বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১
ইন্টারপোলকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ

রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশিট নিয়ে বেকায়দায় সিআইডি

গাফফার খান চৌধুরী
  ২৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশিট নিয়ে বেকায়দায় সিআইডি

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশিট দাখিলে বেকায়দায় পড়েছে সিআইডি। অভিযুক্ত বিদেশিদের সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদন বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থাটিকে দেয়নি সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। বিদেশি প্রতিবেদন পেতে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। সেইসঙ্গে দ্রম্নত বিদেশি প্রতিবেদন পেতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিদেশি প্রতিবেদন পেলে আমেরিকার আদালতে চলা মামলাটির কার্যক্রম আরও গতি পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, রিজার্ভ চুরির সঙ্গে বাংলাদেশসহ মোট ১২টি দেশের ৪০ থেকে ৪৫ জনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। যার মধ্যে ২৭ জনই বিদেশি। বিদেশি দেশগুলোর মধ্যে ফিলিপাইন, হংকং, ম্যাকাও, চীন, শ্রীলংকা, মিশর, সিঙ্গাপুর ও জাপানের হ্যাকাররা রয়েছে। এর বাইরে সন্দেহের তালিকায় রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সুইফটের কিছু কারিগর। সুইফটের কারিগরদের মধ্যে ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাস্তায় একজন গুলিতে নিহত হয়েছেন। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি তদন্ত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) যদিও এখন পর্যন্ত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

সূত্রটি বলছে, সুইফটের কারিগর হত্যার পাশাপাশি এফবিআই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাটিও তদন্ত করছে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে উত্তর কুরিয়ার পার্ক জিন হিয়ক নামের এক হ্যাকার জড়িত বলে তথ্য প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পার্ক জিনের বিরুদ্ধে রিজার্ভ চুরি ছাড়াও বিশ্বের প্রভাবশালী কয়েকটি দেশে সাইবার হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত উত্তর কুরিয়ার এই হ্যাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত উত্তর কুরিয়ার হ্যাকার পার্ক জিন ল্যাজারাস গ্রম্নপের অন্যতম প্রধান সদস্য। এই গ্রম্নপের হয়েই তিনি হ্যাকিংয়ের কাজটি করেন। ল্যাজারাস গ্রম্নপ যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিরক্ষা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লক হিড মার্টিন কর্পোরেশনকে টার্গেট করেছিল। কিন্তু সফল হতে পারেনি। পার্ক জিন ফেসবুকে ও টুইটারে ভিন্ন ভিন্ন নামে একাউন্ট খুলে লোকজনের কাছে এমন সব লিংক পাঠাতেন, যাতে উত্তর কোরিয়ার নানা ম্যালওয়্যার থাকতো। পার্ক জিনের গ্রম্নপের সাইবার হামলায় ব্রিটেনের একটি কোম্পানি অচল হয়ে পড়েছিল। চীনা কোম্পানি চুসান এক্সপোর আড়ালে পার্ক জিনের হ্যাকার গ্রম্নপটি কাজ করতো। ওই চীনা কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৭ সালে বিশ্ব্বজুড়ে যে সাইবার হামলা হয়েছিল সেটির পেছনেও ছিল পার্ক জিনের হ্যাকার গ্রম্নপ। এর আগে ২০১৪ সালে সনি কর্পোরেশনের ওপর সাইবার হামলার পেছনেও গ্রম্নপটি কাজ করে। এমনকি ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাইবার হামলার পেছনেও এই চক্র জড়িত। ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতের আনুষ্ঠানিক নির্দেশের পর পার্ক জিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই আদালত।

সিআইডির একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযুক্ত ২৭ বিদেশিই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কাউকেই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত ২৭ জন যে যে দেশের নাগরিক, ওইসব দেশকে সিআইডির তরফ থেকে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশ ও দূতাবাসগুলোকে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করা হয়েছে।

দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত বিদেশিদের বাংলাদেশ সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার জোর অনুরোধ করা হয়েছে। সেটি সম্ভব না হলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থা বা তদন্তকারী কোনো সংস্থার হাতে সোপর্দ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। যাতে করে তাদের রিজার্ভ চুরির অপরাধে বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার বা পুলিশ বা সিআইডি বা বাংলাদেশ সরকারের পছন্দমতো কোনো সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বিদেশি দেশগুলোর সংশ্লিষ্টদের। যাতে করে অন্তত সিআইডি রিজার্ভ চুরির মামলায় চার্জশিট দিতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত বিদেশি কোনো প্রতিবেদনই আসেনি। এ ব্যাপারে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, বিদেশি কোনো প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। যে কারণে রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশিট দাখিল করা যাচ্ছে না। তবে বিদেশি প্রতিবেদন দ্রম্নত পেতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সিআইডি বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও ওইসব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিদেশি প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে। বিদেশি প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে চার্জশিট দাখিল প্রক্রিয়া দীর্ঘ হচ্ছে। তবে সিআইডি দ্রম্নত চার্জশিট দাখিল করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮শ' কোটি টাকা চুরির ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ ঢাকার মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলার এজাহারে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব ও বাজেট বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মামলাটি দায়ের করেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে রিজার্ভ চুরির ঘটনাটি তদন্ত করছে। যৌথ তদন্তকারী দলটি রিজার্ভ চুরির সঙ্গে এখন পর্যন্ত ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, ভারত, চীন ও জাপানি কিছু নাগরিকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে।

