রংপুর-ঢাকা চারলেন মহাসড়ক

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা অগ্রগতিতে বড় বাধা

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে মিঠাপুকুর অংশের ওভারপাস -যাযাদি
রংপুরে চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ ভাগ। কিন্তু জেলার শঠিবাড়ীতে ২২ একর ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শতভাগ অগ্রগতি। এ প্রকল্পের কাজটি টাঙ্গাইল জেলার এলেঙ্গা হাটিকুমরুল থেকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মডার্ন মোড় পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার অংশে চারলেনের কাজ চলছে। এর মধ্যে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক-২) আওতায় রংপুর জেলার পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার রয়েছে। অথচ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সাসেক-২ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত ২৩.৮ কিলোমিটার অংশের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। কিন্তু মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ী বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার অর্থাৎ ২২ একর জমি এখনও অধিগ্রহণ করা হয়নি। জানা গেছে, সেখানকার ভূমি মালিকদের অসহযোগিতার কারণে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাসেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অচিরেই এই জটিলতা কাটিয়ে ওই এলাকায় প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, জায়গিরহাট, মিঠাপুকুর ওভারপাস দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এই দুটি ওভারপাস শতভাগ শেষ হলেও শঠিবাড়ি ও বড়দরগার নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে শঠিবাড়ি অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বড়দরগা রংপুরের দিকে আসার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। পায়রাবন্দ অংশের ৮শ' মিটার কাজ বাকি আছে। এ ছাড়া পায়রাবন্দ ইসলামপুর এলাকায় স্বয়ংক্রিয় টোলপস্নাজার নির্মাণকাজ চলছে। এর সঙ্গে অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। সাসেক-২ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুর মডার্ন মোড় পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়কে ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। জানা যায়, পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত মহাসড়ক প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১৪০ একর। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির ক্ষতিগ্রস্ত ৪ হাজার ৫৯৩ জনকে ৮৫৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জমি, অবকাঠামো ও গাছপালার মূল্য পরিশোধের বিষয়টি রয়েছে। সূত্রমতে, সাসেক-২ রংপুর অংশের দুই পাড়ে মোট সড়কের প্রশস্ত ২৯ মিটারেরও বেশি। এর মধ্যে মূল সড়ক চারলেন রয়েছে ১৮ দশমিক ২ মিটার। ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য স্স্নো-মুভিং ভেহিক্যাল ট্রাফিক এসএম ভিটি লেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সড়কে বড়দরগায় ৫৪ মিটার, শঠিবাড়িতে ৫৪ মিটার, মিঠাপুরে ৬৯ মিটার ও জায়গীরহাটে ৩০ মিটার আন্ডারপাস রয়েছে। এ ছাড়া ২৫ দশমিক ৫ মিটার মডার্ন ব্রিজ ও ৬৭ দশমিক ১৫ মিটার দমদমা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। বৈরাগীগঞ্জ ও পায়রাবন্দে দুটি ইউটার্ন রয়েছে। মিঠাপুরের গড়েরমাথায় সংযোগ সড়ক ( ইন্টারসেকশন) রয়েছে। সড়ক বিভাগের আওতায় সাসেক-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ম্যানেজার-৮ নাশিদ হাসান সিরাজী জানান, হাটিকুমরুল থেকে রংপুরের চারলেন মহাসড়কের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। তথ্য অনুযায়ী, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চারলেন সড়কের কাজ ২০১৯ সালের জুন শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনা, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ ও বন্যার কারণে প্রকল্পের কাজ মন্থর হয়ে পড়ে। এতে এক বছর কাজের অগ্রগতি পিছিয়ে যায়। এজন্য ২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়।