যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম রেল। সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্য রেলের গুরুত্ব অপরিসীম। রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার, রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, নতুন ও বন্ধ রেলস্টেশন চালু, নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু, কম্পিউটার বেইজড সিগন্যালিং ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং ট্রেনের নতুন কোচ সংগ্রহের মাধ্যমে গোটা দেশকে রেলসেবার আওতায় আনতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এরপরও লাভের মুখ দেখতে পারছে না রেলওয়ে। প্রায়ই ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও লাইনচু্যতি। এতে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যাও। তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে ১৫২৮টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫১২ জন। ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় রেলক্রসিংয়েও দুর্ঘটনা বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির রিপোর্টেও রেলওয়ের সার্বিক অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে। অব্যবস্থাপনা, অবহেলা, দুর্নীতি, পুরানো অ্যানালগ পদ্ধতি ও রেল ঘিরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী চক্রের কবলে পড়ে রাষ্ট্রীয় এ সেবাখাতটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেত পারছে না। অন্যদিকে পর্যাপ্ত জনবলের অভাবকে দুষছে রেল অধিদপ্তর। আর বিশ্লেষকদের দাবি, ভুল সিগনালসহ পাঁচ কারণে রেলের সর্বনাশ ঘটছে।
তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ শনিবার ভুল সিগনালের কারণে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশনে এক লাইনে বিপরীতমুখী দুটি ট্রেন চলে আসে। তবে চালকদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তায় মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায় ট্রেন দুটি। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ৪ নম্বর লাইনে প্রবেশ করানোর নির্দেশ থাকলেও দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্টসম্যান ভুল করে ৫ নম্বর লাইনে প্রবেশ করানোর কারণে ঘটনাটি ঘটে।
এর আগে শুক্রবার সকালে গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনের দক্ষিণ আউটার সিগন্যালের ছোট দেওড়ার কাজীবাড়ি এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি ইঞ্জিনসহ ১০টি বগি লাইনচু্যত হয়। ভুল সিগনালের কারণে ঘটা এ দুর্ঘটনার প্রভাব পড়ে সারাদেশে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর ক্ষতিগ্রস্ত বগি ও তেলের ওয়াগন উদ্ধার হলে রেল চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩ মে পর্যন্ত পূর্বাঞ্চল রেলে ছোট-বড় মিলিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫টি, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আর চলতি বছর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জানুয়ারিতে তিন, ফেব্রম্নয়ারিতে তিন, মার্চে দুই, এপ্রিলে ছয় এবং মে মাসে (৩ মে পর্যন্ত) একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র আরও জানায়, নামমাত্র স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল পয়েন্ট থাকলেও
'ম্যানুয়ালি' সিগন্যাল ব্যবস্থা একমাত্র ভরসা। তবে এতে বিন্দুমাত্র আস্থা রাখতে পারেন না মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রেলের ছোট-বড় দুর্ঘটনার ৯০ শতাংশই ঘটছে সিগন্যাল ব্যবস্থার ত্রম্নটির কারণে। পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল রেলের অধিকাংশ সেকশনে পুরানো এই সিগন্যাল ব্যবস্থা এখনো রয়েছে।
জানা যায়, একটি চলন্ত ট্রেন সামনের স্টেশন অতিক্রম করবে কি না, অথবা ট্রেনটিকে ক্রসিংয়ের জন্য কোথায় থামতে হবে, অথবা ট্রেনটির অনির্ধারিত স্টপেজ কোন স্টেশনে দেয়া হয়েছে- এসব বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা একটি কাগজে লিখেন স্টেশন মাস্টার। এরপর ওই কাগজটি ভাঁজ করে একটি লম্বা তার দিয়ে অর্ধ গোলাকৃতির কুন্ডলি তৈরি করেন। সেই কুন্ডলিটি স্টেশনের রেললাইনের পাশে উঁচু করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন স্টেশন মাস্টার। চলন্ত ট্রেনটি স্টেশন অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিনে থাকা লোকমাস্টার কুন্ডলির মাঝখানে ফাঁকা স্থানে হাত ঢুকিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন কাগজটি। সেটি পড়ে সামনের স্টেশন সম্পর্কে ধারণা নেন লোকমাস্টার। এই পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত নাম পিএলসি। যাকে বলা হয়, পেপার লাইন ক্লিয়ার। এভাবেই ব্রিটিশ আমলের সিগন্যাল সিস্টেম দিয়ে বাংলাদেশে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি রেলপথে প্রতিদিন সাড়ে ৩শ' যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে।
রেলের এ পরিস্থিতি দেখে কয়েক বছর আগে রেল মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব গণমাধ্যমের কাছে মন্তব্য করেছিলেন, 'রেলের ব্যবহৃত অ্যানালগ সিস্টেমের সিগন্যালের ৯০ শতাংশই অকার্যকর। বেশিরভাগ সময় স্টেশন মাস্টাররা বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এই সিস্টেমে তথ্য আদান প্রদান করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশে রেল চলে অ্যানালগ সিস্টেমে।' অভিযোগ আছে রেলের ওই অতিরিক্ত সচিব রেলের সিগন্যাল সিস্টেমকে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নিলে একটি চক্র তার ওপর উঠে পড়ে লাগে। এরপরই তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডবিস্নউইএফ) তথ্য বলছে, এশিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ রেল অবকাঠামোর দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।
আর যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ৪০২টি রেল দুর্ঘটনায় ৩৯৬ জন, ২০২২ সালে ৬০৬টি রেল দুর্ঘটনায় ৫৫০ জন এবং ২০২৩ সালে ৫০২টি রেল দুর্ঘটনায় ৫২১ জন মারা যান। তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এসে রেল ক্রসিংয়ে মৃতু্যর ঘটনা বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০১০ সাল থেকে দেশে রেল দুর্ঘটনা বেড়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ১০৯৩টি। আর ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে ২০১৯ সালের জুর মাস পর্যন্ত ৮৬৮টি রেল দুর্ঘটনা ঘটে।
২০১০ সালে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর 'মহানগর গোধূলি' ও ঢাকাগামী মেইল 'চট্টলা' ট্রেনের সংঘর্ষে দুটি ট্রেনের ইঞ্জিন দুমড়ে-মুচড়ে যায়। চট্টলা ট্রেনের একটি বগি মহানগর ট্রেনের ইঞ্জিনের ওপর উঠে যায়। সেই দুর্ঘটনায় চালকসহ মোট ১২ জন নিহত হন। এরপর ২০১৬ সালে নরসিংদীর আরশীনগর এলাকায় ভুল সিগন্যালের কারণে লাইনচু্যত হয় তিতাস কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন। এতে দুজন নিহত ও ১০ আহত হন।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচু্যত হয়ে ৫ জন নিহত হন। ২০১৯ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপজেলার বরমচাল রেল ক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ৪টি বগি লাইনচু্যত হয়ে খালে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় ৬ জন নিহত হন। সেদিন রাত ১২টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে ঢাকাগামী উপবনের বগি ছিটকে পড়ে।
২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার তুর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের সংঘর্ষে ২২ জন নিহত এবং ১২০ জন আহত হন। ঘন কুয়াশার মধ্যে অ্যানালগ সিস্টেমের সিগন্যাল অর্থাৎ রেললাইনের আউটার সিগন্যালে স্থাপন করা পাখা-বাতি দেখতে না পারার কারণে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালে কুমিলস্নার লাঙ্গলকোটে ভুল সিগন্যালের কারণে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ৭০ জন আহত হন। ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর ভৈরব রেল জংশনের আউটার সিগন্যালে একটি মালবাহী ট্রেন ভুল সিগন্যাল পেয়ে জংশনে ঢুকতে থাকে। একই সময় ঢাকাগামী এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস জংশন থেকে বের হচ্ছিল। এই দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২২ জন নিহত ও আহত হন শতাধিক।
এছাড়া চলতি বছরের ১৮ মার্চ কুমিলস্নার লাঙ্গলকোটের হাসানপুর রেলস্টশনের কাছে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৭টি বড়ি লাইনচু্যত হয়। এরপর ১৮ এপ্রিল পটিয়া রেলস্টেশনে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ননস্টপেজ সার্ভিসের দুটি ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পায়। এসব দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত রিপোর্ট বলছে, সিগন্যাল ব্যবস্থা ত্রম্নটির কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ত্রম্নটি, ঝুঁকিপূর্ণ রেল ক্রসিং, ইঞ্জিনের সক্ষমতার অতিরিক্ত বগি সংযোজন, রেললাইনে পাথরের স্বল্পতা, ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতু, আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, জনবল সংকট এবং নড়বড়ে ট্র্যাক তথা রেললাইনে নিম্নমানের স্স্নিপার ও ফিশপেস্নটসহ বিভিন্ন নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারে দুর্ঘটনা বাড়ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, 'রেলের ৭০ শতাংশ আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। একটা রেল গড়ে ৫০ বছরের মতো টেকে। এখন বেশিরভাগ লাইনের অবস্থা ভালো নেই। বিপরীতে যে পরিমাণ রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার, সেটা তো হচ্ছেই না। এ জন্যই ট্রেনের লাইনচু্যত হওয়ার ঘটনা বেশি।'
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৩১০ স্টেশনসহ মিটারগেজ রেললাইন আছে ১৮৪৬ কিলোমিটার, ১৫৬ স্টেশনসহ ব্রডগেজ রেললাইন ৬৭৭ কিলোমিটার এবং ৪৩৩ স্টেশনসহ ডুয়েলগেজ রেললাইন ৪৪৬ কিলোমিটার। এছাড়া নতুন নতুন রেললাইন নির্মাণের আরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
চলতি বছর দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে রেলপথমন্ত্রী জিলস্নুল হাকিমের উপস্থাপিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রেলওয়ের এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা আয় করতে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বেশি ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৫২৪ কোটি টাকা।
তবে রেল অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সরদার শাহাদত আলী একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জনবলের অভাবে স্টেশন, রেললাইন ও ট্রেন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। একটি স্টেশন পরিচালনা করতে যেখানে গড়ে ১০ থেকে ১৫ জন জনবলের প্রয়োজন, সেখানে অর্ধেক জনবল দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেছেন, সম্প্রতি পরীক্ষা দিয়ে প্রায় সাড়ে ৭শ' সহকারী স্টেশন মাস্টার নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়। এদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মস্থলে পাঠানোর পর দেখা গেছে মাত্র আড়াইশ' যোগ দিয়েছেন। মেধাবীরা অন্য চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ায় রেলে যোগদান করেননি। এরকম রেলের সব পদেই হচ্ছে। আমাদের ট্রেনের সংখ্যা ও লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়ছে- কিন্তু সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকায়ন হচ্ছে না। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে সারাদেশে ১৬০টি নতুন ট্রেন চালু করেছে। সরকার রেলে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নয়ন উপেক্ষিত রয়েছে। আবদুলস্নাপুর-পার্বতীপুর, দর্শনা-খুলনা, পোড়াদহ-রাজবাড়ী, শান্তাহার-লালমনিরহাট, পার্বতীপুর-কাউনিয়া, দেওয়ানগঞ্জ-জয়দেবপুর, ময়মনসিংহ-গৌরীপুর-ভৈরব, আখাউড়া-সিলেটসহ অধিকাংশ সেকশনে ম্যানুয়ালি পাখা-বাতি সিগন্যাল ব্যবস্থায় ট্রেন চালানো হচ্ছে। এসব সেকশনের ৭৬টি রেলস্টেশনে কোনো ধরনের সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। বাঁশের মই ব্যবহার করে নির্ধারিত পিলারে লাল-সবুজ বাতি লাগিয়ে ট্রেনের সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। তবে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে সিবিআই ও সিটিসি সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপনের একটি প্রকল্পের কাজ চলমান। এছাড়া আখাউড়া-ভৈরব সেকশনসহ পদ্মা সেতু লিংক লাইন স্থাপন প্রকল্পে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপনের কাজ চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনো দেশের যে কোনো গণপরিবহণের চেয়ে রেল নিরাপদ। বিভিন্ন কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনা রোধে আধুনিকায়নের পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় সিগনাল সিস্টেমের আওতায় আনতে হবে রেলকে। লোকবল বাড়িয়ে রেলক্রসিংয়ে হতাহতের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার উদ্যোগও নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় এ সেবা খাতটিকে সিন্ডিকেটমুক্ত করে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে না পারলে রেলখাত উন্নয়নে সরকারের নেওয়া নানামুখী উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়বে।