প্রচারণা শেষ প্রথম ধাপের ভোট কাল
প্রকাশ | ০৭ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রম্নতি আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের ১৪১ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আগামীকাল ৮ মে এসব উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি। কমিশন বলছে, যে কোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ করা হবে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ৬ মে তারিখের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আগামী ৮ মে রংপুর বিভাগের ১৯টি, রাজশাহী বিভাগের ২৩টি,
খুলনা বিভাগের ১৭টি, বরিশাল বিভাগের ৫টি, ঢাকা বিভাগের ২৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি, সিলেট বিভাগের ১১টি ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২৮টি উপজেলায় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফশিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা বা উপশাখা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে দেশে কার্যত সব তফশিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ১৪১টি উপজেলা পরিষদের (সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী) সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের দিন অর্থাৎ ৮ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা হলো।
গত ২৩ এপ্রিল প্রথম ধাপের চূড়ান্ত প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পান। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রার্থীরা প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামেন। বৈশাখের খরতাপেও ক্লান্তিহীন ভোটের মাঠ চষে বেড়ান প্রার্থী ও সমর্থকরা। ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টারে ছেয়ে যায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলো। ভোটারদের মন জয়ে নানা প্রতিশ্রম্নতি দেন তারা।
এ ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বান্দরবানের রোয়াংছড়িসহ তিন উপজেলার ভোট স্থগিত করে ইসি। ফলে বিনাভোটে বিজয়ীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ জনে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মাদারীপুরের শিবচর ও ফেনীর পরশুরামে তিনটি পদের প্রার্থীরাই বিনাভোটে জয়ী হন।
প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে মাঠ থেকে সরে যান ১৯৮ প্রার্থী। ইসির অতিরিক্ত সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা) ফরহাদ আহমেদ খান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, চেয়ারম্যান পদে সাত, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
চার উপজেলার তিনটি পদ ছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; দিনাজপুরের হাকিমপুরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, গাইবান্ধার সাঘাটায় চেয়ারম্যান, পাবনার বেড়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, নাটোরের সিংড়ায় চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান, বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে চেয়ারম্যান, রাঙামাটির কাউখালীতে ভাইস চেয়ারম্যান, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রথম ধাপে তিন পদে ১ হাজার ৮৯১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। বাছাই ও প্রত্যাহারের পর এখন ভোটের মাঠে রয়েছেন ১ হাজার ৬৯৩ প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০১, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৪৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪৭ প্রার্থী চূড়ান্ত লড়াইয়ে নেমেছেন।
২০১৯ সালে চার ধাপের উপজেলা ভোটে প্রায় ৫০০ উপজেলার মধ্যে ৪৬৫ উপজেলায় ভোট হয়। সেই সময় তিনটি পদে সব মিলিয়ে ২২৩ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১২, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯ জন নির্বাচিত হন বিনাভোটে।
এবার দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১২৯টি উপজেলায় ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৫ জুন।