রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় বাবার মারধরের শিকার হয়ে জান্নাতুল নামে ৫ বছর বয়সি শিশুকন্যার মৃতু্য হয়েছে। ঘটনার পর ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
হাজারীবাগ থানার ওসি নুর মোহাম্মদ জানান সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'আহত শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার ভোরে তার মৃতু্য হয়।'
নিহত জান্নাতুলের বাবা লেগুনাচালক মো. রাসেলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় প্রতিবেশীরা।
জান্নাতুল দীর্ঘ সময় মুখে খাবার নিয়ে বসে থাকত, তাই রেগে গিয়ে রাসেল এই কাজ করেন বলে জানিয়েছেন তার মামা মো. রাহাত।
রাসেল ও নাসিমার একমাত্র সন্তান ছিল জান্নাতুল। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা উপজেলায়। মাস দেড়েক আগে নাসিমা ও জান্নাতুলকে গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে এসে হাজারীবাগের সনাতনঘর বউবাজার এলাকায় একটি টিনশেড ঘর ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন রাসেল।
রাহাত বলেন, মেয়েটি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করত না, মুখে খাবার নিয়ে বসে থাকত। সোমবার রাতে তাকে খাওয়ানোর সময় তার বাবা রেগে গিয়ে চড় মেরে বসে। সে সময় পাশের দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে গেলে মেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।
শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিল্পী নামে তাদের এক প্রতিবেশী বলেন, 'সোমবার সন্ধ্যার পরপর মেয়ের বাবা আমাকে ডেকে বলেন খালা একটু দেখেন তো, আপনার নাতিনরে (জান্নাতুল) মারছি, তার মা নাসিমাও হাত কাইটা ফেলছে।'
শিল্পী বলেন, তিনি রাসেলের বাসায় গিয়ে দেখেন নাসিমার বাম হাতে কাটা আর শিশুটি পরে আছে অচেতন অবস্থায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিশুটিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঢাকা মেডিকেলে জান্নাতুলকে রাত পৌনে ১১টার দিকে ভর্তি করানো হয় বলে শিল্পী জানান।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ভোরের দিকে জান্নাতুল মারা যায়। তারপর থানায় খবর দিলে ওর বাবাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ওসি নুর মোহাম্মদ বলেন, শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। তার বাবা পুলিশ হেফাজতে আছে।