মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
গ্রামাঞ্চলে দ্রম্নত নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহের নির্দেশ
প্রকাশ | ০৭ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
যত দ্রম্নত পারা যায় গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যতের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী লোড শেডিংয়ের বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেবিনেটের কথা তো কেবিনেটে চলে গেছে। এটা তো বাইরে বলা যাবে না।
লোডশেডিং নিয়ে সারা দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদু্যৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশে কিছু কিছু অঞ্চলে আমাদের কিছুটা লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে অনেক জায়গাতে। এটা আমরা গত এক মাস যাবৎ পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের বেশ কিছু পাওয়ার পস্ন্যান্ট, বিশেষ করে ওয়েল বেইজড পাওয়ার পস্ন্যান্টগুলো বন্ধ আছে। সেগুলো আমরা ধীরে ধীরে চালু করতেছি। তেলের স্বল্পতা ছিল, আর্থিক স্বল্পতা ছিল- এ বিষয়গুলোকে নজরদারি করে আমরা এখন একটা ভালো পরিস্থিতিতে আছি। এ বিষয়গুলো সংসদে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়গুলো সার্বিকভাবে সবাই, যারা সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীও এটা ওয়াকিবহাল রয়েছেন। তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ ব্যবস্থা করতে। আমরা সেটাই ব্যবস্থা করে এখন একটা ভালো অবস্থায় আছি।
'সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে': এদিকে সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত
মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুন্দরবনে লাগা আগুন নেভানোর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। শতভাগ নিভে গেছে, এ রকম বলেননি। কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কারণ বনের আগুন স্বাভাবিক আগুন নয়। আপাতদৃষ্টে মনে হয় নিভে গেছে। কিন্তু কোনো কিছু দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। পরে হয়তো আবার জ্বলে উঠতে পারে। তাই বনের আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে নিভে যাওয়ার ঘোষণা করা যায় না। এ জন্য এখন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কয়েক দিন পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে।
সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের লতিফের ছিলা ও ড্রেনের ছিলার মাঝামাঝি এলাকায় আগুন লাগার বিষয়টি গত শনিবার নজরে আসে সংশ্লিষ্ট সবার। এর পর থেকেই আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে বন বিভাগ, কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রম্নপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), টাইগার টিমসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও বনজীবীরা। তবে ঘটনাস্থল থেকে পানির উৎস দূরে হওয়ায় এবং দুর্গম পথের কারণে প্রথম দিনে সেখানে পানি ছিটানো সম্ভব হয়নি। গতকাল রোববার ভোর থেকে সমন্বিতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যা নামায় এবং নদীতে ভাটার কারণে গতকাল বিকালে পানি দেওয়া বন্ধ করে বন থেকে বেরিয়ে আসেন সবাই। অন্ধকার ও বনের মধ্যে ঝুঁকি বিবেচনায় রাতে কাজ বন্ধ থাকার পর সোমবার ভোর থেকেই আবার সবাই মিলে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছেন।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী বলেন, ভেতরে বড় ধরনের কোনো আগুন এখন দেখা যাচ্ছে না। যতক্ষণ ধোঁয়া থাকবে, ততক্ষণ কাজ চলবে।
প্রত্নসম্পদ আইনের খসড়া সংশোধনের পরামর্শ
এদিকে 'প্রত্নসম্পদ আইন, ২০২৪'- এর খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করেছিল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে এ দিন এটি অনুমোদন করা হয়নি। খসড়ার কয়েকটি জায়গায় সংশোধন করতে বলেছে মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, 'প্রত্নসম্পদ আইন, ২০২৪'- এর খসড়া উপস্থাপনের উদ্যোক্তা ছিল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বিষয়টি উপস্থাপিত হওয়ার পর বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি কয়েক জায়গায় পরিমার্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর পুনরায় উপস্থাপনের জন্য অনুশাসন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের খসড়ায় মূলত বাংলাদেশের যে প্রত্নসম্পদ আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা এবং সেগুলো হস্তান্তর, নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়গুলো ছিল। এসব বিষয় যদি কেউ অমান্য করে তখন তাদের জন্য শাস্তির বিধান ছিল। এই খসড়া পরবর্তী মিটিংয়ে আবার আনতে বলা হয়েছে বলেও জানান মো. মাহবুব হোসেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েকটি জায়গায় কারেকশনের জন্য বলা হয়েছে। কারেকশন করে আবার উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এনএপিডি নিয়ে নতুন আইন করতে মানা মন্ত্রিসভার
এদিকে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির (এনএপিডি) বর্তমান আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন করার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া উপস্থাপন করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রিসভা এটি প্রত্যাহার করে দিয়েছে।
বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, জাতীয় পরিকল্পনা উন্নয়ন একাডেমি নীলক্ষেতে আছে। এটির জন্য বিদ্যমান আইনকে পরিবর্তন করে নতুন একটি আইন করার জন্য উপস্থাপন করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।