শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

গরমে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীরা

তীব্র দাবদাহ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না নিয়ে অনলাইনে বা বিকল্প অন্য কোনোভাবে ক্লাস নেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন
সাখাওয়াত হোসেন
  ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
হিট অ্যালার্টের মধ্যে রোববার থেকে খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্লাস শেষে বেরিয়ে আসছেন রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা -ফোকাস বাংলা

পঞ্চম দফায় তিন দিনের হিট অ্যালার্টের মধ্যেই রোববার থেকে সারাদেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। গনগনে সূর্যতাপে পিচ গলা সড়ক পাড়ি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে কিছুটা স্বস্তি খোঁজার চেষ্টা করলেও তাতে বরং উল্টো ফল মিলছে। বিশেষ করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে গড়ে ওঠা প্রাইভেট স্কুল-কলেজগুলোর বদ্ধ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দম বন্ধ হওয়ার যোগাড় হচ্ছে। ফ্যানের বাতাসে শরীরের ঘাম না শুকিয়ে বরং আগুনের হল্কা ছোঁয়াচ্ছে। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক স্কুল ক্যাম্পাসেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হিটস্ট্রোকে যশোর ও চট্টগ্রামের দুই শিক্ষকের মৃতু্যও হয়েছে।

উদ্বিগ্ন এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবাইকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তীব্র দাবদাহ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না নিয়ে অনলাইনে বা বিকল্প অন্য কোনোভাবে ক্লাস নেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। অধিকাংশ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীও এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। আগামী আরও এক সপ্তাহ কিংবা চলমান তাপপ্রবাহ না কমা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পক্ষেও অনেকে মত দিয়েছেন।

তবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জনস্বাস্থ্যবিদ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের এসব অনুরোধ-পরামর্শে কোনো তোয়াক্কা করেননি। বরং সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে তিনি সাফ জানান দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কোথাও বেশি গরম আছে মানেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে- এটার কোনো মানে নেই। কোনো জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।'

রোববার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, রিকশা-ভ্যান, বাস-মিনিবাস কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোতে আসা সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীই তীব্র গরমে ঘেমে নেয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ইউনিফর্ম ঘামে শরীরে লেপ্টে রয়েছে; মাথাও ঘামে ভেজা। সঙ্গে থাকা অভিভাবকদেরও একই অবস্থা।

অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুল-কলেজে পৌঁছে দেওয়ার সময় তাদের সঙ্গে বেশি করে পানি, জুস ও স্যালাইন

দিয়ে দিচ্ছেন। শরীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা কোনো ধরনের অস্বস্তি বোধ করলে কী করতে হবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বোঝাচ্ছেন। তাপপ্রবাহে ক্লাসের বাইরে বের না হতে, মাঠে খেলাধুলা না করতে এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুলেস্নাড় না করার জন্যও সতর্ক করেছেন তারা।

এদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানে দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া হয় দুপুরে ওইসব স্কুল-কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে আরও ভয়াবহ অবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা ডে-শিফটের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর চরম কাহিল অবস্থা। পিঠের ঘামে ঘাড়ে ঝোলানো ব্যাগও ভিজে চুপচুপ করছে। তাদের অনেকে তাড়াহুড়ো করে ক্লাসে ঢুকে ফ্যানের নিচে আসন বেছে নেওয়ার পালস্নায় নেমেছে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া জাহান বিথি জানায়, তাদের ক্লাসরুমে ফ্যানের সংখ্যা খুবই কম। এগুলোও বেশিরভাগ পুরানো। ফুল স্পিডেও তা বেশি জোরে ঘোরে না। তাই ফ্যানের নিচে না বসলে গায়ে তেমন বাতাস লাগে না। এছাড়া বিদু্যৎ চলে গেলে জেনারেটর ছেড়ে শিক্ষকদের বসার রুমের ফ্যান চালু রাখা হলেও শ্রেণিকক্ষের ফ্যান চালানো হয় না বলেও অভিযোগ করেন এই শিক্ষার্থী।

তবে একই স্কুলের ছাত্রী মেহের আফরোজের দাবি, এ অভিযোগ সত্য নয়। শীতের সময় জেনারেটর ছেড়ে ফ্যান চালু না রাখা হলেও গরমে এমনটি করা হয় না। তবে শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ফ্যান নেই এ কথা সত্য। যদিও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে ছুটির পর সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংলিশ ভার্সনের অষ্টম শ্রেণির ডে শিফটের শিক্ষার্থী তাহমিন জাওয়াদ জানান, তাদের ক্লাসে অধিকাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। তারা ক্লাসরুমে ঢোকার আগে থেকেই এসি চালু করে দেওয়া হয়। তবে টিফিন পিরিয়ডের পর তীব্র গরমে ক্লাসে বসে থাকা দায় হয়ে পড়ে। তীব্র গরমে এ সময় শিক্ষার্থীরা হাঁসফাঁস করতে থাকে।

ওই শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, তাদের শ্রেণিকক্ষে এসি থাকলেও তা মানসম্মত নয়। প্রায়ই তা নষ্ট থাকে। চালু অবস্থায় এটি বেশিক্ষণ রুম ঠান্ডা রাখতে পারে না। এর ওপর তীব্র গরমে এসির কার্যক্ষমতা যেন পুরোপুরিই নষ্ট হয়ে গেছে।

এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক একই অভিযোগ করেছেন। তাদের ভাষ্য, বাংলা মিডিয়ামের শ্রেণিকক্ষগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। শুধুমাত্র ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংলিশ ভার্সনের শ্রেণিকক্ষে এসি আছে। কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগ জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। বাংলা মিডিয়ামের শ্রেণিকক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্যান নেই বলে অভিযোগ করেন তারা।

তবে শুধু ভিকারুননিসা কিংবা সাউথ পয়েন্টই নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই একই অবস্থা। চলমান তাপপ্রবাহে শ্রেণিকক্ষ শীতল রাখার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতেগোনা সামান্য কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কোনো স্কুল-কলেজের নেই। বেশিরভাগ স্কুলে প্রাকৃতিক বাতাস প্রবাহিত হওয়ার মতো অবকাঠামো নেই বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।

দনিয়া এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাউনিতে সন্তানের ক্লাস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে ছিলেন অভিভাবক জাহানারা খাতুন। তার ভাষ্য, এই গরমের মধ্যে স্কুল খোলা ঠিক হয়নি। কারণ, পড়াশোনার চেয়ে জীবন আগে। হয়তো সপ্তাহখানেক পরে বা ১০ দিন পরে তাপমাত্রা কমে যাবে। এ সময়টুকু অপেক্ষা করলে লেখাপড়ার তেমন ক্ষতি হবে না। আগামী দিন থেকে তিনি সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন না বলে জানান এই অভিভাবক।

এদিকে রোববার তীব্র গরমে ঢাকাসহ সারাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুমের ক্লাস শুরু হয় সকাল ৭টায়। ছুটি হয় ৯টা ৪০ মিনিটে। ছুটি শেষে এই কোমলমতি শিক্ষার্থী বমি করে এবং কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় তাকে স্কুলে নিয়ে আসা মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

শুধু উম্মে কুলসুম নয়, এ স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুলে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তারা ক্লাস না করেই বাসায় ফিরে গেছে। যাতায়াতের সময়ই তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে বলে জানান অভিভাবকরা। ক্লাস করতেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অনামিকা রহমানের বাবা মো. মহসিন বলেন, এই গরমে ঘরে বড়রা টিকতে পারে না। সেখানে বাচ্চারা কীভাবে ক্লাস করে ভাবতে কষ্ট লাগে। দাবদাহ চলাকালে স্কুল-কলেজ খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

একই স্কুলের শিক্ষার্থী খাদিজা সুলতানার মা জুলেখা খাতুন বলেন, এখন যে কারিকুলাম তা অভিভাবকরা বুঝতে পারে না। তাই স্কুল খোলা থাকলে সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে উপায় নেই। কারণ তা না হলে পরে ক্লাসে গিয়ে পড়া ধরতে পারে না। তবে এরপরও তীব্র গরমে আগামীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তিনি।

