বিএনপির সমাবেশের দিনের নাশকতার মামলায় স্বামীর পরিবর্তে গ্রেপ্তার করা স্ত্রীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট, যার জামিনের শুনানিতে কয়েকদিন ধরে আদালতে উপস্থিত হচ্ছিল তাদের দুই শিশুকন্যা। একজন হচ্ছে চার বছর বয়সি নূরজাহান ও অপরজন সাত বছর বয়সি আকলিমা।
বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের বেঞ্চ বুধবার এ জামিন আদেশ দেন।
এ দম্পতির সাত বছর ও চার বছর বয়সি দুই মেয়ে এ সময় দাদি ও আরেক স্বজনের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিল।
গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন হয়। সেদিন তাদের দুই বোনের পাশাপাশি আরও কয়েকজন
শিশু ছিল সেখানে। 'রাজবন্দিদের স্বজন' ব্যানারে ওই মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
এ দুই শিশুর বাবা আবদুল হামিদ ভূঁইয়া বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দুই শিশুর দাদা আবদুল হাই ভূঁইয়া ওইদিন মানববন্ধনে অভিযোগ করেন, তার বড় ছেলে হামিদকে পুলিশ খুঁজছে। তাকে না পেয়ে ছেলের স্ত্রী হাফসাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। অথচ হাফসা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।
গ্রেপ্তারের পর গত বছরের ২৭ নভেম্বর থেকে কারাগারে আছেন হাফসা আক্তার। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে গত ২৫ ফেব্রম্নয়ারি বিফল হন হাফসা আক্তার। এরপর জামিন চেয়ে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন।
তার পক্ষে জামিন আবেদন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
শুনানির সময় জ্যেষ্ঠ বিচারক ডেপুটি অ্যটর্নি জেনারেলকে জিজ্ঞাসা করেন, স্বামীর অপরাধের জন্য স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা যায় কিনা। এরপর জামিন আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, 'গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন মামলায় সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিচ্ছে। এসব মামলায় অনেককে না পেয়ে তাদের ভাই, বাবা বা স্ত্রীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখানেও হামিদকে না পেয়ে হাফসাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। গত নভেম্বর থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস তিনি কারাগারে রয়েছেন। আজ মহামান্য আদালত তাকে জামিন দেন।'
মায়ের জামিন হওয়ায় দুই মেয়ে খুশি হয়েছে বলে তিনি জানান।