ভোট বর্জনের ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা বিএনপির
বর্জনেও নজর উপজেলা নির্বাচনে
প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
উপজেলা নির্বাচনে ভোটবর্জনের ঘোষণা দিলেও নজর সরাবে না বিএনপি। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না এবং অধিকাংশ মানুষ এর বিপক্ষে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে চায় দলটি। সেই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা অটুট রাখার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতে বিএনপির অন্তত ৪৯ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে প্রায় ৩৫ জন প্রার্থী মাঠে সক্রিয় আছেন। এ অবস্থায় সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্বাচনে অংশ না নিতে নিরুসাহিত করেছেন। এরপরও যারা সেই আহ্বানকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে আছেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, কারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে আছেন, সেই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যারা থাকবেন, তাদের ব্যাপারে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে- এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতি কম থাকে, তা দেখাতে চাইবে বিএনপি। এ জন্য ভোটবর্জনের ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট তৈরি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সারাদেশে পথসভা, মতবিনিময় সভার মতো কর্মসূচিও থাকবে।
বিএনপির এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল বিএনপি সব সময় নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু যে ফল আগে নির্ধারিত, সেই নির্বাচনে বিএনপি যেতে চায় না। এ জন্যই নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচনে নজর থাকবে। কীভাবে কারচুপি হয় এবং জনগণ যে এই নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, এর দালিলিক প্রমাণ রাখতে চায় বিএনপি। এসব প্রমাণগুলো পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে কাজে লাগানো হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতাকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের
দায়ে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। তবে সবাইকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে না। শুধু উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের নয়, যারা দ্বিতীয় ধাপেও অংশ নিতে আগ্রহী, তাদের বিষয়ে এখনই খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে বিএনপি। এ জন্য দলটি একটি তালিকাও করেছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৬০টি উপজেলার মধ্যে অন্তত ৩০টি চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন- এমন তথ্য দল পেয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, দল নির্বাচন বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, নেতা-সমর্থকদের একটি অংশ আছে, যারা সব সময় নির্বাচনের মাঠে থাকতে চায়। এর অংশ ১০ শতাংশের বেশি না। এমন গুরুত্বহীন যারা, তাদের বিষয়ে দল তেমন কোনো আগ্রহ নাও দেখাতে পারে।
জানা যায়, যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তাদের বেশির ভাগেরই দলে কোনো পদ নেই। দলে পদ আছে- এমন নেতাদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ফোন করেছেন।
তবে এখনো অনেকে নির্বাচনের মাঠে শেষ পর্যন্ত থেকে লড়াই করার সিদ্ধান্তে অনড় আছেন। নির্বাচনের মাঠে থাকা গাজীপুর সদরের বিএনপি নেতা এজাদুর রহমান চৌধুরী ওরফে মিলন যায়যায়দিনকে বলেন, জনগণের চাপে তিনি নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। দল ভোটবর্জনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বিএনপি নেতা মো. আমিনুল ইসলাম বাদশা জানান, নির্বাচনের মাঠ আছেন এবং শেষ পর্যন্ত থাকবেন।