কুমিলস্নার হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে দিতে চায় বরিশাল

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আহসান মঞ্জিলে ট্রফির ফটোসেশনে অংশ নেন বিপিএল ফাইনালে ওঠা দুই দলের সহঅধিনায়ক বরিশালের মেহেদি হাসান মিরাজ ও কুমিলস্নার জাকির আলী অনিক -ফোকাস বাংলা
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসরের ফাইনালে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করতে বদ্ধপরিকর ফরচুন বরিশাল। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হওয়া শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশন। পঞ্চমবারের মতো বিপিএলের ফাইনাল খেলবে কুমিলস্না। এর আগে চারটি ফাইনালে খেলে সবগুলোতেই জিতেছে তারা। এমন দুর্দান্ত রেকর্ড ফাইনালের আগে কুমিলস্নাকে মানসিকভাবে চাঙা রাখবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারানোর পেছনে বড় অবদান রাখেন বরিশালের সিনিয়র ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তার দায়িত্বশীল ইনিংস ফাইনালে তুলে বরিশালকে। ফাইনালে কুমিলস্নাকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদী বরিশাল শিবির। মুশফিকুর রহিম বলেন, 'আমি কখনো বিপিএল ট্রফি জিততে পারিনি। যে কারণেই আমি এটি স্পর্শ করতে উদগ্রীব হয়ে আছি। আসলে ট্রফি জয়ের ইচ্ছা সবারই থাকে। আমরা এতদূর এসেছি, অবশ্যই জয়ের জন্য চেষ্টা করব। হ্যাঁ, কুমিলস্না কখনই ফাইনালে হারের স্বাদ পায়নি, কিন্তু কে জানে এবারই হয়তো প্রথম ফাইনাল হারবে তারা।' তৃতীয় আসর থেকে বিপিএলে নিয়মিত খেলছে কুমিলস্না। নিজেদের প্রথম আসরেই মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছিল কুমিলস্না। পরের দুই আসরে বাজে পারফরমেন্স করে কুমিলস্না। কিন্তু ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে আবারও ট্রফি জয়ের স্বাদ পায় দলটি। এরপর 'বঙ্গবন্ধু টি২০' আসরে অংশ নেয়নি কুমিলস্না (কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০, ২০২১ বিপিএল অনুষ্ঠিত হয়নি)। কিন্তু পুনরায় বিপিএল শুরু হওয়ার পর সর্বশেষ দুই আসরের শিরোপা জিতে হ্যাট্টিক ট্রফি জয়ের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে কুমিলস্না। গত দুই মৌসুমে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছিল তারা। এবার কুমিলস্নাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিটন দাস। অধিনায়ক পরিবর্তন হলেও কুমিলস্নার পারফরমেন্সে আগের মতোই ধারাল আছে। এদিকে তিনবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও সবকটিতে হেরেছে বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি। বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে ২০২২ সালে ফাইনালে উঠলেও রোমাঞ্চকর ম্যাচে কুমিলস্নার কাছে মাত্র ১ রানে হেরে যায় বরিশাল। এর আগে ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে ফাইনালে উঠেছিল বরিশাল বার্নার্স নামে দলটি। কিন্তু ফাইনালে ঢাকা গস্ন্যাডিয়েটর্সের কাছে ৮ উইকেটে হারে তারা। এরপর ২০১৫ সালে ফাইনাল উঠলেও কুমিলস্নার কাছে ৩ উইকেটে হেরে শিরোপা জিততে পারেনি বরিশাল বুলস নামে খেলা দলটি। এবার লিগ পর্বে তৃতীয় স্থানে থেকে পেস্ন-অফের টিকিট পায় বরিশাল। পেস্ন-অফে এলিমিনেটর এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে ফাইনালে উঠে দক্ষিণ বাংলার দলটি। মুশফিকুর রহিমের মতে, পেস্ন-অফের দুটি জয় আত্মবিশ্বাস জোগাবে দলকে। তিনি বলেন, 'আমরা বুড়োদের দল এবং অনেক লোক আমাদের বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়ে বলেছে, এমন অভিজ্ঞতায় টি২০ ক্রিকেটে ট্রফি জিততে পারে না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ছিল, আমরা ফাইনাল খেলতে পারব।' মুশফিক আরও বলেন, 'দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার পর আমরা দারুণ পারফরমেন্স দেখিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছি। শেষ একটি ম্যাচ আছে এবং আশা করি আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলব।' এবারের বিপিএলে টেবিলের তলানিতে থেকে আসর শেষ করা দুর্দান্ত ঢাকার কাছে হেরে যাত্রা শুরু করেছিল কুমিলস্না। এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীস্থানে থেকে পেস্ন-অফে উঠে তারা। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে প্রথম সুযোগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিলস্না। হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের সুর্বণ সুযোগ কাজে লাগাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা।