বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব দোলযাত্রা ও হোলি উৎসব। এ উপলক্ষে সোমবার দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা, হোম যজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, স্বামীবাগ মন্দির, সূত্রাপুর মন্দির ও রমনা কালী মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। নানা রঙের আবির ছিটিয়ে হোলি উৎসবে মেতে ওঠেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মন্দিরে পূজা দেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের আবির মাখিয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে উদযাপন করেন হোলি উৎসব।
পুরান ঢাকার স্বামীবাগ, লক্ষ্ণীবাজার, তাঁতীবাজার, গোপীবাগ, শাঁখারীবাজার এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সি মানুষ মেতে ওঠেন আবির খেলায়। বাড়ির কর্ত্রীরা থালায় করে আবির ও ফুল নিয়ে মন্দিরে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে আবির নিবেদন করে পূজা করেন। তবে হোলির আনন্দ সবচেয়ে বেশি ছুঁয়ে যায় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের। দৌড়ঝাঁপ আর আবির মাখানোতে ব্যস্ত ছিলেন তারা।
এ উপলক্ষে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজা ও কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া অনুরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিভিন্ন মন্দিরে।
স্বামীবাগ মন্দিরে হোলি উৎসবে আসা শ্রীময়ী তৃষা হালদার বলেন, 'ডালা সাজিয়ে এখন মন্দিরে যাচ্ছি কৃষ্ণ ভগবানের পায়ে সোপর্দ করবো, তারপর তাকে রং লাগিয়ে রং খেলা শুরু করবো। যখন বিয়ে হয়নি তখন এ দায়িত্ব মায়ের ছিল, বিয়ের পর থেকে রীতি অনুযায়ী বাড়ির গৃহকর্ত্রী হিসেবে আমি পূজা দিই। তারপর ঠাকুরকে দেওয়া রং দিয়ে রং খেলা শুরু করি।'
হোলি ছাড়াও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে কোনো ধর্মীয় আয়োজনে সবচেয়ে বেশি উৎসবমুখর থাকে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার। হোলিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছরের মতো এবারও উৎসবের রঙে রেঙেছে শাঁখারীবাজারের বিভিন্ন মন্দির। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে শাঁখারীবাজারে উৎসবে যোগ দেন তরুণ-তরুণীরা। আসেন বিদেশিরাও। তবে এ বছর পবিত্র রমজান মাস থাকায় উৎসবে মানুষের উপস্থিতি ছিল কম।