দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব) কাজ করে যাচ্ছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমার প্রশ্ন ছিল যারা আমাদের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, জলদসু্য, বনদসু্যদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা বা মানুষের অধিকার সংরক্ষণে যারা কাজ করেছে তাদের ওপর কীভাবে নিষেধাজ্ঞা আসে? তাদের অপরাধটা কী? আর কেউ যদি অপরাধ করে তাহলে তো সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সে যে সংস্থার লোকই হোক তাকে আমরা আইনের আওতায় এনে তার বিচার করি এবং করছি। ভবিষ্যতেও বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যার যার কর্তব্য পালন যথাযথভাবে করছে কি-না সেটা দেখার দরকার। কিন্তু আমাদের দেশের সংস্থা তারা দেশের মানুষের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য যখন কোনো অপরাধী শনাক্ত করবে বা ধরবে বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সেক্ষেত্রে আর একটি দেশ এসে নিষেধাজ্ঞা দেবে, এটা আমাদের কাছে কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। তাই হতাশ হলে চলবে না, আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে। নিষেধাজ্ঞা একতরফা হয় না, আমরাও দিতে পারি।'
বুধবার কুর্মিটোলায়র্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব) সদর দপ্তরে সংস্থাটির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সব সময় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান রাখবে।র্ যাব এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধের্ যাবের জোরালো অভিযান কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'সরকারে এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদে জিরো
টলারেন্সের। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনের্ যাব বড় ভূমিক পালন করেছে। দেশে একটি ঘটনা ছাড়া আর কোনো বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি।'
তিনি বলেন, 'বিরোধী দলও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত হয়ে চলন্ত বাসে আগুন, পুলিশ পিটিয়ে হত্যা, হাসপাতালে আগুন দিয়েছে। এগুলো মোকাবিলা করে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রেওর্ যাবের ভূমিকা রয়েছে। ২৮ অক্টোবরের জ্বালাও পোড়াও করার পরও বিরোধী দল তাদের দায় অন্যের ওপর চালাতে চেষ্টা করেছিল; কিন্তু পারেনি।'
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে হবে। শুধু মাদকসেবী নয়, যারা মাদক কারবারে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।'
আসন্ন রোজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'রমজান মাস সংযমের। কিন্তু এই মাসে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সংযমের বদলে লোভী হয়ে ওঠে। পণ্য মজুত করে মূল্য বৃদ্ধিতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।'
জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ঈদ সামনে এলে জাল মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়। সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে। যদিও অভিযান চলছে, তারপরও এদিকে আরও খেয়াল রাখতে হবে। অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।'
সুন্দরবন জলদসু্যমুক্ত করার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, 'জলদসু্যরা যেন আবারও বিপথে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাদের জীবনের প্রয়োজনে যা দরকার সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের জীবিকার পথ আরও ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।'
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্য সব বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ হয়েছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পেরেছে। কিন্তু যারা চায়নি নির্বাচন হোক, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক, শুধু তারা এই নির্বাচনে খুশি হতে পারেনি। কিন্তু মানুষ খুশি হয়েছে। এই নির্বাচনকে অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছে।
র্
যাবের ডিজি পদক প্রবর্তনের ঘোষণা
দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনায় পুলিশ পদকের পাশাপাশির্ যাব মহাপরিচালক পদকও সরকার প্রবর্তন করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, র্'যাব মহাপরিচালক পদক প্রণয়নের মাধ্যমে এই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আরও উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার সৃষ্টি হবে।র্ যাবের কাজের আকাঙ্ক্ষা আরও বাড়বে বলেই আমি মনে করি।'
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেইর্ যাবসহ প্রতিটি সংস্থা ও বাহিনীকেই তার সরকার অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিচ্ছে উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'তাদের যা যা প্রয়োজন আমরা করেছি এবংর্ যাবকে ইতোমধ্যে ১৫টি ব্যাটালিয়নসমৃদ্ধ চৌকস ত্রিমাত্রিক সংস্থা হিসেবেই আমরা গড়ে তুলেছি। কারণ, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি এবং দেশের মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা এনে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।'
র্
যাবের অভিযান পরিচালনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর গুরুত্বারোপ করে তিনি এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'প্রতিনিয়ত এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, যাতে সকলের অভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দ্রম্নত যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা যা প্রয়োজন সেটা সবসময় সরকার করে যাবে।' হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে আশকোনা হজ ক্যাম্পের পাশের্ যাবের নতুন সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রীর্ যাব সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, 'বাংলাদেশ আমার অহংকার' এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও এই বাহিনীর সদস্যরা আরও দায়িত্বশীল কার্যক্রম ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে- সেটাই আমরা আশা করি।' প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল নাগাদ 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের 'উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।