বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে গুণগতমান রক্ষা হয়নি

এনডিআই-আইআরআই'র চূড়ান্ত প্রতিবেদন
যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে গুণগতমান রক্ষা হয়নি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে গুণগতমান রক্ষা করা হয়নি বলে নিজেদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উলেস্নখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। তাদের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সব পক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

শনিবার এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, 'জানুয়ারির নির্বাচনের গুণগতমান ক্ষুণ্ন হয়েছে যেসব ঘটনার কারণে তা হলো রাষ্ট্র, শাসক দল ও বিরোধীদের সহিংসতা। সেই সঙ্গে নির্বাচনের আগের পরিবেশ দ্বারা চিহ্নিত করা হয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক স্বাধীনতার সংকোচন এবং বাকস্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার অবনতি।'

আইআরআই এবং এনডিআই হলো নির্দলীয় ও বেসরকারি দুটি সংস্থা। তারা বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনকে সমর্থন ও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে কাজ করে। গত ৩০ বছরে ৫০টিরও বেশি দেশে সম্মিলিতভাবে ২০০টিরও বেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে তারা। নির্বাচনের সময় আইআরআই ও এনডিআইর যৌথ প্রতিনিধি দলের পাঁচজন সদস্য বাংলাদেশ সফর করেন। এদেশে অবস্থানকালে তারা নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তাকর্মী, রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

মার্কিন এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। তারা বলছে, ভবিষ্যতে নির্বাচনে সহিংসতার ঝুঁকি প্রশমন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং নিজেদের তুলনামূলক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারের নির্বাহী ও আইন বিভাগ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্য অংশীজনদের কাছে সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নির্বাচনী সহিংসতা

নির্বাচনের আগে ও পরে সম্ভাব্য নির্বাচনী সহিংসতা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ওই টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশনকে (টিএএম) বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে সহিংসতা না হওয়ায় কিছুটা অবাক হয়েছিল ওই টিম। এ কারণে তাদের প্রতিবেদন প্রদানে প্রায় এক মাস দেরি হয়। ধারণা করা হয়েছিল নির্বাচনের ছয় সপ্তাহের মধ্যে তারা তাদের প্রতিবেদন দেবে।

নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে রিপোর্টে উলেস্নখ করা হয়, মিশন সদস্যরা অবগত হয়েছেন যে ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময়কাল, প্রচারের সময়কাল, নির্বাচনের দিনসহ অন্য সময়ে, পূর্ববর্তী নির্বাচন চক্রের তুলনায় প্রত্যক্ষ ও অনলাইন সহিংসতা কম হয়েছে। এটি হয়েছে প্রাথমিকভাবে দেশব্যাপী কার্যকর নির্বাচনী প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতির কারণে এবং দেশের নিরাপত্তায় সরকারের বাড়তি নজর দেওয়ায়।

অহিংস রাজনীতি

বাংলাদেশের নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সব পক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া সুপারিশ করেছে মার্কিন এই দুই প্রতিষ্ঠান।

আইআরআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জোহানা কাও বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি প্রধান প্রতিবন্ধক। বাংলাদেশের নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সব পক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এনডিআইর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ বলেন, এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতে আরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি মূল্যবান রোডম্যাপ হিসেবে অবদান রাখবে। অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, সরকার ও নাগরিক সমাজসহ সামাজিক-রাজনৈতিক পরিমন্ডলজুড়ে নেতাদের নির্বাচনী রাজনীতির নিয়ম, অনুশীলন ও নিয়মগুলোর সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে