অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব ফায়ার সার্ভিসের বৈঠক

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে নোটিশ ঝুঁলিয়ে দেওয়া, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক অভিযান পরিচালনাসহ নানা বিষয়ে মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বুধবার বেলা ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে 'অগ্নি দুর্ঘটনা, বর্তমান পরিস্থিতির গভীরতা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স' এর করণীয় বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত জানান। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। বৈঠকের মূল আলোচক ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাঈম মো. শাহিদউলস্নাহ বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারে, এজন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইনগত অসামঞ্জস্য বা বিরোধ দ্রম্নত সমন্বয় করা প্রয়োজন। বৈঠকে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বলেন, শহরকেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন নির্মাণসহ ফায়ার সার্ভিসকে দুর্ঘটনার ধরনভেদে স্পেশাল টিম তৈরি করতে হবে। এছাড়া রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ), সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তথ্যের দ্রম্নত আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করা উচিত। অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফায়ার কোড তৈরি করার পরামর্শও দেন তিনি। স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব বলেন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে হবে। চিহ্নিত ভবনের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করা উচিত। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সামনে নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া জরুরি। যাতে করে সবাই ভবনটি সম্পর্কে জানতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জিলস্নুর রহমান বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হাইড্রেন্ট লাইন বসানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ফায়ার সার্ভিসের স্থগিত বিধিমালা দ্রম্নত কার্যকর করতে হবে। ভবনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটিতে ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (পূর কৌশল) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিয়ে যদি অকুপেন্সি পরিবর্তন করে তাহলে তা ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে হবে এমন বিধান তৈরি করতে হবে। এছাড়া বিএনবিসির কিছু ধারা যুগোপযোগী করা উচিত। অগ্নিনির্বাপণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে শহরের জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে। ইলেকট্রনিক সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অব বাংলাদেশের (ইসাব) সভাপতি মো. নিয়াজ উদ্দিন চিশতি বলেন, শুধু অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম কিনে প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করলে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে না। অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম মানসম্মত কিনা তা যাচাই করতে হবে, যেন তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বৈঠকে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন।