বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় পুলিশের মামলা

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় পুলিশের মামলা

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকান্ডে প্রায় অর্ধশত প্রাণহানির ঘটনায় রমনা থানায় মামলা হয়েছে।

অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে শুক্রবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করেছে বলে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু আনসার জানান।

তিনি বলেন, 'নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না আসায় পুলিশই বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছে। তাদের (নিহতদের পরিবার) পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে।'

পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মোহাম্মদ আখতারুল

ইসলাম বলেন, মামলায় চারজনের নাম উলেস্নখ করে সন্দেহের তালিকায় আরও ২৩ জনকে রাখা হয়েছে।

যাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তারা হলেন- ভবনটির নিচতলার চা-কফির দোকান 'চুমুক'র দুই মালিক আনোয়ারুল হক (২৭) ও শফিকুর রহমান রিমন (২০), বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ 'কাচ্চি ভাই'র বেইলি রোড শাখার কর্মকর্তা জয়নুদ্দিন জিসান (৩০) এবং ভবনটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা মুন্সী হামিমুল হক বিপুল।

চারজনের মধ্যে আনোয়ারুল, শফিকুর এবং জয়নুদ্দিনকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন।

আর হামিমুলকে শনিবার ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম মোহাম্মদ আখতারুল ইসলাম বলেন, 'আমিন মোহাম্মদ গ্রম্নপের পক্ষে ভবনটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন হামিমুল। এই ভবনটি আমিন মোহাম্মদ গ্রম্নপ নির্মাণ করেছে।'

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে লাগা আগুনের সূত্রপাত নিচতলার 'চুমুক' নামে চা-কফির দোকান থেকে। স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া একটি ভিডিওকে তদন্তের বড় আলামত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনে নিচতলায় আগুন লেগেছে, আর তা নেভানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।

ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ অফিসার শাহজাহান শিকদার বলেন, 'একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। আগুনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে এটি পাওয়া যায়। এটি স্থানীয় লোকজন আমাদের দিয়েছে। আমাদের করা ভিডিও না।

'এটি একটি সূত্র, তবে চূড়ান্ত নয়। তদন্তের সময় অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হবে, আরও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারপরই বলা যাবে প্রকৃত ঘটনা।'

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় বেইলি রোডের ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃতু্যর খবর মিলেছে। আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন ভর্তি আছেন।

ভবনের ম্যানেজার আটক

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ম্যানেজার পিপুলকে আটক করেছে রমনা থানা পুলিশ।

শনিবার দুপুরে তাকে আটক করা হয়।

আটকের পর ম্যানেজারকে ভবনের বিভিন্ন ত্রম্নটির বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তাকে আগে আটক করা হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে শুক্রবার (১ মার্চ) অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ভবনটিতে থাকা চায়ের চুমুক নামে একটি খাবার দোকানের দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান এবং কাচ্চি ভাই নামে আরেকটি খাবারের দোকানের ব্যবস্থাপক জয়নুদ্দিন জিসানকে আটক করে পুলিশ।

৪৩ জনের লাশ বুঝে পেলেন স্বজনরা

রাজধানী বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকান্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে থেকে এ পর্যন্ত ৪৩ জনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার দুপুর ১টায় ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, বাকি তিনটি লাশের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দুটি এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রয়েছে একজনের লাশ।

শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ জনের লাশ হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকালে স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় আরও তিনজনকে।

এখন ঢাকা মেডিকেলে যে দুজনের লাশ আছে, তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। অপরদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে থাকা সাংবাদিক অভিশ্রম্নতি শাস্ত্রীর পরিচয় জটিলতায় তার লাশও হস্তান্তর করেনি কর্তৃপক্ষ।

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ওই তিনজনের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হেদায়েতুল ইসলাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে