দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল শ্রীলংকা। তবে বাংলাদেশের বোলিং তোপ সামলে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল লঙ্কানরা। এ দুই ব্যাটারের বিদায়ে অবশ্য ফের চাপে পড়ে সফরকারীরা। শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানে গুটিয়ে গেছে শ্রীলংকা। টাইগারদের হয়ে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন খালেদ আহমেদ ও অভিষিক্ত নাহিদ রানা। বোলাররা সফল হলেও দিন শেষে টাইগার ব্যাটাররা হতাশ করেছেন।
প্রথম দিন শ্রীলংকাকে ২৮০ রানে অলআউট করে দিয়েও স্বস্তিতে নেই স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষে নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসে তিন উইকেট হারিয়ে ৩২ রান করেছে টাইগাররা। সাত উইকেট হাতে নিয়ে এখনো ২৪৮ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্ব দুটি ও রাজিথা একটি উইকেট নিয়েছেন।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে ২৮০ রান করে শ্রীলংকা। ৫৭ রানে পাঁচ উইকেট পতনের পর ষষ্ঠ উইকেটে ২০২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু। লড়াকু ইনিংসে ১০২ রান করে আউট হন ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু। বাংলাদেশের দুই পেসার খালেদ আহমেদ ও অভিষিক্ত নাহিদ রানা তিনটি করে উইকেট নেন।
শ্রীলংকাকে তিনশ' রানের নিচে থামিয়ে প্রথম দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু হতাশা উপহার দিয়েছে জাকির হাসান ও অধিনায়ক শান্ত। দলীয় মাত্র ১৭ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তার অল্প সময় পরই ফিরে যান মুমিনুল হকও (৫)। তাতে ৩১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।
জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান কাজলের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে বিশ্ব ফার্নান্ডোর কাছে। শ্রীলংকার পেসারের জোরালো আবেদনে এলবিডবিস্নউ দেন আম্পায়ার। জাকির রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে তার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। ৮ বলে ২ চারে ৯ রান করে আউট হন বাংলাদেশি ওপেনার।
বিশ্ব তার দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর বিরুদ্ধে এলবিডবিস্নউর আবেদনে সফল হন। আম্পায়ার আঙুল তুলে দিলেও রিভিউ নেন বাংলাদেশি ব্যাটার। পারেননি উইকেট বাঁচাতে। ১০ বলে ৫ রানে থামেন শান্ত। ১৭ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এতে আগে ব্যাট করতে নামে শ্রীলংকা। দলটির হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নিশান মাদুস্কা ও দিমুথ করুণারত্নে। তবে শুরুতেই এ জুটিতে আঘাত হানেন টাইগার পেসার খালেদ আহমেদ। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই মাদুস্কাকে সাজঘরের পথ দেখান খালেদ। পরে ক্রিজে এসে করুণারত্নের সঙ্গে ছোট জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস। কিন্তু ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগে এ জুটিও ভাঙেন খালেদ। ১২তম ওভারে এক্সট্রা বাউন্সে মেন্ডিসকে জাকিরের তালুবন্দি করেন খালেদ। আউট হওয়ার আগে ১৬ রান করেন মেন্ডিস।
উইকেটে এসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (৫) ও দিনেশ চান্দিমাল (৯)। দুর্দান্ত এক থ্রোতে ম্যাথিউজকে রান আউট করেন শান্ত। আর শরিফুলের পেসে পরাস্ত হন চান্দিমাল। অবশ্য অবিশ্বাস্য এক ক্যাচে তাকে তালুবন্দি করেছেন মিরাজ।
পরে উইকেটে এসে প্রতিরোধ গড়েন কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ২০২ রান। সেই সঙ্গে দুজনেই সেঞ্চুরি করেছেন। যদিও শতকের ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তারা। তাদের দুজনকেই সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন অভিষিক্ত নাহিদ রানা। এরপর শুধু আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত ২৮০ রানেই থেমেছে ক্রিস সিলভারউডের শিষ্যরা। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন খালেদ ও রানা। এছাড়াও একটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল এবং তাইজুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলংকা প্রথম ইনিংস : ৬৮ ওভারে ২৮০ (মাদুশকা ২, করুনারাত্নে ১৭, কুশল ১৬, ম্যাথিউজ ৫, চান্দিমাল ৯, ধনঞ্জয়া ১০২, কামিন্দু ১০২, জয়াসুরিয়া ১, রাজিথা ৬*, ভিশ্ব ৯, কুমারা ০ ; শরিফুল ১/৫৮, খালেদ ৩/৭২, নাহিদ ৩/৮৭, তাইজুল ১/৩১, মিরাজ ০/২৫)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১০ ওভারে ৩২/৩ (জয় ৯*, তাইজুল ০*, জাকির ৯, শান্ত ৫, মুমিনুল ৫; বিশ্ব ২/৯, রাজিথা ১/২০)।