রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সোনালীতে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
সোনালীতে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

বেসরকারি খাতের পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের মার্জারের পর এবার রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) একীভূত হচ্ছে সোনালী

ব্যাংকের সঙ্গে।

সোমবার দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদই মার্জারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেলেই বিডিবিএল অধিগ্রহণের বাকি কাজ এগিয়ে নেমে সোনালী ব্যাংক।

বিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান কাজী বলেন, 'মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা ছিল, সেটা আজ বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পর্ষদ একমত হয়েছে যে, সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হবে বিডিবিএল। এখন বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হবে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রক্রিয়া হবে।'

অর্থনীতিবিদরা গত কয়েক বছর ধরেই দেশে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

সরকারের উচ্চপর্যায় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ইঙ্গিত পেয়ে বিডিবিএলের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা, যা সোমবার পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করা হয়।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, 'বিডিবিএলকে সোনালীর সঙ্গে মার্জ করতে পরিচালক পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে। ঈদের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা সারা হবে, তখন আমরা সমঝোতা চুক্তি করব। মার্জারের প্রক্রিয়া কীভাবে সারা হবে, সমঝোতা চুক্তিতে এর

বিস্তারিত থাকবে।'

১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে শিল্প খাতের বিকাশে 'বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক' ও 'বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা' নামে দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়।

আশানুরূপ সাফল্য দেখাতে না পারায় ২০০৯ সালের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠান দুটিকে একীভূত করে সরকার। নতুন নাম হয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড বা বিডিবিএল। তখন ব্যাংকটির শাখা সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭টি।

কোম্পানি আইন সংশোধনের পরে নামের শেষে লিমিটেডের পর পিএলসি যোগ করা বাধ্যতামূলক করায় এখন তা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি।

রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে বিডিবিএলের আর্থিক ভিত্তি 'শক্তিশালী' দাবি করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান কাজী বলেন, 'আমাদের ব্যাংকের পরিধি খুব একটা বড় না। সারাদেশে মাত্র ৫০টি শাখা। এটি যেমন একটি দুর্বল দিক, আবার এটিই সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য। পরিসর ছোট হওয়ায় ঋণ কেলেঙ্কারি নেই। আমরা প্রকৃতভাবেই মুনাফায় আছি।'

অন্যদিকে সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে 'বাংলাদেশ ব্যাংক (জাতীয়করণ) অধ্যাদেশ, ১৯৭২'-এর ক্ষমতাবলে পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ব্যাংক অব বাহ্‌ওয়ালপুর এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক নিয়ে 'সোনালী ব্যাংক' গঠিত হয়। ২০০৭ সালে এই ব্যাংক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়।

বর্তমানে ১২৩২টি শাখার মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, এর মধ্যে বিদেশে দুটি শাখা রয়েছে। ওয়েব সাইটের তথ্য অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ৪৭ লাখের মতো। কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৮ হাজার ১১৫ জন।

এদিকে দুর্দশায় থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বলেও খবর এসেছে।

সংবাদমাধ্যমে আসা খবরে বলা হচ্ছে, সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিনের একটি বৈঠক হয়। সেখানেই বেসিক ব্যাংককে সিটির সঙ্গে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে