নাবিকসহ জিম্মি ২৩

ভারত মহাসাগরে জলদসু্যদের কবলে বাংলাদেশি জাহাজ

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত মহাসাগরে সোমারিয়ার জলদসু্যদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি আবদুলস্নাহ। মঙ্গলবার দুপুরে জাহাজটি জলদসু্যদের কবলে পড়েছে বলে জানতে পারে জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রম্নপ। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, 'জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদসু্যদের কবলে পড়ে। জাহাজের ২৩ জন নাবিক নিরাপদে আছেন।' তিনি জানান, জাহাজে থাকা নাবিক ও ক্রুরা হলেন-জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উলস্নাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনি ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিসিয়ান ইব্রাহীম খলিল উলস্নাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ। এদিকে জাহাজটিতে থাকা এক ইলেকট্রেশিয়ান জানান, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুলস্নাহকে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাচ্ছে জলদসু্যরা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে তারা। এরপর থেকেই জাহাজে অবস্থানরত নাবিকদের ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরমধ্যে একজন লুকিয়ে রাখা মোবাইলে বলেন, 'আমাদের জাহাজ সোমালিয়ার দিকে যাচ্ছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ৬০০ নটিক্যাল মাইল যেতে তিনদিন লাগবে। সেখানে জলদসু্যদের প্রধানরা আসবে।' এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিকালে পরিবারকে পাঠানো ভয়েস মেসেজে একজন বলেন, 'আমাদের জন্য দোয়া করিও। সোমালিয়ার জলদসু্যরা অ্যাটাক করেছে। অলরেডি আমরা অ্যারেস্টেড। আমাদের এক জায়গায় বন্দি করে রাখছে। মনে হচ্ছে নিয়ে যাবে আমাদের। ওরা বোট উঠিয়ে ফেলছে অলরেডি।' এর আগে জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল এমন একটি সূত্র জানিয়েছিল, জাহাজে আনুমানিক ৫০ জন সশস্ত্র জলদসু্য অবস্থান করছে। বৈশ্বিক জাহাজের অবস্থান নির্ণয়কারী সাইট মেরিন ট্রাফিক জানিয়েছে, বাংলাদেশি জাহাজটি একটি বাল্ক কেরিয়ার। এর দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রশস্থতা ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। জাহাজটি ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর ছেড়ে আসে। ১৯ মার্চ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল 'গোল্ডেন হক'। বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রম্নপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় 'এমভি আবদুলস্নাহ'। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, জাহাজটি জলদসু্যদের কবলে পড়ার কথা শুনেছি। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাইনি। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। ১৪ বছর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদসু্যদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ 'জাহান মণি'। নিকেলভর্তি ওই জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়েছিল।