সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
ষড়যন্ত্র ছিল, ষড়যন্ত্র আছে
বাজার কারসাজিতে সরকার উৎখাতের আন্দোলনে জড়িতদের যোগসূত্র রয়েছে হ জেলেনস্কিকে যুদ্ধ বন্ধের কথা বলেছি, পুতিনকে বলব হ বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে
প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
নিত্যপণ্য মজুত করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর সঙ্গে সরকার উৎখাতের আন্দোলনে জড়িতদের যোগসূত্র দেখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনাটি 'নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল' বলেই তিনি মনে করেন।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে শুক্রবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'এগুলো যে হঠাৎ করে করা তা তো না, এটা পরিকল্পিতভাবে।'
প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দেশে মার্চের দিকে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে বলে তিনি নির্বাচনের আগে মন্তব্য করেছিলেন, সেই শঙ্কা এখনো আছে কি না। আর বাজার কারসাজি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়।
উত্তর দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'ষড়যন্ত্র তো ছিল, ষড়যন্ত্র তো আছে। আপনারা জানেন, আমি আসার পর থেকে বার বার আমাকে বাধা দেওয়া, ক্ষমতায় যেন না যেতে পারি। '৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার ঘটনাই ধরেন না কেন, রাসেলকেও তো ছাড়েনি, কেন যেন ওই রক্তের কেউ বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসতে না পারে। আমি আর আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম, বেঁচে গেছি, ফিরে এসে দায়িত্ব নিয়েছি। আমার চেষ্টাই হচ্ছে, যে স্বপ্ন নিয়ে জাতি দেশ স্বাধীন করেছে, সেটাকে পূরণ করা। ষড়যন্ত্র প্রত্যেকবারই হচ্ছে, আজকে মানুষের ভোটের অধিকার, আমরাই আন্দোলনের মাধ্যমে সেটা প্রতিষ্ঠিত করেছি, গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে এনেছি, তার সুফল দেশবাসী পাচ্ছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচনটা যাতে না হয়, তার জন্য একটা বিরাট চক্রান্ত ছিল, আপনারা জানেন। আপনারা ২৮ অক্টোবরের ঘটনাটা একবার চিন্তা করেন। ২০১৩ সালের যে অগ্নিসন্ত্রাস, ২০১৩, ১৪, ১৫, এরপর আবার গত বছর ২৮ অক্টোবর।'
জাতীয় নির্বাচনের আগে 'সরকার পতনের' এক দফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল,
আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড়ে। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় আরও ডজনখানেক যানবাহনে। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে।
দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোলস্নার।
এরপর বিএনপি টানা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে ফিরে যায়, তাদের ফিরে আসা যানবাহনে আগুন দেওয়ার পুরনো ধারার নাশকতা।
বিএনপির বর্জনের মধ্যেই ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
সেই ঘটনা প্রবাহের প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'যারা এই ধরনের নির্বাচন বানচালের পক্ষে, তারা যখন দেখল যে ইলেকশন কিছুতেই আটকাতে পারবে না, কারণ মানুষের একটা স্বতঃস্ফূর্ততা আছে, তখন চক্রান্ত হলো যে জিনিসের দাম বাড়বে, সরকার জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে, তখন আন্দোলন করে সরকারকে উৎখাত করব। এটা তাদের পরিকল্পনার অংশ। কাদের সেটা আপনারা ভালো বোঝেন, আমি আর কারো নাম বলতে চাই না, বলার দরকারও নেই আমার। কিন্তু এই চক্রান্তটা আছে। তবে এই কথাটা আমি বলতে পারি, এই যে কালকে বৃষ্টি হলো না? কথায় তো আছে, "যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজা পুণ্য দেশ"।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মাঘের শেষে কিন্তু বৃষ্টি হলো, আবার এই ফাল্গুনের শুরুতেও কিছু বৃষ্টি। আমের মুকুলগুলি আবার তরতাজা হয়ে উঠছে। ক্ষেতে কেবল ধানের চারা রোপণ, সেখানেও সেচের আর প্রয়োজন হবে না এই বৃষ্টি যদি ভালোভাবে হয়। মাটির ময়েশ্চার বাড়বে, ফসল ভালো হবে। ফুলের হয়তো একটু ক্ষতি হবে কিন্তু খাদ্যপণ্য উৎপাদনের কোনো অসুবিধা হবে না।'
এদের গণধোলাই দেওয়া উচিত
সেই মহামারির সময় থেকে দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করতে হবে। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে এবং সেটা শুধু বলা না, কার্যকরও করেছি।'
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'এক সময় তো বাংলাদেশে অভাব হলে বলত পেটে ভাত নাই। এখন কি সেই কথাটা বলে? বলে না? কী বলে? ডিমের দাম, পিঁয়াজের দাম, মুরগির দাম, গরুর মাংসের দাম, অথবা পাঙাশ মাছের পেটি খেতে পারছে না, এই তো? এটা কি একটা পরিবর্তন না? ১৫ বছরে তো এই পরিবর্তনটা এসেছে, সেটাতো স্বীকার করবেন।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৫ বছর আগে কী ছিল? ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন ভাত, ভাতের ফ্যান চাইত, এখন তো ভিক্ষা চায় না।'
প্রশ্নকর্তা সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আপনি নিজেই তো বললেন, ডিম লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ানো। আপনার কি এটা মনে হয় না, এই যে যারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন করে, এখানে তাদেরও কিছু কারসাজি আছে? এর আগে এরকম পিঁয়াজের খুব অভাব, দেখা গেল বস্তাকে বস্তা পচা পিঁয়াজ পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলিরে কী করা উচিত? সেটা আপনারাই বলেন। এদের গণধোলাই দেওয়া উচিত। কারণ আমরা সরকার কিছু করতে গেলে বলে সরকার করছে, তার থেকে পাবলিক যদি এটার প্রতিকার করে তাহলে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।'
বাজার নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ
রোজার সময় বাজার নিয়ন্ত্রণের যে চ্যালেঞ্জ, সংবাদ সম্মেলনে সে প্রসঙ্গও আসে। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'রমজানে কিন্তু কোনো জিনিসের অভাব হবে না। ইতোমধ্যে সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করা আছে। এটা নিয়ে অনেকে কথা বলবে কিন্তু কোনো অসুবিধা হবে না। রমজান তো কৃচ্ছ্রতা সাধনের জন্য, রমজানে একটু কম খায়। আমাদের দেশে রমজানে খাবার দাবারের চাহিদা একটু বেড়ে যায়। সাধারণত রমজানে যে বিষয়গুলো, যেমন ছোলা, খেজুর, চিনি এগুলো নিয়ে বেশি চিন্তা। এগুলো পর্যাপ্ত আনার ব্যবস্থা আছে, এগুলো নিয়ে সমস্যা হবে না। সেই ব্যবস্থা অনেক আগেই করে রেখেছি।'
সংরক্ষণের ব্যবস্থা অনেক সময় 'শাখের করাতের মতো' পরিস্থিতি তৈরি করে বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'আমি একটা এলাকার কথা বলি, যেমন পাবনায় পিঁয়াজ উৎপাদন হয়, মাচা করে করে বাতাস দিয়ে রাখা হয়। আপনি জানেন, কৃষকরা কত চালাক, তারা কিন্তু ওই বাজারের দাম দেখে তারপর ছাড়ে। মোবাইল ফোন সবার হাতে আছে, দামটা তারা ঠিকই খবর পেয়ে যায়, কোথায় কী দাম। দাম যদি না পায়, বাজারে ছাড়ে না। এটা অনেকটা শাখের করাতের মতো। আপনি উৎপাদন করবেন, কৃষক উৎপাদন করবে, উৎপাদিত পণ্যটা সে বাজারজাত করবে, আপনি যদি এখন বেশি দাম কমাতে যান, কৃষক তার মূল্য পাবে না। আবার দাম বাড়লে যারা নির্দিষ্ট আয়ে চলতে হয়, তাদের জন্য কষ্ট।' প্রত্যেক বিভাগে আলাদা আলাদা পণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান সরকার প্রধান।
'জেলেনস্কিকে যুদ্ধ বন্ধের কথা
বলেছি, পুতিনকে বলব'
এদিকে, ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের ঘটনাপ্রবাহে ক্ষমতাশালী দেশগুলোর দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করে আবারও যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে জার্মানিতে বিশ্ব নেতাদের ওই সম্মেলনে স্পষ্টভাষায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানোর বিষয়টি তুলে ধরার কথা জানান তিনি।
ওই সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তিনি যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনকে পেলেও একইভাবে কথা বলবেন।
তিনি বলেন, 'আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সরাসরি জিজ্ঞেস করি যে, যুদ্ধটা কীভাবে বন্ধ করা যায় সেটা আমাকে বলেন। আমার সোজা প্রশ্ন ছিল, যুদ্ধ কীভাবে বন্ধ করা যায়, এটাতেতো সবাই কষ্ট পাচ্ছে; মহিলা, শিশু, যুব সমাজ কত জীবন দিচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হলেও সেই একই কথাই আমি বলব যে, আমি যুদ্ধ চাই না, আপনি যুদ্ধ বন্ধ করেন। আমি আমার কথা বলে যাব, তারপর কেউ বুঝলে বুঝুক, আমার কিছু আসে যায় না।'
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের পর জেলেনস্কির কী উত্তর ছিল, এক সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, 'উনি অনেক ব্যাখ্যা দিলেন, কী কী হয়েছে, অনেক কিছু।'
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমি যেটা বলেছি, সেটা স্পষ্ট। আমি বলেছি, আমি যুদ্ধ চাই না। কারণ, যুদ্ধকালীন যে কষ্ট আমরাতো তার ভুক্তভোগী। আমি নিজেইতো ভুক্তভোগী। কাজেই আমার দেশের মানুষ যেভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছে, সেগুলিতো আমরা জানি। কাজেই যেখানে যুদ্ধ হয়, আমি বলি যুদ্ধ আমরা চাই না, আমরা শান্তি চাই। ওখানেও যেটা বলেছি, আজকে গাজায় যেটা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের উপর যেটা হচ্ছে, এটাতো অমানবিক কাজ। হাসপাতালগুলির উপর আক্রমণ, হাসপাতালে যেয়ে সেখানে মানুষকে মারা, বাচ্চাদের কী দুরবস্থা! এটা কি মানবতাবিরাধী না? এটাতো মানবতাবিরোধী।'
ক্ষমতাশালী দেশগুলোর দ্বিমুখী নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা দেখি যে, বিশ্ব মোড়লরা দুদুখো নীতিতে বিশ্বাস করে। এক জায়গায় ফিলিস্তিনের সমস্ত জমি দখল করে ফেলছে, ওটা ইনভেশন না, আর ইউক্রেনেরটা ইনভেশন। তো, দুমুখো নীতি কেন হবে, সেটা আমার প্রশ্ন ছিল।'
অন্যদের দ্বিমুখী নীতির বিপরীতে নিজের স্পষ্ট অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমি জানি, অনেকে স্পষ্ট করে বলবে না সাহস করে। নানা জনের নানা দুর্বলতা থাকে, আমারতো কোনো দুর্বলতা নাই। আমারতো চাওয়া পাওয়া নাই, আমার কাছে ক্ষমতাটা হলো, 'থাকে লক্ষ্ণী, যায় বালাই' বলে একটা কথা আছে না... আমার কাছে সেটাই। থাকলে ভালো, আমি দেশের জন্য কাজ করতে পারছি। না থাকলে আমার কোনো আফসোস নাই। আমার একটা লক্ষ্য ছিল ২০২১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে হবে, বাংলাদেশকে একটা ধাপ তুলতে হবে, আমি সেটা করে দিয়েছি। আর এখন আমি ক্ষমতায় আসব কি আসব না, আমিতো পরনির্ভরশীল হয়ে করি নাই। আমার একমাত্র নির্ভরতা হচ্ছে, আমার দেশের জনগণ।'
'বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে'
এদিকে, বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয় ও উচ্চ-আয়ের দেশের পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ার কাঙ্ক্ষিত পথে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন নীতি ও অংশীদারিত্ব বিষয়ক জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আক্সেল ভন টলেনবার্গ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন নীতি ও অংশীদারিত্ব বিষয়ক জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারিত্বের প্রেক্ষাপটে আমি মধ্যম আয়ের দেশভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবদানের আলোকে বর্তমান অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক হতে অঙ্গীকারকৃত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্রম্নত ছাড়ের আহ্বান জানাই। পাশাপাশি আমি জোরপূর্বক স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে এবং এই সমস্যার বিরূপ প্রভাবে আক্রান্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রদত্ত ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন সহায়তার জন্যও তাকে ধন্যবাদ জানাই।'
শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. আধানম গেব্রিয়েসুস আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আসন্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশে আমাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বের বাকি দেশগুলোকে বাংলাদেশের কমু্যনিটি ক্লিনিক মডেল অনুসরণ করার বিষয়ে অনুপ্রাণিত করার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। আলোচনাকালে আমি বর্তমান সরকারের সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি স্বাস্থ্যসেবা, টিকা উৎপাদন, এন্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ, নার্সিং ও অন্যান্য স্বাস্থ্য খাতে মানব সম্পদ উন্নয়ন ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কথা উলেস্নখ করে এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা আশা করি।