ভিসা জটিলতায় এবার হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা
প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
প্রতিবছর হজযাত্রীদের জন্য মুনাজ্জিম ভিসার প্রথা থাকলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ অফিস থেকে হাজিদের বিজনেস ভিসা নেওয়ার কথা বলা হয়। তবে এ ভিসা নিয়েও হাজিদের জন্য বাড়ি ভাড়া করাসহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে কোনো ধরনের অর্থ জমা দিতে পারছে না এজেন্সিগুলো।
ফলে এ বছর হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রম্নত সব প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান হজ এজেন্সির মালিকরা।
সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে অপারেটিং হজ এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে আল-কুতুব হজ ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী হাবিবুলস্নাহ মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।
গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজযাত্রীদের ভিসা ইসু্য বন্ধ হয়ে যাবে। ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সির অবহেলার কারণে
হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সির বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে, গত ১০ ফেব্রম্নয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে সব অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহণ ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।
এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ও সব প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।
এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রম্নত সময়ের মধ্যে সব হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সব এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকিট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি অ্যাকাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের অ্যাকাউন্টে দ্রম্নত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।
তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো অ্যাকাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রম্নত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও ভিসা ইসু্য কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানিয়ে তারা আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সব প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোনো সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেত না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইসু্য এত আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এইচ এম বরকতুলস্নাহ, আল কাবা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদীসহ অনেকেই।