এখন কেমন লাগে!
প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
মশা নিধনে খাল (লেক) পরিষ্কার কর্মসূচি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ঢাকা উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান চলাকালীন মন্ত্রী, মেয়র, অন্য অতিথিসহ উপস্থিত সবাই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়েছেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি লাইভ ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ওই ভিডিওতে মন্ত্রী, মেয়রসহ অন্যদের হাত দিয়ে মশা তাড়াতে দেখা গেছে। কেউ কেউ মশায় কামড় দেওয়া স্থানে হাত দিয়ে চুলকাচ্ছিলেন। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা উত্তর সিটির একাধিক কর্মকর্তা।
বুধবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় রাজউক উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পের ২ নম্বর সেতুসংলগ্ন এলাকায় খালের পাড়ে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাজউকের আওতাধীন একটি খালের (লেক) কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সেখানে প্রচুর মশার প্রজনন হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা।
মশার কামড় নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে একজন সাংবাদিক মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, 'আজকে আপনি নিজেই দেখতে পাচ্ছেন, মশার কী অবস্থা, আপনারাই বসতে পারছেন না। চিন্তা করে দেখেন, মশা নিয়ে ঢাকার মানুষ কত দুর্ভোগের মধ্যে আছে। মশাকে কী আপনার
কাছে চ্যালেঞ্জ মনে হয় না?'
জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা সবাই এডিস নিয়ে বেশি আতঙ্কিত। কারণ, এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা মারা যান। সে ক্ষেত্রে বছরের প্রথম থেকে এ নিয়ে বলেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই বিষয়টি নিয়ে তিনি সতর্ক।'
মন্ত্রী আরও বলেন, সিটি করপোরেশন মশা নিধনের চেষ্টা করবে জনগণের সহযোগিতা নিয়ে। নিধন যতটুকু করতে পারবে করবে। এরপরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এত বিস্তীর্ণ এলাকা মশা প্রজননের জন্য আছে, সেখানে সব জায়গায় তো ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। খালের মধ্যে তো মশা মারা যাচ্ছে না। আমাদের বাস্তবমুখী হতে হবে। মানুষসহ কাজ না করলে, কোথাও কোনো সরকার রাষ্ট্র সফল হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'এডিস মশার জন্য যার যার ঘর, অফিস-আদালত তাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমার কাছে কিন্তু অসম্ভব, কারও বাড়ির ছাদে পানি জমে আছে কিনা, তা দেখা। এটি এডিস মশার জন্য সবাইকে সামাজিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন হট স্পটগুলোয় চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এডিস মশা থেকে বাঁচার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাড়ায়, মসজিদে, মন্দিরে, চার্চে আলাপ করতে হবে, যার যার এলাকা পরিষ্কার করা জন্য।'
মেয়র আরও বলেন, 'গুলশান-বারিধারার মতো লেকে মশার জন্ম হচ্ছে। শুধু সিটি করপোরেশন একলার জন্য অসম্ভব ব্যাপার। সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। যে খালে আজকে কাজ করা হচ্ছে, সেটি রাজউক ও ওয়াসার খাল। অনেকবার খালটিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে দিতে বলেছি। রাজউককে বলেছি, ওয়াসাকে বলেছি, কিন্তু কেউ পরিষ্কারে এগিয়ে আসেনি। নিজেদের মধ্যে এমন চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। যত দিন লাগে সিটি করপোরেশন এই খাল পরিষ্কার করে দেবে।'
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞাসহ ঢাকা উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।