ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী
সংলাপে বিরোধ নিষ্পত্তি করুন, যুদ্ধকে 'না' বলুন
প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
বিশ্ববাসীকে সব ধরনের আক্রমণ ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যুদ্ধকে 'না' বলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'টেকসই উন্নয়নের র্পূবশর্ত হলো দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা। যে কারণে সব রকমের হামলা-আক্রমণ কিংবা নৃশংতার বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলা উচিত। ফিলিস্তিনে যুদ্ধ ও গণহত্যা চলছেই। অবশ্যই এর শেষ হওয়া উচিত। যুদ্ধ কোনো সমাধান বয়ে আনে না।'
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রের এসকাপ হলে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে আসিয়ানকে প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে। এর সমাধানও মিয়ানমারে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। এটা আমাদের ভূখন্ডের ভেতরে ও বাইরে গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে দ্রম্নততম সময়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, তা আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।'
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবশ্যই দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অভিন্নশত্রম্নদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের 'শান্তির নতুন এজেন্ডার' পাশে রয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'গাজায় চলমান যুদ্ধ কেবল হতাহতের সংখ্যাই বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে
\হনারী ও শিশুদের হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে আলোচনাই শান্তি নিয়ে আসতে পারে।' এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তার উদ্যোগ ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে 'পার্বত্য শান্তি চুক্তি' করার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে। সর্বোপরি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি আমাদের পারস্পরিক সম্মান দেখাতে হবে।'
ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে থাইল্যান্ডে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে তাকে দেওয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা।
সফরে থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে দেশটির রাজা ভাজিরালংকর্ন এবং রানী সুথিদার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের নির্বাহী সচিব আরমিডা সালসিয়াহ আলিশাবানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
২৬ এপ্রিল গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন। এরপর থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
পরে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনা শুরুর জন্য 'লেটার অব ইনটেন্ট' সই করার পাশাপাশি চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে তাদের উপস্থিতিতে।
একইদিন প্রধানমন্ত্রী শ্রেথার আয়োজনে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন। সফর শেষে আগামী ২৯ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।