যশোরের অভয়নগরের আন্দাগ্রামের হিন্দুপাড়ায় গণডাকাতি মামলায় একজনের ৪৬ বছর ও অপর দু'জনের মোট ৩৯ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সাকো গ্রামের সোহরাব হোসেন, যশোরের মণিরামপুরের কাশিপুর গ্রামের বাচ্চু ও খুলনা তেরখাদার ইন্দুহাটা গ্রামের শহিদুল ইসলাম শামীম।
রোববার
স্পেশাল জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৩ জুলাই রাতে অভয়নগরের আন্দাগ্রামের হিন্দুপাড়ায় একদল ডাকাত হানা দেয়। ডাকাতরা সুধির কুমার মলিস্নক ও তার ছেলে সুরঞ্জিত মলিস্নক, ছোট ভাই দিপ্ত কুমার, মেঝ ভাই মৃনাল কান্তি, সমর কান্তিসহ প্রতিবেশী কয়েক বাড়িতে যেয়ে বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার গহনা, মোবাইল ফোনসহ পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন সুধির কুমার মলিস্নক বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে ডাকাতি মামলা করেন।
এ মামলার তদন্তকালে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বাচ্চু মিয়াকে আটক ও তার দেয়া ১৬৪ ধারা জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী আরও কয়েকজনকে আটক ও ডাকাতি হওয়ায় কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত ও বিভিন্নি সময় আটক, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ১১ জন অব্যাহতি চেয়ে ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম।
এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে ডাতাকির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামি সোহরার হোসেনকে ৩৯৫ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড, ৩৯৭ ও ৪১২ ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। অর্থাৎ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে ৩২ বছর ও দুইটি ধারায় ১৪ বছর সর্বমোট ৪৬ বছর কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া বাচ্চু ও শাহিদুল ইসলাম শামীমকে ৩৯৫ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদন্ড ও ৩৯৭ ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস করে কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। এ দু'জনের সর্বমোট ৩৯ বছর কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ মামলার অপর দুই আসামি ইমামুল কবির ওরফে জীবন ওরফে কদর ওরফে শবে কাদীর ও বিপুল ওরফে বিপস্নব ওরফে কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ে সাজা একই সাথে চলবে বলে উলেস্নখ করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছে।