পুলিশি বাধায় পন্ড আ'লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ
সিরিজ ককটেল বিস্ফোরণে টাঙ্গাইল শহর থমথমে
প্রকাশ | ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ডাকা আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ পুলিশি বাধায় পন্ড হয়ে গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে ধর্ষণ মামলার আসামি শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এবং আওয়ামী লীগের আরেক অংশ জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামিদের বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে পৌর উদ্যানে এই সমাবেশের ডাক দেয়।
এর আগে বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সিরিজ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শহরবাসী।
পুলিশ জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের উভয়পক্ষ সমাবেশের জন্য অনুমতি চাইলেও কোনো পক্ষকেই শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপরও উভয়পক্ষ সেখানে সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়।
জানা যায়, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের আদালত পাড়ার বাসভবনের সামনে সমবেত হতে থাকেন। অন্যদিকে, ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা পৌরসভা এবং থানা পাড়া এলাকায় জড়ো হন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের দুইপক্ষ একই স্থানে সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ পৌর উদ্যান এলাকায় অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার দিকে সংসদ সদস্য ছোট মনিরের বাড়ির সামনে থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করা হলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে তারা সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এতে সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনি, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মামুন অর রশিদ, জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বালা মিয়া, পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ ও আমিনুর রহমান আমিন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নাতি হাসরত খান ভাসানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, শান্ত টাঙ্গাইলকে অশান্ত করার মধ্য দিয়ে কিছু চক্রান্তকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার কার্যক্রমকে বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা খুনিচক্রের ক্রিড়ানক হয়ে এই উস্কানিমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছে।
অন্যদিকে, একই সময় টাঙ্গাইল পৌরসভা ভবনের সামনে থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিচারের দাবিতে মিছিল বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীরের নেতৃত্বে মিছিলটি পৌরসভা চত্বর থেকে রাস্তার নামার পরই পুলিশ বাধা দেয়। পরে তারা পৌর ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন- পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আকরাম হোসেন ও মানবাধিকার কর্মী মাহমুদা শেলী। বক্তারা বলেন, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নিগ্রহের মামলা রয়েছে। তার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান নেতারা।
এর আগে বুধবার রাত পৌনে ১০টার দি?কে টাঙ্গাইল পৌরসভার সামনে, পৌর উদ্যান, ছয়আনী পুকুরপাড়, আদালতপাড়া, পুরাতন বাসস্ট?্যান্ড এবং থানাপাড়া এলাকায় বিকট শব্দে কয়েকটি কক?টেল বিস্ফোরিত হয়। এতে শহ?রের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বাসিন্দারা জানান, মোটর সাইকেল?যো?গে দুষ্কৃতকারীরা শহ?রের বিভিন্ন স্থানে কক?টেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের সমাবেশ আহ্বানকে কেন্দ্র করে এমন?টি হ?তে পা?রে।
পরে পুলিশ পৌরসভার সামনে থেকে কয়েকটি ককটেল-সদৃশ বস্তু উদ্ধার করে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, 'দুইপক্ষ একই স্থানে সমাবেশ ডাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় কোনো পক্ষকেই সমাবেশ না করতে দেওয়ার বিষয়ে তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'