রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফুটবলের উন্নয়নে চাইলেন ব্রাজিলের সহায়তা

'কিশোর গ্যাং' মোকাবিলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সোমবার তার কার্যালয়ে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা সৌজন্য সাক্ষাৎকালে 'শেখ হাসিনা' লেখা জার্সি উপহার দেন -ফোকাস বাংলা

'কিশোর গ্যাং' নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা সামাল দিতে গিয়ে সমাজে অপরাধী যেন আবার না বেড়ে যায় সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য এই কিশোর-তরুণদের অন্য অপরাধীদের মতো না দেখে সংশোধনের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা আসে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান।

সভা শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, 'কিশোর গ্যাং মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে সকলকে ইনভল্ব হতে বলেছেন। প্রথাগতভাবে যেভাবে অন্য অপরাধীদের সামাল দিই তাদের (কিশোর গ্যাং) ক্ষেত্রে একটু বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি দিতে বলেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা একটি অপরাধে জড়িত হলে তাদের যেন দীর্ঘমেয়াদে অপরাধী বানিয়ে না ফেলি। তাদের সংশোধনের জন্য যেন সুযোগ রাখা হয়। বিভিন্ন কর্মকান্ডে তাদের নিয়োজিত করার যেন সুযোগ রাখা হয় সে বিষয়ে বলেছেন।'

মাহবুব হোসেন বলেন, 'কিশোর অপরাধীদের জেলখানায় যখন রাখা হয় তখন তাদের যাতে অন্য আসামিদের সঙ্গে রাখা না হয়- সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রকল্প নেওয়ার জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে

\হইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।'

দেশে এখন তিনটি কিশোর সংশোধনাগার আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'এর সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আরও সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে বলেছেন যাতে করে তারা সংশোধন হতে পারে। সমাজে, রাষ্ট্রে তারা যেন তাদের প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারে সেভাবে যেন আমরা তাদের সংশোধন করি। কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে বলেছেন। কিশোর অপরাধীদের যখন ব্যবস্থাপনা করা হয় তখন যে অবশ্যই মনোবিজ্ঞানী বা কাউন্সিলিং বড় ভূমিকা পালন করে। অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে বলেছেন।'

মাহবুব বলেন, 'আইন স্বাভাবিক গতিতে চলবে। এদের যখন সামলাব, তখন যেন তাকে আরও অপরাধী না বানাই। তাকে যেন সংশোধন হওয়ার পরিবেশ দেওয়া হয়। জেলে থাকলেও যেন ভালো নাগরিক হয়ে বের হয়ে আসতে পারে।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে 'ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২৪' এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব বলেন, 'নাটোর জেলায় স্থাপনের জন্য গত বছর অক্টোবরে এই আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সংসদে আইন আকারে এটি পাস করতে পারেনি। সে কারণে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় এটি অনুমোদন নিতে হয়েছে। খসড়াটি যেহেতু আগেই চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, এখন সেটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।'

লজিস্টিক নীতিমালার খসড়া অনুমোদন

এদিকে, ব্যয় কমিয়ে আমদানি-রপ্তানি এবং স্থানীয় পণ্যের সহজ ও অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে 'জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা, ২০২৪' এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে এর আগে বাংলাদেশে কোনো নীতিমালা হয়নি। অনেকদিন থেকে এটা নিয়ে দাবি ছিল। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে লজিস্টিক সাপোর্টের গুরুত্ব অপরিসীম। মোট ব্যয়ের একটা বড় অংশ এখানে আছে।

এ নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্ধারিত সময় বা স্বল্পতম সময়ে স্বল্পতম ব্যয়ে স্মুথলি যেন পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাটা নিশ্চিত হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন এবং কী কার্যক্রম গ্রহণ করলে এই সার্ভিসটা দেওয়া সম্ভব হবে সে সংক্রান্ত একটি দিকনির্দেশনা এ নীতিমালায় আছে।

তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। কাউন্সিল সামগ্রিক দিকনির্দেশনা দেবে। এছাড়া মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সমন্বয় কমিটি থাকবে।

ব্যয় কমিয়ে পণ্যের অবাধ চলাচল নিশ্চিতে হচ্ছে লজিস্টিক নীতিমালা

'উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রপ্তানি পণ্য উৎপাদন স্থান থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত যাত্রাটি যেন বাধাহীন হয়, সেজন্য কী সহায়তা করা যায়- সেটার জন্য নীতিমালা করা হয়েছে। আগে এটি ছিল না, এটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে করা হলো।'

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, লজিস্টিকের কিছু অবকাঠামো খাত আছে। আমাদের যোগাযোগের যে অবকাঠামো আছে সেখানে আমরা সড়কনির্ভর হয়ে গেছি। সামনে রেল ও নৌপথ নির্ভরতা বাড়াতে যা যা করণীয় তা করা হবে।

তিনি বলেন, এছাড়া জিপিএস ট্র্যাকিং ও কানেক্টিভিটি হাব, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট জায়গায় একটি কানেক্টিভিটি হাব হবে। সেখানে পণ্য সরবরাহের জন্য ওয়ারহাউস (গুদামঘর) ও পণ্য যেন পচে না যায় সে ব্যবস্থা করা হবে। নীতিমালায় রপ্তানিকে মুখ্য ধরা হয়েছে এবং স্থানীয় বাজারের কথাও বলা হচ্ছে। পণ্যের অবাধ যাতায়াতের জন্য যেসব অবকাঠামো দরকার সে বিষয়ে নীতিমালায় বলা আছে।

মাহবুব হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত সব নীতিমালা পরীক্ষা করে তা ব্যবসাবান্ধব করতে বলা হয়েছে। কোন সেবা ব্যক্তিখাতে আসবে, কোনটা পিপিপি হবে, কোনটায় সরকার বিনিয়োগ করবে সে তালিকাও রয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন একটি বড় খাত, আমরা দেখেছি এখানে ১০৬ ধরনের পেশার কথা হয়েছে সেখানে ৫২ ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণও রয়েছে। সর্বনিম্ন কত ঘণ্টার প্রশিক্ষণ হবে তারও একটা বিধানের কথা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে