অভিযোগ আমলে না নিলে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ

মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সরকারের অভিযোগ আমলে না নিলে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো প্রয়োজনে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভা শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের সভার সিদ্ধান্ত জানান। তিনি বলেন, 'গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ওদের (ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল) হেড অফিস এখানে না থাকার কারণে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুপারিশ-কথা তারা শোনেও না। তারা যে শুনছে না সেটা আমরা পাবলিকলি প্রচার করব। প্রয়োজন হলে এগুলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আগে প্রোপার নোটিফাই করব- আমাদের অভিযোগ যথাযথভাবে আমলে না নিয়ে তারা (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) এসব ক্রাইম, গুজব অব্যাহত রাখছে এবং তাদের পক্ষ থেকে (প্রতিরোধে) কোনো উদ্যোগ নেই।' তিনি বলেন, 'প্রথমে তাদের বারবার বলা হবে, দরকার হলে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারেও বলবো। যেন এ কথা বিশ্ববাসীর কাছে মনে না হয়, এখানে কোনো মৌলিক অধিকার ব্যাহত হচ্ছে।' মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ায় আইনের যে বিধানগুলো রয়েছে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। তারা আমাদের অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতা পাবলিক নোটিশের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা, যদি কখনো এগুলো বন্ধ হয় দায়টা যেন সরকারের ওপর না আসে, তাদের (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো) ওপরেই যেন বর্তায়।' মন্ত্রী বলেন, 'তাদের আমরা কী অভিযোগ দিলাম সেগুলো যেন মানুষ জানে। আমরা অভিযোগ করে প্রতিকার পাচ্ছি না।' কমিটির সভাপতি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচন যেন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয় সেজন্য... দলীয় প্রতীক অনেক সময় আইন প্রয়োগে হয়তো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতো। এই কমিটি মনে করে দলীয় প্রতীক না থাকায় এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি করা হয়েছে, কোনো প্রার্থী নিয়ম ও নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে তারা যেন শক্ত ভূমিকা পালন করে।' উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে পর্যাপ্তসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে বলা হয়েছে বলেও জানান মোজাম্মেল হক। তিনি আরও বলেন, ভবন নির্মাণের কোড মানা হচ্ছে না, এজন্য বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকান্ড হচ্ছে। ভবন থেকে কেমিক্যাল সরাচ্ছে না। এসব ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি। কেমিক্যাল যেন দ্রম্নত সরানো হয় সেজন্য শিল্পমন্ত্রী দ্রম্নত ব্যবস্থা নেবেন। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যেন কোড মেনে চলা হয় সেটাও বলা হয়েছে।' রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হবে।' মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন উদ্বেগের কারণ হয়েছে। নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।' 'তৃণমূল পর্যায়ে মাদকের বিস্তার ঘটেছে, এটা উদ্বেগের কারণ। শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।' আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, স্বাভাবিক আছে দাবি করে মোজাম্মেল হক বলেন, 'অগ্নিকান্ডের ক্ষেত্রে যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে, যারা অনুমোদন দিয়েছে তাদের বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য তাদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মেয়র, পুলিশ এবং যারা হোটেল রেস্তোরাঁ অনুমতি দেয় তাদের নিয়ে দ্রম্নতই রমজান মাসের মধ্যে মিটিং করে আরও দিকনির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি। সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।