রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মতে ৪৬ জনের হৃদয়বিদারক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটায় রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের নির্মম মৃতু্য এবং এখনো হাসপাতালের বিছানায় আগুনে দগ্ধ মানুষের আহাজারি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী।
\হমৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানিয়েছে।
দেশে আইনের শাসন না থাকলে দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় ঘটতেই থাকে উলেস্নখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। ফলে জনসমাজে নৈরাজ্য বিরাজ করে, নানা দুর্ঘটনা ঘটে ও মানুষের প্রাণ ঝরে যায়।
'বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহত ও আহতদের স্বজনদের মতো আমিও গভীরভাবে ব্যথিত ও শোকাভিভূত' বলে উলেস্নখ করেন মির্জা ফখরুল।
মানুষের জীবনের যেন দামই
নেই : জিএম কাদের
এদিকে, রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন ভয়াবহ দুঃসংবাদ মেনে নেওয়া যায় না। মানুষের জীবনের যেন দামই নেই।
শুক্রবার এক শোকবার্তায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, তদন্তে কারও দায় প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারকে যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় একইভাবে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
সরকার এড়াতে পারে
না : নাগরিক ঐক্য
এদিকে, রাজধানীর বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনায় সরকার দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুলস্নাহ কায়সার। এই মর্মান্তিক ঘটনার যথাযথ তদন্ত এবং দুর্ঘটনায় কারণ ও সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেছেন তারা। শুক্রবার এক যৌথ শোক বার্তায় তারা এ কথা বলেন।
দলটির শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, এক মৃতু্যকূপে বসবাস করছি আমরা। নিমতলী ও চুড়িহাট্টার পর বেইলি রোড। আর কত মৃতু্যর পর টনক নড়বে রাষ্ট্রের? কিন্তু সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। বেইলি রোডের যে ভবনে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটেছে সেখানে ছিল না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং একমাত্র সিঁড়ি ছিল গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তি।
কয়েকদিন পরপর জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায়। এই সিলিন্ডারগুলো কি তাদের চোখে পড়ে না? এ রকম একটা কমার্শিয়াল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই, পর্যাপ্ত সিঁড়ি নেই, রাজউক কি তার কোনো খোঁজখবর রেখেছে? সরকারের কাজ কি শুধু পাঁচ বছর পর পর নির্বাচনের সার্কাস সাজিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা?
কয়েকদিন পরপরই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করে নাগরিক ঐক্যের শীর্ষ নেতারা বলেন, কিন্তু সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা কিংবা নূ্যনতম সিলিন্ডার টেস্টিংয়ের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়নি সরকার। কারণ সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসা সরকারের গুটিকয়েক মানুষের হাতে।