয়ের জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তালিকা প্রকাশ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ প্রকাশের ক্ষেত্রে এটা একটি স্তর হতে পারে। তাহলে স্থানীয় পর্যায়ে মিলিয়ে দেখবে, খাদ্য সহায়তা দেওয়ার তালিকা করা হয়েছে। যাদের সহযোগিতার দেওয়া হচ্ছে, এটা উপযুক্ত কিনা দেখা দরকার।
তিনি বলেন, খোলা বাজারের মাধ্যমে বিভাগীয়
ও জেলা শহরে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এটা উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নিম্নবিত্তরাও এই খাদ্যের প্রয়োজন অনুভব করছে। এমন একটি সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসু্য।
দেবপ্রিয় আরও বলেন, প্রবাসী আয় হুন্ডির মাধ্যমে আসছে। ফলে দেশে প্রবাসীদের স্বজনরা টাকা পেলেও ডলার থেকে যাচ্ছে বিদেশে। প্রবাসী আয় দেশে আসার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। বৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আনতে ২ বা ৩ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে হুন্ডি বন্ধ করা যাবে না। এটা নমনীয় হারে যেতে হবে। একইভাবে সুদের হার নমনীয় করতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য হলো সুদের হার নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মুহূর্তে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতি সমন্বয় বিকল অবস্থায় আছে। একটি বেশি চলে যায়, আরেকটি পিছিয়ে যায়। এটার সমন্বয় দরকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এখন বড় দুর্ভাগ্য হলো নীতি নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে গেছে। সরকারের নীতি ব্যাখ্যা করার জন্য কোনো মানুষ দেখছি না এই মুহূর্তে। যাদের এ দায়িত্ব তারা সে দায়িত্ব পালন করেন বলে মনে হয় না। যা বাজারকে সংকেত দেয়। বাজার যদি সংকেত না পায় তাহলে সরকারের ওপর ভরসা আসে না।'
'ডাল মে কুচ কালা'
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবা?দিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মানে সেখানে 'ডাল মে কুচ কালা হে', এমনটাই ইঙ্গিত দেন বেসরকা?রি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, 'এতদিন তথ্যে নৈরাজ্য চল?ছিল, এখন অপঘাত ঘট?ছে। বাংলা?দেশ ব্যাংকে সাংবা?দিক প্রবেশ করতে দি?চ্ছে না। এর মা?নে তা কী বার্তা দি?চ্ছে। এখন ওখা?নে এমন কিছু ঘট?ছে তা য?দি জনসমক্ষে প্রকাশ পায় তাহ?লে বড় ধর?নের নাশকতা হ?য়ে যা?বে। এই নাশকতাকারীরা হ?চ্ছে বাংলা?দে?শের অর্থনৈ?তিক বিটের সাংবা?দিকরা।'
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ব?লেন, 'আমা?দের একটা গর্ব ছিল, বি?দে?শি ঋণ নি?য়ে কখ?নো খেলা?পি হইনি আমরা। কিন্তু সম্প্রতি তেল আমদা?নি ক?রে আমরা অর্থ প?রি?শোধ কর?তে পার?ছি না। বি?দে?শি?রা মুনাফার নি?তে পার?ছেন না, এয়ারলাইন্স ব্যাবসায়ীরা অর্থ পা?চ্ছেন না। তার মা?নে গর্বের জায়গায় ফাটল ধ?রি?য়ে দি?য়ে?ছে। এসব তথ্য-উপাত্ত বাংলা?দেশ ব্যাংক দেয়। সেখা?নে প্রবেশ নি?ষেধ। তার মানে সেখা?নে 'ডাল মে কুচ কালা হে'। এখন এটা কি মসুর ডাল না কি মুগ ডাল না?কি সব জায়গায় ডাল; এটাই এখন বোঝার বিষয়। দেশ এখন এলডিসির দিকে যা?চ্ছে। সরকার ডি?জিটাল ও স্মার্ট বাংলা?দেশ বল?ছে।' এই সময় তথ্যের নৈরাজ্য সম্পূর্ণভা?বে সাংঘর্ষিক ব?লে মন্তব্য ক?রেন তিনি।
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ও ইং?রে?জি দৈ?নিক দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ এবং ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উলস্নাহ মীরধা।