সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব
দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে ঋণের শর্তে আটকে ফেলেছে
প্রকাশ | ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এর মতো দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে বিদু্যৎ ও জ্বালানি আমদানি বাজারে রূপান্তর করার লক্ষ্যে সরকারকে ঋণ ও ঋণের শর্তে আটকে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছে কনজু্যমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে কনজু্যমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত 'অসাধু বিদু্যৎ ও জ্বালানি ব্যবসা সুরক্ষায় মূল্যবৃদ্ধি নয়, জ্বালানি সুবিচার চাই' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, 'বিদু্যৎ ও জ্বালানি সরবরাহে লুণ্ঠনমূলক ব্যয় ও মুনাফা প্রতিরোধ করা গেলে এবং নূ্যনতম ব্যয় ও জ্বালানি সরবরাহ করার নীতি ও কৌশল গ্রহণ করা হলে বিদু্যৎ খাতে বিদ্যমান ঘাটতি প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা সমন্বয় সম্ভব হতো। কিন্তু এমন কোনো পরামর্শ তো আইএমএফের কাছ থেকে আসে না। অবশ্য কখনো আসবেও না। কারণ, আইএমএফ ও এর মতো দাতা সংস্থারা বাংলাদেশকে বিদু্যৎ ও জ্বালানি আমদানি বাজারে রূপান্তর করার লক্ষ্যে সরকারকে ঋণ ও ঋণের শর্তে আটকে ফেলেছে।'
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, 'গত ২৫ এপ্রিল ঋণ কর্মসূচির আওতায় পর্যবেক্ষণে আসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। অর্থ বিভাগের বাজেট অনু বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে তারা বিদু্যৎ, গ্যাস ও সারে ভর্তুকি তুলে দিয়ে দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সরবরাহ ব্যয় সমন্বয়ের সুপারিশ করেছে। ভর্তুকির অর্থ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রমে খরচ করার পরামর্শ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগ বলেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টি মাথায় রেখে আপাতত কৃষিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দেবে সরকার। বোঝা যায়, জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের মাথায় নেই। তারা কি বোঝে না জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না? আমরা মনে করি, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি না করে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা সম্ভব।'
তিনি আরও বলেন, 'গত বছরের হিসাবে বিদু্যৎ আমদানি ব্যয় ছিল গড়প্রতি ৭ টাকা ৮৩ পয়সা। অথচ উৎপাদন ব্যয় হার কমবেশি ১২ টাকা আর বিক্রি করে পিডিবি পায় ৭ টাকা ৪ পয়সা। অচিরেই বিদু্যতের মূল্য বৃদ্ধি ও আমদানি করে ভর্তুকি কমানো হবে, লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধিতে লাগাম টানা হবে না, জনগণ লুণ্ঠিত হবে জ্বালানি সুবিচার পাবে না।'
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, 'বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ প্রতিষ্ঠার শত বছর পার হয়ে গেছে। এই শত বছরে তারা সারা পৃথিবীর বহু দেশকে ঋণ দিয়ে ডুবিয়ে দিয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশ বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের শর্ত মেনে ঋণ নিয়ে স্বনির্ভর হয়েছে, সংকট থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে, নিষ্কৃতি পেয়েছে- এমন কোনো উদাহরণ এক শতাব্দীতেও পাওয়া যায়নি।'
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, 'আমরা ঋণ নিয়েছি কেন? আমাদের অর্থনীতি প্রায় খালির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সেই হিসাবে আইএমএফ আমাদের ঋণ সহায়তা দিয়েছে। এখন আইএমএফের কাছে আমাদের দাবি, আপনারা ন্যায়সঙ্গত পরামর্শ দেবেন।'
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন।