বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতে সিরিজে ১-১ সমতা ফেরায় শ্রীলংকা। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি জিততে পারলে শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নজির গড়বে

বাংলাদেশ। এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া

করতে নারাজ স্বাগতিক দল।

এদিকে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে বাংলাদেশ অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ বলেন, 'আমরা সিরিজ জয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যেমনটি আমরা সবসময় বলে আসছি, আমাদের দল হিসেবে খেলতে হবে এবং যখন আমরা একটি দল হিসেবে খেলি, আমাদের যে কোনো ম্যাচে জয়ের সুযোগ অনেকখানি বেড়ে যায়।'

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে রানের খাতা খুলতে না পারায় তৃতীয় ওয়ানডে থেকে তারকা ব্যাটার লিটন দাসকে বাদ দেওয়ার মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। লিটনের পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটার জাকের আলি অনিক। অর্থাৎ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের জন্য ভিন্ন-ভিন্ন বিকল্প নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

লিটনের জায়গায় অন্য একজন ওপেনার বা অধিনায়ক শান্তকে ইনিংসের শুরুতে পাঠিয়ে মিডল অর্ডারে জাকেরকে খেলানোর বিকল্প আছে বাংলাদেশের।

লিটনকে নিয়ে মিরাজ বলেন, 'জাতীয় দলে অটো চয়েস বলে কিছু নেই। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসানদের ন্যায় দলে জায়গা পাকা করতে সবসময়ই পারফর্ম করতে হবে। অতীতে অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন লিটন। বাংলাদেশের হয়ে বেশ কিছু স্মরণীয় ইনিংস আছে তার। এই মুহূর্তে ফর্মহীনতায় ভুগছে সে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, খুব দ্রম্নতই দলে ফিরবে সে।'

যেহেতু তৃতীয় ওয়ানডে সকালে শুরু হবে সেহেতু এ ম্যাচে শিশির খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। এজন্য অনেক কিছুই পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। শেষ দুই ম্যাচে প্রথম ব্যাট করা দলের হারের পেছনে বড় প্রভাব ফেলেছে শিশির। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে শেষ ম্যাচ খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। তার পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন আরেক পেসার হাসান মাহমুদ।

প্রথম দুই ম্যাচে আশানুরূপ পারফরমেন্স করতে না পারায় বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের জায়গায় শেষ ম্যাচের একাদশে সুযোগ পেতে পারেন ডান-হাতি লেগ-স্পিনার রিশাদ হোসেন। লেগ-স্পিন ছাড়াও ডেথ ওভারে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারদর্শী রিশাদ।

রিশাদের ব্যাপারে মিরাজ বলেন, 'অনেক দিন ধরেই একজন লেগ স্পিন অলরাউন্ডার খুঁজছিল বাংলাদেশ দল। রিশাদের মধ্যে ওমন দক্ষতা আছে। আমি বিশ্বাস করি, এখনো অনেক কিছু দেওয়ার এবং অনেক কিছু শেখার আছে তার।'

হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে বাংলাদেশ সফরের বাকি অংশ থেকে পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা ছিটকে পড়ায় চিন্তিত শ্রীলংকা শিবির। মাদুশঙ্কার অনুপস্থিতি স্বস্তি দিবে বাংলাদেশকে। কারণ নতুন বলে দু'দিকে সুইং করানো মাদুশঙ্কার ডেলিভারি সামলাতে হিমশিত খেতে হচ্ছে টাইগার ব্যাটারদের।

মেহেদী হাসান মিরাজ বল হাতে যখন বল করেন তখন তার রিভিউ নেওয়ার প্রবণতা একটু বেশিই দেখা যায়। গেল বিশ্বকাপে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও চাপ দিয়ে রিভিউ নিতে দেখা যায় মিরাজকে। তবে বেশিরভাগ সময় ব্যর্থ হতে হয় রিভিউ সিদ্ধান্তে। এই নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি।

এবার জাতীয় দলের নতুন অধিনায়ক হয়েছেন মিরাজের ছোট বেলার বন্ধু নাজমুল হোসেন শান্ত। বয়সভিত্তিক দল থেকেই তারা খেলছেন একসঙ্গে। যে কারণে বোঝাপোড়াও ভালো দুজনের। নতুন অধিনায়কের সঙ্গে রিভিউ সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা আরও কৌশলী হওয়ারই কথা মিরাজের।

শ্রীলংকার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডের আগে রোববার চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো সেই রিভিউ প্রসঙ্গ। মিরাজ তার বোলিংয়ের ক্ষেত্রে রিভিউ নেওয়া নিয়ে অধিনায়ক শান্তকে বেশি প্রেশার দেন কিনা এমন প্রশ্ন সরাসরি করেছেন এক সাংবাদিক।

এমন প্রশ্নের জবাবে মিরাজের মুখে দেখা যায় চওড়া হাসি। এরপর বলছিলেন, 'প্রেশার না, আমি চেষ্টা করি ওকে ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য। শুধু আমি একার না, সবাই দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ও আমার কথা একটু বেশি শুনে।'

এর আগে অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে মিরাজ বলেন, 'ওকে হেল্প করার জন্যে সবাই আছে, আমরা সবাই তাকে হেল্প করছি। মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাই, লিটনদা সবাই অনেক সাপোর্ট করছে। আমার সঙ্গে যখন আলোচনা হয় আমার বোলিং নিয়ে কথা বলি, কীভাবে করলে ভালো হয়। ফিল্ড সেটাপ নিয়ে কথা বলি। সবার সঙ্গেই কথা বলে, এই জিনিসটা ভালো।'

প্রসঙ্গত, শেষ আট ম্যাচে মুখোমুখি লড়াইয়ে সমান চারবার করে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা। এর মানে, তৃতীয় ম্যাচে কোনো দলই ফেভারিট নয়। সবমিলিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৬ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে জয় ও ৪৩টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ২টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে