উপজেলা নির্বাচন

৬ চেয়ারম্যানসহ ২৫ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত

বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভোট স্থগিত করেছে ইসি চতুর্থ ধাপে ভোট ৫ জুন

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৫ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন রয়েছেন। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন। বিনা ভোটে নির্বাচিতদের মধ্যে দুইজন মন্ত্রী এমপিদের স্বজন বলে জানা গেছে। এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০ জনের বেশি মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে রয়ে গেছেন। তবে প্রথম পর্বের ভোটের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন সোমবার মাত্র তিনজন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের স্বজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বিতীয় পর্বে নতুন করে আরও প্রায় ৩৫ জন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের স্বজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এরমধ্যে কুমিলস্নার বরুড়া উপজেলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আপন শ্যালক রয়েছেন। একই জেলার সদর উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মাদারীপুরের শিবচরে ও ফেনীর পরশুরামে চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; দিনাজপুরের হাকিমপুরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; গাইবান্ধার সাঘাটায় চেয়ারম্যান; পাবনার বেড়া উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; নাটোরের সিংড়ায় চেয়ারম্যান; কুষ্টিয়া সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ভাইস চেয়ারম্যান; কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান; রাঙ্গামাটির কাউখালীতে ভাইস চেয়ারম্যান; চুয়াডাঙ্গার ডামুড়হুদায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা। বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে চেয়ারম্যান পদে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন, তবে এই উপজেলার ভোট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় তিন পদে সোমবার ভোটের মাঠ থেকে সরে যান ১৯৮ জন প্রার্থী। ১৮ এপ্রিল দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী সারাদেশে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা গত এক সপ্তাহ ফোনে তাগাদা দেন তাদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বিবৃতি দিয়ে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের স্বজনদের সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান। এর মধ্যে গত রোববার নাটোরের সিংড়ায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌?মেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগারের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সহিদুল ইসলাম। সরে দাঁড়ান নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদৌস। তবে তিনি চেয়ারম্যান পদে 'ডামি' প্রার্থী ছিলেন। তাদের ছেলে আশিক আলী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ সদরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সালের চাচা আনিস উজ্জামান বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যেসব সাংসদ ও মন্ত্রীদের স্বজনের রয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন মাদারীপুর সদরে চেয়ারম্যান পদে সংসদ সদস্য শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক চৌধুরী, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছেলে মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন এবং সোনাতলা উপজেলায় সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই মিনহাদুজ্জামান। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর ছোট ছেলে আলী আফসার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। মোহাম্মদ আলী ও সফিকুল ইসলাম বর্তমান সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলামের চাচা। আর আলী আফসার মাজহারুল ইসলামের চাচাতো ভাই। কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্য আবদুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই হারুন অর রশীদও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি। এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা ভোটের প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপেও একই হারে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা অংশ নেওয়ায় আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও এখনো শীর্ষ নেতৃত্বের হুমকি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। এমনকি এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়ার কথাও শোনা যায়নি। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতা নাম বলেন, অতীতে বহুবার দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়া নেতাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দুবার ক্ষমা করার নজির আছে। বিগত সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে কেউ দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, যেকোনো নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে সরাসরি বহিষ্কার হবেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শাস্তি না দিয়ে বরং পরে দলে টেনে নেওয়া হয়েছে। এখন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের স্বজনদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া কতটা সম্ভব হবে, এ বিষয়ে সন্দিহান খোদ আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতারা। তবে দলের কোনো কোনো নেতার ভাষ্য, এ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। কারণ ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে। এদিকে দ্বিতীয় পর্বে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একজন করে প্রার্থী হয়েছেন। তারাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার পথে। এছাড়া দ্বিতীয় পর্বে মনোনয়ন প্রত্যাহারের এখনো সময় আছে। ফলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে কুমিলস্না সদর, চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া- এই তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে একজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফলে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। যাচাই-বাছাইয়ে কিছু প্রার্থী বাতিল হতে পারেন। এতে আরও কিছু উপজেলায় একক প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যায়যায়দিনের কুমিলস্নার স্টাফ রিপোর্টার মো. আবদুল জলিল ভুঁইয়া জানান, বরুড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের আপন শ্যালক মো. আবদুল হামিদ লতিফ ভূঁইয়া (কামাল)। আওয়ামী লীগে তার কোনো পদ নাই। পেশায় ব্যবসায়ী হামিদ কামালের গ্রামের বাড়ি বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের মনোহরপুরে। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে আগাম গণসংযোগ করে আসছিলেন। মন্ত্রীর আত্মীয়রা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত আছে, তাহলে কেন তার প্রার্থী হওয়া? এমন প্রশ্নের জবাবে হামিদ কামাল বলেন, 'আমার ভগ্নিপতি ঢাকা-১২ আসনের এমপি, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। আমি কখনো মন্ত্রীর পরিচয়ে কোথায়ও দাপট দেখাই না, এমন কোনো অভিযোগও আমার বিরুদ্ধে নেই। আমি যদিও আওয়ামী লীগ করি, ইচ্ছা করলে কুমিলস্না কিংবা ঢাকায় আওয়ামী লীগের পদ-পদবি নিতে পারতাম।' তিনি আরও বলেন, 'মন্ত্রী আমার আত্মীয় হিসেবে শ্রদ্ধার স্থানে আছেন ও থাকবেন। দলে এখনো আমার কোনো পদ নাই। তাই নিজের পরিচয়ে নির্বাচন করতে চাচ্ছি, এতে তো সমস্যা হওয়ার কথা না।' অন্যদিকে সদর দক্ষিণ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন কুমিলস্না ১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট) আসনের এমপি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সারোয়ার। তিনি ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে টানা তিনবার এ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে আছেন। প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সারোয়ার বলেন, 'দলের নেতাকর্মীরা সভা করে তাকে নির্বাচনের জন্য চাপ দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। এছাড়াও ১৫ বছরে কি কাজ করলাম এ নির্বাচনে ভোটাররা তা রায় দিবে। কয়েক মাস ধরে নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে কাজ করছি, এখন ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়া সম্ভব নয়।' বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভোট স্থগিত করেছে ইসি এদিকে দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের মধ্যে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ৮ মে রোয়াংছড়ি ও থানচিতে এবং রুমার ২১ মে ভোটের তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি এখন বলছে, পরে সুবিধাজনক সময়ে এ তিন উপজেলায় ভোটের আয়োজন হবে। মঙ্গলবার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা ভোট নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। চার নির্বাচন কমিশন, জননিরাপত্তা বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি,র্ যাবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সভায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এবার উপজেলা নির্বাচনে অন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে বেশি সংখ্যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হবে। চার ধাপে ভোট হওয়ায় জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করা হবে। তিনি আরও বলেন, 'পার্বত্য জেলা বান্দরবানে, বিশেষ করে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। আপাতত এ তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সুবিধাজনক সময়ে এ নির্বাচন করা হবে।' অভিযান চলমান থাকায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এ তিন উপজেলার নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব জাহাংগীর আলম। এবার প্রথম ধাপে ১৫০ ও দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১১২টির ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ৫ জুন। ২ এপ্রিল রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে অর্থ লুট করে একদল সশস্ত্র লোক। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করার পাশাপাশি পুলিশের ১০টি এবং আনসার সদস্যের চারটি অস্ত্রও লুট করে নিয়ে যায় তারা। রুমার ঘটনার পরদিন থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকেও দিনদুপুরে ডাকাতি হয়। দুই ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ জড়িত বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য। ডাকাতির ঘটনার দুদিন পর রুমার একটা পাহাড়ি এলাকা থেকে ছাড়া পান ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিন। এর পর থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-অর্থ উদ্ধার এবং 'সন্ত্রাসীদের' গ্রেপ্তারে রুমা ও থানচিতে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। যৌথ বাহিনীর এই অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭১ জনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে পুলিশ। অভিযান সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী। বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের মধ্যে সোমবার কেএনএফের এক 'সদস্যের' নিহতের খবর জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর। চতুর্থ ধাপে ভোট ৫ জুন এদিকে, চতুর্থ, অর্থাৎ শেষ ধাপে ৫৫টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৫ জুন। একই দিন ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। ইসি সচিব বলেন, চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৯ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১২ মে। আর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৩ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১৬ থেকে ১৮ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। আগামী ৫ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হবে চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ। চতুর্থ ধাপে ৫৪টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় এক প্রার্থীর মৃতু্যতে সেখানে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। চতুর্থ ধাপে ওই উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হবে। বাকিগুলোতে ভোটগ্রহণ করা হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।