দগ্ধরা শঙ্কামুক্ত নন :স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সাভারে তেলের ট্যাংকার উল্টে ৪ গাড়িতে আগুন, নিহত ২
প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
রাজধানীর অদূরে সাভারের হেমায়েতপুরে তেলবাহী একটি ট্যাংকার উল্টে লাগা আগুনে আরও দুটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কার ভস্মীভূত হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনের মৃতু্য ও সাতজন দগ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোড়পুল এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে সাভার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নুরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার পর থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে হাসপাতাল পরিদর্শন করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, 'দগ্ধদের মধ্যে কেউ শঙ্কা মুক্ত নন।'
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্টেশন অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, 'মহাসড়কের জোড়পুল এলাকায় সড়ক বিভাগের ডিভাইডার নির্মাণ কাজ চলায় পাথর দিয়ে ইউটার্ন করা হয়েছিল।
ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার গাবতলী থেকে সাভার যাওয়ার সময় ইউটার্নের পাথরে লেগে উল্টে যায়। এতে ট্যাংকারটিতে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পেছনে আটকে থাকা কয়েকটি গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে।'
তিনি জানান, খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি ইউনিট দ্রম্নত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর মধ্যে তেলবাহী ট্যাংকারটি ছাড়াও দুটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট
\হকার পুরোপুরি পুড়ে যায়।
নুরুল ইসলাম আরও জানান, এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একজনের পুড়ে যাওয়া
মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে দ্রম্নত বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। দগ্ধদের শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড পস্নাস্টিক ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা গুরুতর।
সাভার মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, 'ঘটনার পর মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।'
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আবাসিক সার্জন ডা. মো. তরিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর আটজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে আনার আগেই একজন মারা গেছেন। মো. নজরুল নামের ওই ব্যক্তির বাড়ি ময়মনসিংহ বলে জানা গেছে। ৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল।
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন- বরিশালের বাকেরগঞ্জের মিলন (২২), বরগুনার মিম (১০), আল আমিন (৩৫), নিরঞ্জন (৪৫), সাকিব (২৪), হেলাল (২১), এবং রাজশাহীর আব্দুস সালাম (৩৫)। এদের মধ্যে হেলাল ও সাকিব শতভাগ দগ্ধ হয়েছেন। এছাড়া মিম ২০ শতাংশ, আল আমিন ১০ শতাংশ, নিরঞ্জন ৮ শতাংশ ও আব্দুস সালাম ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানান ওই চিকিৎসক।
সাভার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রাসেল মোলস্না জানান, দুর্ঘটনাস্থলে নিহত একজনের মরদেহ থানায় এনে রাখা হয়েছে। তার পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। দগ্ধদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তিনি বলেন, 'দগ্ধদের কেউ শঙ্কামুক্ত নন। আর এই সমস্ত ক্ষেত্রে আমরা একটা কথা সবসময় বলি, বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত এসব রোগীকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবেও না।'