কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

আমরা ক্ষমতায়, তাই কথা বলতে পারছে বিএনপি

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার গণভবনে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি। তারা অপরাধ করেছে, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে গণভবনে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজকে (বিএনপি) সব জায়গায় কান্নাকাটি করে বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার কথা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কিসের মামলা... অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা, তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাই তো বাস্তবতা।' তিনি আরও বলেন, 'তারা (বিএনপি) ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কী হবে? ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা তো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা তারা ঘটাল নির্বাচন ঠেকাতে যেয়ে, রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে। যারা এগুলো করল তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো তাদেরকে মানুষ পূজা করবে? এসব মামলা দ্রম্নত শেষ করে শাস্তি দিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ প্রধান। আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে বিএনপি এখনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে তারা এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারাদিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপরও বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।' বিরোধী দলে থাকার সময়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে।' সারা দেশে জেলের সব অপরাধীই বিএনপির কিনা এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, 'তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে ৬০ লাখ লোক তাদের গ্রেপ্তার, ৬০ লাখ তো ধারণক্ষমতাও নাই জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক, এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি।' বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আজকে তারা চিৎকার করে তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। কী অত্যাচার হচ্ছে তাদের ওপর? জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচারের যে স্টিম রোলার চালিয়েছিল, যেভাবে হত্যা করেছিল, খালেদা জিয়া আসার পরে ২০০১ এর নির্বাচনের পর কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ঘরে থাকতে পারেনি। ধরে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার করেছে এবং আমাদের কতগুলো নেতাকে মেরে ফেলে দিল, আহসানউলস্নাহ মাস্টার থেকে শুরু করে আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।... ওরা শুধু আওয়ামী লীগ না, ওরা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে।' গণভবনের শাক-সবজি উপহার এদিকে এ দিন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উপহার দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বাসায় ফেরার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপস্থিত নেতাদের এ উপহার তুলে দেওয়া হয়। গণভবনে উৎপাদিত পালংশাক, পাটশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাক, লাউ, করলা, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উপহার দেওয়া হয় কৃষক লীগ নেতাদের। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদেরও এসব উপহার দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শাকসবজি পেয়ে কৃষক লীগ নেতাদের বেশ উৎফুলস্ন হতে দেখা যায়। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এ প্রসঙ্গে কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ বলেন, গণভবনে উৎপাদিত লাউ, চিচিঙ্গা, করলা, বরবটি, ঢঁ্যাড়স, বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার নিজস্ব তত্ত্‌বাবধানে তার বাসভবনে (গণভবনে) উৎপাদিত শাক-সবজি কৃষক লীগ নেতাকর্মীদের উপহার দেওয়ায় যেমন উৎফুলস্ন হয়েছি, তেমনি নিজেরাও প্রধানমন্ত্রীর মতো একজন ভালো খামারি হওয়ার জন্য প্রেরণা পেয়েছি। সমীর চন্দ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে উৎপাদনের আওতায় আনতে হবে। তাইলে খাদ্যের জন্য আমাদের কারও মুখাপেক্ষি হতে হবে না। আমাদের নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারবে না। গণভবনের ব্যাংকুয়েট হলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু। ১৯৭২ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।