আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৬৪ নেতাকে শোকজ করেছে বিএনপি। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২১ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন। শোকজের জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হলে বা কেউ জবাব না দিলে তাদের দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে। আগামী সপ্তাহে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত শোকজ চিঠি ৬৪ নেতাকেই দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, 'গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপির নেতা হিসেবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা
প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আপনার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। সুতরাং দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।'
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো শোকজের চিঠিতে তাদের ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা জানান, শোকজ নোটিশ দেওয়া ৬৪ পদধারী নেতার মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ৩৮ নেতাকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। বুধবার রাত পর্যন্ত আরও ২৬ নেতাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ৩৪টি উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির পদধারী নেতারা মাঠে আছেন। এর মধ্যে ৮ উপজেলায় ১৯ নেতা প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন ৪২ জন, আগেই ১৫ নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। দল থেকে পূর্বে বহিষ্কৃত এমন প্রার্থী ৪ জন, এর মধ্যে আবার একজন দল পরিবর্তন করেছে। ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে প্রার্থী হয়েছে ২৪ উপজেলায়। এর মধ্যে ৪ উপজেলায় ১০ নেতা ভোটে রয়েছেন। মোট ৩০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ৯ নেতা প্রত্যাহার করে নেন। ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ১৯ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন ২০ নেতা। এর মধ্যে ১ জন প্রত্যাহার করেছেন, এখনো ভোটে আছেন ১৯ নেতা।
ইউপি ও পৌর ভোটে যাওয়া ৫ নেতাকে বহিষ্কার
এদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও ৫ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বুধবার বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভাকেট তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন জলঢাকা পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নীলফামারী জেলাধীন জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেটকে (কমেট চৌধুরী) বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া একই অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাদেক আলী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ১২নং চিকনদন্ডী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আলী মাহমুদ, সদস্য জহুরুল আলম এবং কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁ উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ঈদগাঁ উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়াকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।