আকস্মিক অভিযানে বিপত্তির পাহাড়!
ঢাকার হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ধস বেশির ভাগ রেস্টুরেন্টই বন্ধ বিপাকে হোটেলের খাবার নির্ভর মানুষ কর্মহীন লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী
প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সাখাওয়াত হোসেন
স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে রেস্টুরেন্টের খাবারের ওপর নির্ভরশীল ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান। ধানমন্ডির বাসার কাছের একটি রেস্তোরাঁ থেকে সকালের নাশতা ও রাতের খাবার খেতেন। দুপুরের খাবার আনতেন কর্মস্থলের পাশের একটি হোটেল থেকে। তবে সোমবার থেকে আকস্মিক সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের সাঁড়াশি অভিযানে ধরপাকড়, জরিমানা ও প্রতিষ্ঠান সিলগালাকরণ কার্যক্রম বেগবান হওয়ায় রেস্তোরাঁগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীর ছোট-বড়-মাঝারি বেশির ভাগ রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ব্যাংক কর্মকর্তা মেহেদী হাসানকে পাউরুটি কলা খেয়েই জীবন ধারণ করতে হচ্ছে।
শুধু মেহেদী হাসানই নন, তার মতো রেস্টুরেন্টের খাবারের ওপর নির্ভরশীল ঢাকার লাখ লাখ শ্রমজীবী ও পেশাজীবী মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। এ ধরনের অভিযান চলমান থাকলে সামনে আর কতদিন তাদের এ ভোগান্তি পোহাতে হবে এ দুশ্চিন্তায় তারা অস্থির হয়ে উঠেছেন। বিকল্প কোন পথে আহারের সংস্থান করা যায় সে পথ খুঁজছেন।
এদিকে আকস্মিক অভিযানের মুখে রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকার অন্তত ৫ লাখ বয়-বেয়ারা, ওয়েটার, সেফ ও বিভিন্ন পর্যায়ের হোটেল কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকলে তারা বেতন পাবেন কিনা- তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিশেষ করে হোটেল-রেস্তোরাঁর বয়-বেয়ারা যারা কাস্টমারের টিপসের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল তারা এখন সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।
অন্যদিকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও ব্যাংক থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে রেস্তোরাঁ পরিচালনাকারীদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তাদের ভাষ্য, উচ্চমূল্যের এ বাজারে হোটেল-রেস্টুরেন্ট চালু রেখেই ঋণের সুদ ও অন্যান্য খরচ
তোলা দায়। এর ওপর অভিযান আতঙ্কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক-দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকলেই তাদের বিপত্তি চরমে পৌঁছবে। বেগতিক পরিস্থিতিতে অনেককে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়াও লাগতে পারে।
রাজধানীর খিলগাঁও, বেইলি রোড, ধানমন্ডি ও উত্তরা এলাকার একাধিক রেস্তোরাঁ মালিক জানান, ব্যবসা শুরুর আগে তারা হোটেল-রেস্টুরেন্ট চালুর প্রায় কোনো নিয়মই জানতেন না। চলমান অভিযানে যেসব ইসু্যতে জেল-জরিমানা এবং রেস্তোরাঁ সিলগালা করা হচ্ছে এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো কখনোই তাদের সতর্ক করেনি। এমনকি এ বিষয়ে তাদের অবহিতও করা হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তা ছিল তাদের কাছে অজানা।
এদিকে এক বা একাধিক রেস্টুরেন্ট গড়ে ওঠা বেশিরভাগ ভবনের মালিকরাও রেস্তোরাঁর ব্যবসার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অজ্ঞ। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সি বস্নকের যে বহুতল ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, সিরাজ চুই গোস্ত ও সেলো রেস্টুরেন্টটি গড়ে উঠেছে- ওই ভবনের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার ভবনটি বাণিজ্যিক হিসেবে অনুমোদিত। কিন্তু তা এফ-ওয়ান ক্যাটাগরি নাকি এফ-টু ক্যাটাগরির তা তিনি জানেন না। তবে অভিযান শুরুর পর তিনি জানতে পেরেছেন এফ-ওয়ান ক্যাটাগরির ভবনে বাণিজ্যিক অফিস করা যাবে। এফ-টু ক্যাটাগরির বাণিজ্যিক ভবন ছাড়া সেখানে হোটেল রেস্টুরেন্ট করার নিয়ম নেই। জাহাঙ্গীর হোসেনের দাবি, তিনটি রেস্টুরেন্ট ভাড়া দেওয়ার আগে এ ব্যাপারে কেউ তাকে অবহিত করেননি। বা তাকে কোনো ধরনের নোটিশও পাঠানো হয়নি। আকস্মিক অভিযানে এসব রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।
