চুয়েটে দুই ছাত্রের মৃতু্য

বাসের সেই চালক গ্রেপ্তার তৃতীয় দিনেও বিক্ষোভ

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্রকে চাপা দেওয়া বাসের সেই চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাসচালকের নাম মো. তাজুল ইসলাম। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পৌরসভার উত্তর ঘাটচেক এলাকায়। এদিকে, দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্যর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো বুধবার কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল নয়টায় রাস্তায় গাছ ফেলে, ব্যারিকেড দিয়ে ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। গত সোমবার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা জিয়ানগর এলাকায় শাহ আমানত পরিবহণের একটি বাসের ধাক্কায় নিহত হন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের তৌফিক হোসাইন। আহত হন একই বর্ষের জাকারিয়া হিমু। এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা। বুধবারও চলা তাদের এই কর্মসূচির মধ্যে অভিযুক্ত বাস চালককে গ্রেপ্তার করা হয়। বাসচালক গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িত বাসচালককে নগরের কোতোয়ালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরে রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় আসেন চুয়েটের উপাচার্য রফিকুল আলম, সহ-উপাচার্য জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রমুখ। এ সময় রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জানান। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের মেনে নেওয়া দাবি রাতের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশের শর্তে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে কাপ্তাই সড়ক ছেড়ে দেন। তবে সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বুধবার সকাল ৮টা থেকে আবারও সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন তাদের কিছু দাবি মেনে নিলেও সব দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেনি। এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষকরা আমাদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছেন বলে মৌখিকভাবে বলেছেন। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে দেখতে চাই। নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাস মালিক সমিতি দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এ ছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি বাস ও ৪টি অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানালেও তারা আমাদের ১টি বাস ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের বিষয়ে জানিয়েছে। শাহ আমানত ও এ বি ট্রাভেলসের বাস এ সড়কে চলবে না বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এদের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি আমরা মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমনদের বরখাস্ত এবং পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলাম। সে বিষয়েও আমরা কোনো ধারণা পাইনি।' আশিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমাদের বাকি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুধবার সকাল ১০টা থেকে আমরা আবারও রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি। সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।' বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, 'শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে যেসব আমাদের হাতে আছে, সেগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। দ্রম্নত সেগুলোর বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বেশকিছু দাবি রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। সেগুলোর জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।'