রূপপুরে নতুন বিদু্যৎ লাইন চালু, তিন জেলায় সতর্কতা
প্রকাশ | ০১ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র থেকে বগুড়া (পশ্চিম) ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৮৯ দশমিক ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ '৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইন' নির্মাণকাজ শেষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এই লাইন পরীক্ষামূলক চালু হয়েছে।
এই লাইন চালুর আগেই পাবনা, নাটোর ও বগুড়া জেলার কিছু এলাকার জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)।
সোমবার রাতে পিজিসিবির আইডিআরএনপিপির প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. মাসুদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে নবনির্মিত লাইনটি সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে। এ অবস্থায় নবনির্মিত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের টাওয়ারে আরোহণ, গবাদিপশু বাঁধা, টাওয়ারে রশি বেঁধে কাপড় শুকানো, লাইনের নিচে ও পাশে বাঁশঝাড় ও বড় গাছ রোপণসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সবাইকে ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন থেকে নিরাপদ (উভয় পাশে ২৩ মিটার) দূরত্বে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। উচ্চ ভোল্টেজের এই সঞ্চালন লাইন বা টাওয়ারের সংস্পর্শে এসে কেউ বিদু্যতায়িত হলে পিজিসিবি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
পিজিসিবির মুখপাত্র এবিএম বদরুদ্দোজা খান জানান, উচ্চ ভোল্টেজের কোনো নতুন বিদু্যৎ লাইন চালুর আগে এ ধরনের সতর্কতা সব সময়
দেওয়া হয়।
পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী, সলিমপুর ও মুলাডুলি ইউনিয়ন; নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর, নগর, মাঝগাঁও ও বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন; গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন এবং সিংড়া উপজেলার চামারী, কলম, চৌগ্রাম এবং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে নতুন এই সঞ্চালন লাইন যাচ্ছে।
এ ছাড়া বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নন্দীগ্রাম ও ভাটগ্রাম ইউনিয়ন এবং কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়ন এই নির্দেশনার আওতায় থাকবে।
অগ্রগতি কতটা
পিজিসিবির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্রের বিদু্যৎ সঞ্চালন করার জন্য যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিটের একটি সাত কিলোমিটার দীর্ঘ রিভার ক্রসিং লাইন, পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে ৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিটের দুই কিলোমিটার দীর্ঘ রিভার ক্রসিং লাইন এবং যমুন নদীর ওপর দিয়ে ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিটের সাত কিলোমিটার দীর্ঘ একটি লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব লাইন নির্মাণ কাজের ২৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে পিজিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'রিভার ক্রসিং লাইন নির্মাণের বড় বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলো আমরা অতিক্রম করেছি। এ ছাড়া নদী পাড়ি দেওয়ার পর যে সঞ্চালন লাইন, সেটাও নির্মাণ হয়ে আছে। এখন অল্প সময়ের মধ্যে রিভার ক্রসিং লাইনগুলো নির্মাণ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।'
মুখপাত্র বদরুদ্দোজা খান বলেন, রিভার ক্রসিং লাইনগুলোর বাইরেও স্থালভাগের ওপর তিনটি সঞ্চালন লাইন রয়েছে, যেগুলো এখন শতভাগ প্রস্তুত। এর একটি হচ্ছে ২৩০ কেভি বেকফিড লাইন, যা অনেক আগেই তৈরি হয়েছে। বিদু্যৎকেন্দ্র চালু করার সময় যে বিদু্যতের প্রয়োজন হবে, সে জন্য এই লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।
আবার কেন্দ্র চালু হলে এই লাইন দিয়ে বিদু্যৎ সঞ্চালন করা যাবে। এ ছাড়া রূপপুর থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি পর্যন্ত একটি ২৩০ কেভি লাইন নির্মাণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ রূপপুর থেকে বগুড়ার লাইনটি নির্মাণ শেষ হলো।