এদিকে চলমান দাবদাহের মধ্যে স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হলে দায় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। বিবৃতিতে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ রেখে অনলাইনে শ্রেণির কার্যক্রম তথা পাঠদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছিল অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। কিন্তু সারাদেশের তীব্র তাপপ্রবাহের তেমন কোনো উন্নতি না হওয়া সত্বেও সরকার রোববার থেকে সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার পরিপত্র জারি করেছে। ফলে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা তীব্র তাপপ্রবাহ চলমান থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য দেশের সব মানুষ। তীব্র তাপপ্রবাহে সরকারি সিদ্ধান্তে দেশের কোথাও যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো রকম জীবন বিপন্ন ঘটে বা কোনো রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার সব ধরনের দায়ভার সরকার ও সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনেই বেশ কয়েকটি দুঃসংবাদ পাওয়া গেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গরমে শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি হিটস্ট্রোকে যশোর ও চট্টগ্রামের দুই শিক্ষকের মৃতু্যও হয়েছে।

যশোরে প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে আহসান হাবিব নামের এক স্কুল শিক্ষকের মৃতু্য হয়। আহসান হাবিব যশোর সদর উপজেলার আমদাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। যদিও যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিব মোহাম্মদ আলী আহসান জানান, হিটস্ট্রোকে যে ধরনের লক্ষণ থাকে তা ছিল না। এটা সাধারণ স্ট্রোকজনিত মৃতু্য।

তবে আমদাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এজেডএম মাসুদ পারভেজ জানান, সকালে মাঠে ধান কাটতে যান শিক্ষক আহসান হাবিব। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল ৯টার দিকে তিনি মোটর সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে ফেরেন। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী (৫৫) মারা গেছেন। তিনি বোয়ালখালী উপজেলার খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া আলিম মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। রোববার সকালে মাদ্রাসা খোলায় তিনি নগরীর চান্দগাঁও মোহরা এলাকার বাসা থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে কালুরঘাটের পশ্চিম পাড় থেকে পায়ে হেঁটে ফেরিতে উঠেন ওই শিক্ষক। এরপর হঠাৎ ফেরিতে ঢলে পড়েন তিনি। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃতু্যর বিষয়টি নিশ্চিত করে আঞ্জুমানে আজিজিয়া মাবুদিয়া সুন্নিয়া সংগঠনের সদস্য সচিব কাজী মো. এমরান কাদেরী।

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাদিকা রহমান নামের ইংরেজি ভার্সনের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীই গরমের মধ্যে ক্লাস করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের অভিভাবকরা এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই গরমের মধ্যে স্কুলে পাঠদান বন্ধ করে অনলাইনে ক্লাস নিলে ভালো হয়।

এদিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমানউল্যাপুরের জয়নারায়ণপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

প্রচন্ড গরমে নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। রোববার সকাল সোয়া ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাইস্কুলে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পলস্নী চিকিৎসক ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা ফাতেমা ইসরাত বলেন, সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম শুরুর পর বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসুস্থতা লক্ষ করা যায়। একপর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ১১ জন, অষ্টম শ্রেণির ২ জন, নবম শ্রেণির ২ জন ও দশম শ্রেণির ২ জন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

শিক্ষিকা ফাতেমা ইসরাত জানান, শিক্ষার্থীদের কারও পেটব্যথা, কারও মাথাব্যথা, কারও চোখব্যথা লক্ষ করা যায়। এ সময় একজন শিক্ষার্থী বমি করে। শিক্ষার্থীদের এমন অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রেণিশিক্ষক তাকে বিষয়টি জানান। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা হাইস্কুলের ঘরটি টিনের হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে আসার পর শিক্ষার্থীরা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকে। তারা এরই মধ্যে গরমের কারণে সৃষ্ট সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে