শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয় মাসের দন্ড পাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার জামিনের মেয়াদ ফের বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার কাকরাইলে শ্রম আপিল ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল আগামী ২৩ মে আপিল শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করে ওইদিন পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ইউনূসসহ চার আসামিই এদিন আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে বিচারক স্থায়ী জামিন না দিয়ে সময় বাড়ানোর আদেশ দেন।
আদালতে ইউনূসের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন- আবদুলস্নাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
শুনানিতে আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, 'যেহেতু এ বিষয়ে একটি মামলা হাইকোর্টে রিভিশন করা হয়েছিল। সে বিষয়ে রায়ও হয়েছে। রায়ের কপি এখনো পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে আসামিদের স্থায়ী জামিন না দেওয়াটাই ভালো হবে।'
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়ে গত ১ জানুয়ারি রায় দেয় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মামলাটিতে ইউনূসের সাজা হওয়ার পর দেশের পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া এসেছে বিদেশ থেকেও। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল
ট্রাইবু্যনাল ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে এবং তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেয়। ৩ মার্চ ফের শুনানি শেষে জামিনের সময় পরবর্তী তারিখ ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইবু্যনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন কলকারখানা অধিদপ্তরের আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ ফেব্রম্নয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়।
শ্রম আপিল ট্রাইবু্যনালের সেই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। ইউনূসসহ চারজন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা এবং গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ আনা হয়।