ভবন ও রেস্তোরাঁ মালিকদের দাবি, ব্যবসা চালু করার আগে এ ব্যাপারে তাদের সতর্ক করা হলে কেউই এ ধরনের ঝুঁকি নিতেন না। আকস্মিক অভিযান চালিয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় এ ধরনের ধস না নামিয়ে তাদের অনিয়মগুলো চিহ্নিত করে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত। যাতে তারা তাদের ভুল-ত্রম্নটি সংশোধনের সুযোগ পান।
ধানমন্ডির রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, 'আমরা নিজেরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যবসা চালাতে চাই না। এছাড়া রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালু রাখতে যে সব নিয়ম-কানুন ও শর্ত মেনে চলা উচিত, তা-ও যথাযথভাবে পালন করতে চাই। কিন্তু আকস্মিক এভাবে অভিযান চালিয়ে রেস্তোরাঁ খাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করে লাখ লাখ মালিক-কর্মচারীকে মহা বিপত্তির মধ্যে ফেলা হলে তাতে হিতেবিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আমজাদ হোসেনের মতো অধিকাংশ রেস্তোরাঁ মালিক একই ধরনের অনুরোধ জানিয়ে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। তাদের ভাষ্য, হোটেল মালিকরা অনেকেই তাদের সারা জীবনের অর্জিত অর্থ দিয়ে ব্যবসা চালু করেছেন। সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও রাজউক এতদিন কাউকে কিছু বলেনি। তবে তারা তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের অনৈতিক সুযোগ নিয়েছেন। কিন্তু বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৪৬ জনের মৃতু্যর পর সবাই যেন একসঙ্গে ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। তারা যে যার মতো তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছে। কোনো ধরনের সতর্কতা জারি না করে এ ধরনের অভিযান চালানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন রেস্তোরাঁ মালিক আমজাদ হোসেন।
এদিকে এ ধরনের আকস্মিক অভিযানে নেমে রেস্তোরাঁ পাড়ায় আতঙ্ক সৃষ্টির বিপক্ষে মত দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা অনেকেই। তাদের ভাষ্য, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ বাণিজ্য পরিচালনার জন্য রেস্তোরাঁ এবং ভবন মালিকরা যেমন দায়ী, তেমনি রাজউক, সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনগুলোর নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তারাও সমান অপরাধী। দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য সবার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁগুলো নিরাপদভাবে গড়ে তোলা সুযোগ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা।
এদিকে রাজউকসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ আকস্মিক সাঁড়াশি অভিযানে তৎপর হয়ে উঠলেও তাদের অনিয়ম ও গাফিলতির শত শত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। জানা গেছে, রাজধানীর অধিকাংশ হোটেল-রেস্টুরেন্ট অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে ওঠার তথ্য তাদের কাছে শুরু থেকেই ছিল। তবে তারা এসব কাজে বাধা না দিয়ে বিভিন্ন সময় নোটিশ পাঠিয়ে দায় সেরেছে। ভয় দেখিয়ে উৎকোচ আদায় করেছে এবং তা দিতে না চাইলে জরিমানা করা হয়েছে। তবে পরে রেস্তোরাঁ মালিকদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে জরিমানা দেওয়ার পরও এসব রেস্তোরাঁ অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণই রয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকান্ড নিয়ে এখন দেশজুড়ে হইচই শুরু করা হলেও নকশা বহির্ভূতভাবে ভবনের আয়তন বাড়ানোর অভিযোগে এর আগেও সেখানে অভিযান চালিয়েছিল রাজউক। ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ভ্রাম্যমাণ আদালতের চালানো সেই অভিযানে ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ভবনটির নিচতলার বেজমেন্টের অবৈধ অংশে উচ্ছেদ এবং ভবনটির নকশা বহির্ভূত অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কী কাজে ভবনটি ব্যবহার করা হবে সে সংক্রান্ত সনদ না নেয়ার কারণে নোটিশ দিয়েছিল রাজউক। কিন্তু অদৃশ্য কারণে গত ৫ বছরে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের 'প্রশ্রয়' হিসেবেই ধরে নেওয়া যায়।
রাজউকের নথি বলছে, ২০১১ সালে আটতলা ভবনটি রাজউকের অনুমোদন পায়। নিচতলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক ও বাকি তিনতলা পর্যন্ত আবাসিক বা রাজউকের ভাষায় মিশ্র হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে ভবনটির কাজ শেষ হওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যবহারের ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হলেও অকুপেন্সি সনদ নেয়নি ভবন কর্তৃপক্ষ।
অথচ ভবনটিতে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ডজন খানেক রেস্তোরাঁ থাকার পরও ফায়ার সার্ভিস, রাজউক কিংবা সিটি করপোরেশন কেউই গ্রিন কোজি কটেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা রেস্তোরাঁ মালিকদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অদক্ষতা, কর্ম অবহেলা ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
এদিকে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেস্তোরাঁ শিল্পের বিরুদ্ধে 'গভীর ষড়যন্ত্র' চলছে এবং কর্তৃপক্ষের 'ব্যর্থতা ঢাকার জন্য অভিযান' করা হচ্ছে। সংগঠনটি মনে করে, ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা থেকে সরিয়ে পুঁজিপতিরা পুরো খাতের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান। বেইলি রোডে ঘটা দুর্ঘটনার দায় শুধু রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর না চাপিয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সমিতির নেতারা হয়রানি বন্ধ করে সমস্যা সমাধানে আলোচনা করার আহ্বান জানান তারা।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হলে একাধিক সংস্থা থেকে অনুমোদন নিতে হয়। সব রেস্তোরাঁয় কিছু না কিছু সনদ থাকে। কারও কাছে কয়েকটি সনদ থাকলে সেই রেস্তোরাঁ অবৈধভাবে ব্যবসা করছে, তা বলার সুযোগ থাকে না। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে অনুমোদনহীন রেস্তোরাঁ ব্যবসা সম্ভবও নয়। এরপরও যদি কেউ আইনের ব্যত্যয় করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ঢালাওভাবে রেস্তোরাঁ বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত তো হবেন, বেকার হবেন আরও অনেকে। ভবনের মালিকেরা ভাড়া বঞ্চিত হবেন।
বেইলি রোডে নবাবী ভোজ ও সুলতান'স ডাইন সিলগালা : ঢাকার বেইলি রোডের বিভিন্ন আবাসিক ভবনে গড়ে তোলা রেস্তোরাঁয় মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় নবাবী ভোজ ও সুলতান'স ডাইন নামে দু'টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেয় সংস্থাটি। নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁটি বেইলি রোডের একিউআই শপিং মলের বেইজমেন্টে অবস্থিত। অভিযানের সময় রেস্তোরাঁর কেউ ছিলেন না।
অপরদিকে সুলতান'স ডাইনের বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, রেস্তোরাঁটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তারা দাবি করেছেন, তাদের সব কাগজপত্র আছে। তাই আপাতত রেস্তোরাঁটি সিলগালা করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সময় বেইলি রোডের ক্যাপটাল সিরাজ সেন্টার নামের একটি ভবনের অগ্নিসুরক্ষার ছাড়পত্র হালনাগাদ না করায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মোহাম্মদপুরে অভিযানে আটক ৩৫: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁয় অনিরাপদ সিলিন্ডার ব্যবহারের কারণে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। এ সময় রেস্টুরেন্টের মালিক ও ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, রিং রোড, তাজমহল রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
খিলগাঁওয়ে ভবন সিলগালা, অভিযানের খবরে রেস্তোরাঁ বন্ধ :'অগ্নিঝুঁকিতে' থাকা রাজধানীর খিলগাঁওয়ে 'নাইটিঙ্গেল স্কাইভিউ' নামে একটি বহুতল ভবন বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ওই ভবনের একটি তলা বাদে সবক'টিতে রেস্তোরাঁ খোলা হয়েছে। এমনকি ভবনের বেজমেস্ট, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা এবং ছাদও বাদ যায়নি। ভবনটিতে কোনো 'ফায়ার এক্সিট' না থাকায় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া 'সম্ভব হবে না' বলে মনে করছে সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকার 'কাচ্চি ভাই' ও 'সিরাজ চুঁইগোস্ত' নামে দুটি রেস্তোরাঁয় যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু তালা দেওয়া ওই দুই খাবারের দোকানের গেটে 'রেস্টুরেন্টের উন্নয়ন কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ' ব্যানার ঝুলছিল। তাই সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে পারেননি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অভিযানের খবর পেয়ে এ দিন বেইলি রোডের মতো খিলগাঁওয়ের ওই সড়কের বেশির ভাগ রেস্তোরাঁই বন্ধ পাওয়া যায়। ঘুরে দেখা গেছে, চায়না ল্যান্ড, আপন কফি হাউজ, সাব লাভার্স, সুলতান, হট কেক, হার্ফি, গোল্ডেন চিকসহ আরও অনেক রেস্তোরাঁয় তালা ঝুলছে।