সূত্র বলছে, রিজার্ভ চুরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ফিলিপাইনের রিজাল কর্মাশিয়ার ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। চলতি বছরের ২৯ ফেব্রম্নয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক আদালত মামলাটি চালিয়ে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন মামলা দায়েরকারী কর্তৃপক্ষকে। নিউইয়র্ক সুপ্রিমকোর্ট মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার সারবস্তু আরসিবিসি বিরুদ্ধে করা মামলায় আছে।

রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৭ মে নিউইয়র্কের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের মধ্য থেকে বস্নুমবেরি ও ইস্টার্ন হাওয়াই নামে দুটি ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। কিন্তু মামলা খারিজ করেননি। তবে ব্যক্তিগতভাবে জড়িত না থাকায় আরও চার জন বিবাদীর নাম খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তারা হচ্ছেন, ইসমায়েল রেয়েস, ব্রিজিত ক্যাপিনা, রোমুয়ালদো আগারাদো ও নেস্তর পিনেদা। তবে আরসিবিসি ও অন্য সব বিবাদীর বিরুদ্ধে আনা অন্য অভিযোগে মামলা চলতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন নিউইয়র্কের আদালত।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। যেটি পরবর্তীতে দেশি-বিদেশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ১৯৯৯ থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিলের প্রথম দিক পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রযুক্তিগত দিক ছিল খুবই শক্তিশালী। তখন কাটআউট পদ্ধতিতে রিজার্ভ মেইনটেইন করা হতো। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা অর্থ দেখভাল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেন্টার ছিল। সেন্টারটিতে যুক্ত থাকা কম্পিউটারগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের অন্য কোন কম্পিউটারের কোনো ধরনের সংযোগ ছিল না। যে কারণে অন্যকোনো সার্ভার থেকে রিজার্ভ সার্ভারে প্রবেশের কোনো পথ ছিল না। শুধুমাত্র রিজার্ভ সার্ভারটি সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। রিজার্ভ সংক্রান্ত কোনো তথ্য ফেডারেল ব্যাংকের অন্যকোন বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যকোনো বিভাগের জানার সুযোগ ছিল না।

কিন্তু ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় সুইফটের তরফ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগকে আরও উন্নত করার কাজ করা হয়। ওই সময় ব্যাংকের প্রায় পাঁচ হাজার কম্পিউটার একটি সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা হয়। আর তাতেই অর্থ চুরির পথ সহজ হয়। ওই সময় সুইফটের তরফ থেকে একটি বিশেষ চিপও দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। চিপটি ব্যাংকের ভল্টে রাখার নিয়ম। যখন কাজ করবে, তখন চিপ লাগিয়ে কাজ করবে। এরপর খুলে তা ভল্টে জমা করে রাখার কথা।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগ চিপটি সবসময়ই লাগিয়ে রাখত। এতে করে হ্যাকাররা ম্যানুয়াল ও ম্যাসেজ পাঠিয়ে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি করে। অর্থ চুরির আগে মাত্র ৫শ' ডলার দিয়ে ফিলিপিনসের রিজাল ব্যাংকে একাউন্ট খুলে হ্যাকররা। হ্যাকাররা স্বল্পসময়ের মধ্যেই একাউন্টে বড় অঙ্কের টাকা জমা হচ্ছে বলে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের ম্যানেজার মায়া দেগুইতিকে জানায়।

সূত্রটি বলছে, হ্যাকাররা বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংককে টার্গেট করেছিল। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার সিস্টেম দূর্বল পেয়ে তারা সুযোগটি কাজে লাগায়। অর্থ চুরির সঙ্গে এখন পর্যন্ত ২৭ জন বিদেশি শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২৩ জন মাঠ পর্যায় থেকে অর্থগুলো ক্যাসিনো থেকে একত্রিত করে মূল হ্যাকারদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। মূল হ্যাকার হিসাবে প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন চার বিদেশিকে শনাক্ত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে অর্থ সংগ্রহ করা ২৩ জন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।

সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৬৬টি কম্পিউটারের ফরেনসিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে প্রযুক্তিগত পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকার সুযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। রিজার্ভ চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার ইচ্ছাকৃত বা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জড়িত থাকার কোনো তথ্য প্রমাণ মেলেনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে সুইফট ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে ৩৫টি ভুয়া বার্তার মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভের নিউইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০০ কোটি ডলার চুরির চেষ্টা চালায় অপরাধীরা। এর মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার লোপাট করতে সক্ষম হয় তারা। চুরি করা অর্থের মধ্যে শ্রীলংকার শালিখা ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে যায় দুই কোটি ডলার। পরবর্তীতে সে অর্থ ফেরত দিয়েছে দেশটি। তবে বাকি আট কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে চলে যায়। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে তিন কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে