জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডেটাবেজ তৈরিতে বিটিআরসির নির্দেশনা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির করা একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুলস্নাহর বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এইচআরপিবির পক্ষে আবেদনটি করেছেন- আইনজীবী মো. সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, মামুন আলীম ও রিপন বাড়ৈ।
এতে মন্ত্রিপরিষদ এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ছাড়াও বিবাদী করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতিকে।
আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
মনজিল মোরসেদ জানান, গত ৬ ফেব্রম্নয়ারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিটিআরসি মোবাইল কোম্পানিগুলোকে তাদের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে তথ্যভান্ডার তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনায় উলেস্নখ করা হয়েছে, মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের নাম, ঠিকানাসহ অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে।
মোবাইল ফোন অপারেটররা এর আগে নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করত উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'বিটিআরসির নির্দেশনার প্রতিফলন হলে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিজিকম টেকনোলজিসের সঙ্গে ডাটাবেইজের মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য যাচাই করতে হবে।
'এই ডাটাবেইজের কারণে ডিজিকম টেকনোলজিসকে গ্রাহক প্রতি ১০ টাকা দিতে হবে। বর্তমানে মোবাইল কোম্পানিগুলো এই একই বিষয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ৫ টাকা দেয়।'
শুনানিতে এই আইনজীবী বলেন, 'বিটিআরসির এই নির্দেশনা যদি মোবাইল কোম্পানিগুলো অনুসরণ শুরু করে, তাহলে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যাবে, যার ফলে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে। এ ছাড়া জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'
তিনি বলেন, 'নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রাইভেট কোম্পানির অধীনে গেলে সংবিধান অনুযায়ী স্বীকৃত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হবে। আইন অনুযায়ী, বিটিআরসির সিদ্ধান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৩ (খ) বিরোধী এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন ২০১০-এর ধারা ১৩ পরিপন্থি।'
এই সিদ্ধান্তের কারণে জনগণকে অতিরিক্ত পাঁচ টাকা করে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে দিতে হবে। এই অর্থের পুরোটাই পাবে ডিজিকম টেকনোলজিস।