উপজেলা নির্বাচন

উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রথম ধাপের ভোট আজ

মন্ত্রী-এমপিরা প্রভাব বিস্তার করলে ব্যবস্থা : সিইসি পাঁচ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত ৪১৮ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

ব্যাপক উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ১৩৯ উপজেলা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। মোট ২২ উপজেলায় ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। তবু ভোটে প্রভাব বিস্তার করেন কি না, তা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসির তথ্যমতে, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দুর্গম এলাকার ৪২৪ কেন্দ্রে মঙ্গলবার ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে আজ সকালে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী (উপজেলায়) এলাকায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ১০ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন অর্থাৎ মোট ২৮ প্রার্থী বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে ১৪১ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল আজ। কিন্তু কুমিলস্নার নাঙ্গলকোট ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য 'ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার' এর আওতায় ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে আগের চেয়ে নিরাপত্তা বলয় বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ থেকে ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। ভোটকেন্দ্রে এর আগে কখনও এত বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল না। এছাড়া প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন দশজন আনসার সদস্য থাকবে। আর ছয়টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবে। আনসার থাকবে তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন।' উপজেলার ভোট নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উৎসবের পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে নির্বাচনী এলাকায়। প্রচারণা নিয়েও অনেক জেলায় সংঘর্ষ-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী না দিলেও ভোটের মাঠে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে। প্রথম ধাপে জাতীয় পার্টি মাত্র এক উপজেলায় প্রার্থী দিয়েছে। এ ছাড়া সব প্রার্থীই স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে ক্ষুব্ধ রয়েছেন দলের মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতা ও তাদের সমর্থকরা। দলের হাইকমান্ডও বিষয়টি নিয়ে বিব্রত। তবে এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতারা ছাড়াও বিএনপি নেতারাও কয়েকটি উপজেলায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। দলের নির্দেশনা অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় অনেক নেতাকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটেছে। সব মিলিয়ে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে উৎকণ্ঠার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। তথ্য অনুযায়ী, হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর এই পাঁচটি উপজেলার সব পদের প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদেই ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ পস্নাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুইদিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন। আজ ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। ভোট গ্রহণের সাত দিন আগে ও ভোট গ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত লাইসেন্সধারীদের অস্ত্রসহ চলাচল না করতে কিংবা বহন ও প্রদর্শন না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী-এমপিরা প্রভাব বিস্তার করলে ব্যবস্থা : সিইসি এদিকে, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। তবু কোনো মন্ত্রী ও এমপি (সংসদ সদস্য) ভোটে প্রভাব বিস্তার করেন কি না, তা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি করা হবে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট হবে আজ। এই ধাপে দেশের ১৪০ উপজেলায় ভোট হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাবিবুল আউয়াল বলেন, এ বিষয়ে কমিশন বেকায়দায় নেই। বরং এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা স্পষ্ট হয়েছে। সিইসি বলেন, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার না করতে মন্ত্রীদের নিবৃত্ত করতে পেরেছেন তারা। তবে এখনো এলাকায় অনেকে আছেন। কেউ যাতে প্রভাব বিস্তার না করেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাবিবুল আউয়াল বলেন, এবারের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। কে কোন দল করেন, কে কোন দলের প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন তা দেখে না। নির্বাচন কমিশন দেখে প্রার্থী। কে নির্বাচনে এল, কে এল না, তা দেখা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয়। এবারের নির্বাচনে প্রতিটি উপজেলায় গড়ে চারজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, প্রার্থী আছেন কি না তা দেখা। ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের কেমন পার্থক্য দেখেন- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, একটা জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আরেকটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এটাই পার্থক্য। তবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিযোগিতা বেশি। উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উত্তেজনা বেশি। সে উত্তেজনা যাতে সহিংসতায় রূপ না নেয়, নির্বাচন কমিশন সে বিষয়ে সতর্ক আছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। নানা কারণে এখন ১৪০ উপজেলায় নির্বাচন হবে। ইভিএমে ভোট হবে ২২ উপজেলায়। ৫ উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ জন সদস্য থাকবেন। স্পর্শকাতর কেন্দ্রে থাকবেন ১৯ জন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সবার সহযোগিতা চান তিনি। তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম ও অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ছিলেন। \হ নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত নাঙ্গলকোট (কুমিলস্না) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণের একদিন আগে সোমবার রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করেন। নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ছালেহা বেগম হাইকোর্ট বিভাগে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার জন্য রিট দায়ের করলে হাইকোর্ট বিভাগ গত ২৫ এপ্রিল এক আদেশে তার মনোনয়নপত্রটি বৈধ প্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতীক বরাদ্দের জন্য আদেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল মামলা দায়ের করলে সোমবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। ফলে আপিল বিভাগের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের সকল পদের নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। রংপুরে সংঘাতের আশঙ্কা রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার প্রথম ধাপে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় ভোটগ্রহণ আজ। কাউনিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা তিন প্রার্থীর মধ্যে দু'জনই আওয়ামী লীগ সমর্থিত। একজন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সমর্থিত রয়েছে। নির্বাচনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। দুই প্রার্থীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে বিরোধ রয়েছে। অন্যজন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সমর্থিত অ্যাড. হুমায়ুন কবির মুকুল। এর পাশাপাশি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থীর মধ্যে কাউনিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহমুদুল হাসান পিন্টু, জেলা কৃষকলীগের সদস্য মনজুদার রহমান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুশান্ত সরকার, আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির এবং সিপিবি সমর্থিত গণেশ কুমার। পীরগাছা উপজেলা নির্বাচনে মাঠে থাকা ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ২ জন আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা। এরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ। এর বিপরীতে রয়েছেন জাতীয় পাটির সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাছের শাহ মো. মাহবুবার রহমান। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জনের মধ্যে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শারেখ খন্দকার জয় ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইকবাল, জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহিম এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন অনু। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬ জনের মধ্যে ৫ জনই উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের শীর্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেত্রী। এরা হলেন- শারমীন আখতার, ইসরাত জাহান, জরিনা বেগম, তানজিনা আফরোজ ও মাহমুদা খাতুন। এদের বিপারীতে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী দলটির পীরগাছা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রেহেনা বেগম। সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, মূলত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মধ্যেই লড়াই হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা চলতে পারে। যে কারণে সংঘাতের আশঙ্কাও রয়েছে। এদিকে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে বিজেবি,র্ যাব, পুলিশ আনছার সদস্যদের নিয়ে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্ যাব-১৩ উপপরিচালক (মিডিয়া) স্কোয়াড্রন লিডার মাহমুদ বশির আহমেদ জানিয়েছেন, ভোটে শান্তি শৃঙ্খলা ৩টি স্টাইকিং ফোর্স ও একটি ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে। ৪১৮ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন মঙ্গলবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে 'ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার' এর আওতায় ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

 

সিরাজগঞ্জে ৬ জন গ্রেপ্তার 
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সদর উপজেলায় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে একজন প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে ৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক সহকারী শিক্ষককে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ কারণে নতুন করে ১০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনি হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আবু সামা, বাহুকা কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ জোনাল অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত এবং এদের সমন্বয়ক শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলাম।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি রোববার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কাদাই এলাকার গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টের অভ্যন্তরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত কতিপয় প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য গোপন বৈঠক করছেন। সংবাদ পাওয়ার পরই সেখানে পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের সমন্বয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে তাদের পাওয়া যায়নি। অভিযানকালে ঘটনাস্থল থেকে সিসি টিভির ফুটেজ ও ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, এ সংক্রান্ত বিষয়ে সোমবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এদের মাস্টার মাইন্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 
তবে কোনো প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করা হচ্ছিল সে বিষয়টি আরও তদন্তের পর জানানো হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পাবনায় বিপুল অর্থসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী গ্রেপ্তার, ১২ ঘণ্টা পর মুক্তি 
পাবনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ, ১০ সহযোগী ও দুটি যানবাহনসহ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী (বর্তমান চেয়ারম্যান) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনকে আটক করে র‌্যাব। তবে আটকের ১২ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে র?্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্প থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র?্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, ‘আটকের পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যেই টাকা জব্দ করা হয়েছিল সেটি নির্বাচনী ব্যয়ের সীমার মধ্যেই ছিল। জব্দকৃত টাকা ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হবে এবং শাহীনসহ সবাইকে  ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি আরও তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘আমর নির্বাচনী ব্যয় পরিশোধের জন্য টাকাগুলো আনা হচ্ছিল। এটা কোনো অসৎ উপায়ের জন্য ব্যবহার হচ্ছিল না। সম্পূর্ণ বৈধ টাকা। আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিজয় ঠেকাতে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আজকের ঘটনার তারই বহিঃপ্রকাশ।’
র‌্যাব জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুজানগরের চর ভবানিপুর মুজিব বাঁধের ওপর থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় শাহীনের কাছ থেকে ব্যাগভর্তি ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭শ টাকা জব্দ করা হয়েছে। টাকাগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে শাহীনুজ্জামান শাহীন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। আটকদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে, তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে, শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ আটকদের মুক্তির দাবিতে সুজানগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তার স্বজনসহ সমর্থকরা। মঙ্গলবার ভোর থেকে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সুজানগর থানার সামনে সুজানগর বাজারের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে মুক্তির খবর সেখানে পৌঁছালে তারা অবরোধ তুলে নেন। 

শাজাহান খানকে ইসির চিঠি
এদিকে, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছেলের পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে সংসদ সদস্য শাজাহান খানকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সোমবার রাতে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে গত রোববার বিকালে চিঠিটি শাজাহান খানের মাদারীপুর বাসভবনে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খান। তার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান। চাচা-ভাতিজার এ লড়াইয়ে উভয়ই পরস্পরের বিরুদ্ধে করছেন বিস্তর অভিযোগ।
এদিকে নির্বাচনে এলাকায় থেকে কোনো সংসদ সদস্য প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না- এমন নীতিমালা থাকলেও তা অমান্য করে ছেলের পক্ষে প্রচারণায় কাজ করার অভিযোগ ওঠে শাজাহান খানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শাজাহান খানের চাচাতো ভাই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগও দেন।
অভিযোগে বলা হয়, সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শাজাহান খান ছেলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। গোপনেও ইউনিয়ন পর্যায়ে একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া শফিক খান সংবাদ সম্মেলন করেও সাংবাদিকদের এ অভিযোগ জানান।
চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে ১৫টিরও বেশি চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেখানে ২২টি অভিযোগ করা হয়েছে। একটিরও কোনো ব্যবস্থা নেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা। নির্বাচন কমিশনের এমন চুপ থাকাটা প্রশ্নবিদ্ধ। শাজাহান খানের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে নির্বাচনের দিন ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করা হবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এতে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
শফিক খানের আনীত অভিযোগ অস্বীকার এবং পাল্টা অভিযোগ করে আসিবুর রহমান আসিব খান বলেন, ‘নির্বাচনের দিন সন্ত্রাসী কর্মকাÐ পরিচালনার জন্য নানা কিছু করে যাচ্ছেন শফিক খান। বিভিন্ন মানুষের মাঝে টাকা ছড়াচ্ছেন, বহিরাগতদের দিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন, এর কারণ তিনি বিজয়ী হতে পারবেন না, এটা জেনে গেছেন।’
অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে যখন থাকি, তখন স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথাবার্তা বলি। এর বাইরে অন্য কিছু না। যারা অভিযোগ দিচ্ছে, তারা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য এ কাজ করছে।’
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী বলেন, ‘শফিক খানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাজাহান খানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনী কোনো কার্যক্রমে অংশ না নিতেও বলা হয়েছে।’

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ তোলেন তিনি। 
সুদেব সাহা বলেন, ‘সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার ফুফাতো ভাই ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসরাফিল হোসেনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে দলীয় নেতাকর্মীদের পদ থাকবে না হুমকি দিয়েছেন জাহিদ মালেক। একজন সংসদ সদস্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেওয়ায় দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে ও ভীতি সৃষ্টি হচ্ছে।’ 
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার সকালে শুভ্র সেন্টার গড়পাড়ায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ইমাম, মোয়াজ্জেম, মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে সভা করেন সাবেক মন্ত্রী। সেই সভায় তিনি আপত্তিজনক ও সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ফলে ধর্মীয় সম্প্রতি বিনষ্ট ও সংখ্যালঘুদের মাঝে অনাস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া নির্বাচনের আগে সরকারি প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের আশ্বাস দিচ্ছেন, যা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন। বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের ডেকে এমপি তার ফুফাতো ভাইয়ের পক্ষে কাজ করার জন্যও চাপ সৃষ্টি করছেন। এতে জনপ্রতিনিধিরা অসহায় বোধ করছেন।’
শুধু তাই নয়, জনপ্রতিনিধিদের এমপি জাহিদ মালেক তার ভাইকে ভোট দিতে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে মাদ্রাসা শিক্ষকরা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে ইসরাফিল হোসেনের পক্ষে কাজ করতে বলা হয়েছে। এটিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এমপির এমন হস্তক্ষেপ সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সুদেব সাহা।

আজ যেসব উপজেলায় নির্বাচন
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে আজ যেসব উপজেলায় ভোট হবে তার মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের- জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, কালাই ও আক্কেলপুর; বগুড়ার সারিয়াকান্দা, সোনাতলা ও গাবতলী; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট; নওগাঁর ধামইরহাট, পতœীতলা, মহাদেবপুর ও বদলগাছী; রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর; নাটোরের নাটোর সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া; সিরাজগঞ্জের সদর, কাজিপুর ও বেলকুচি; পাবনার সাঁথিয়া, সুজানগর ও বেড়া।
বগুড়া অঞ্চলের- পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোরিয়া; ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর; নীলফামারীর ডোমার ও ডিমলা; দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর ও বিরামপুর; লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা; রংপুরের কাউনিয়া ও পীরগাছা; কুড়িগ্রামের রৌমারী, চররাজিবপুর ও চিলমারী; গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছড়ি। 
খুলনা অঞ্চলের মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর; কুষ্টিয়ার খোকসা, কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী; চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও দামুড়হুদা; ঝিনাইদহের সদর ও কালীগঞ্জ; যশোরের মনিরামপুর ও কেশবপুর; মাগুরার সদর ও শ্রীপুর; নড়াইলের কালিয়া; বাগেরহাটের রামপাল ও কচুয়া; সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর।
বরিশাল অঞ্চলের বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও ভাÐারিয়া।
ঢাকা অঞ্চলের ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ; গোপালগঞ্জের গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া; নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দর; গাজীপুরের সদর, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া; রাজবাড়ীর কালুখালী ও পাংশা; মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও হরিরামপুর; ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, মধুখালী ও ফরিদপুর সদর; মাদারীপুরের সদর ও রাজৈর; শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ; নরসিংদীর সদর ও পলাশ; টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী, মধুপুর ও গোপালপুর; মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া; কিশোরগঞ্জের সদর, হোসেনপুর ও পাকুন্দিয়া। 
ময়মনসিংহ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে- ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর; জামালপুরের সদর ও সরিষাবাড়ী; শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী; নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা।
সিলেট অঞ্চলে সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা; সিলেটের সদর, বিশ্বনাথ, গোলাপগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা; মৌলভীবাজারের জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং। 
কুমিল্লা অঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সরাইল; কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম; চাঁদপুরের মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর; ফেনীর ফুলগাজী ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর; ল²ীপুরের রামগতি ও কমলনগর।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুন্ডু ও স›দ্বীপ; কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, কক্সবাজার সদর ও মহেশখালী।