সংসদে আইনমন্ত্রী
বাড়ি ভাড়া নিয়ে নতুন আইনের পরিকল্পনা নেই
প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, বাসাবাড়ির ভাড়া সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে লক্ষ্ণীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ভাড়াটিয়াদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত এবং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সংঘাত নিরসনের জন্য 'বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১' বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনের বিধানসমূহ পর্যালোচনা করা হবে।
নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয়
সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচারকার্যে গতিশীলতা বাড়াতে নানাবিধ কার্যক্রম নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ভবন নির্মাণসহ অন্য প্রয়োজনসমূহ নির্বাহের জন্য বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি নিজেরাই নিজেদের আইনজীবী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে।
মন্ত্রী বলেন, নাটোর আইনজীবী সমিতিকে বহুতল ভবন নির্মাণকাজের জন্য
২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লাইব্রেরি ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ লাখ টাকা এবং লিফট স্থাপনের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার পদগুলো আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই।
আনিসুল হক বলেন, আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন ও বিচার বিভাগের কর্মপরিধিভুক্ত। ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতায় থাকাই যৌক্তিক। সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয় আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন থাকার ব্যাপারটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়।
তিনি বলেন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের একটি আন্তঃসংযোগ স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে এরই মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, গুলশান, সাভার, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পাহাড়তলী, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, টাঙ্গাইলের বাসাইল, নাগরপুর, রাজশাহীর চারঘাট, সিলেটের তাজপুর, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং বরিশালের হিজলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে। এসব অফিসের সঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের আন্তঃসংযোগ স্থাপিত হয়েছে। ২০২১ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত ওই ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মোট এক লাখ ৪ হাজার ১১৬টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগে দলিল নিবন্ধনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ল্যান্ড ট্রান্সফার (এলটি) নোটিশ পাঠাতে বিলম্ব হতো। ই-রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলটি নোটিশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস দ্রম্নততম সময়ে নামজারি কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন।
অপরদিকে, এই আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রাররা কোনো দলিল নিবন্ধনের আগে নামজারির সর্বশেষ অবস্থান দেখতে পান। ফলে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল খতিয়ানের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধন বন্ধ হয়েছে, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। স্বল্প সময়ে ও কম খরচে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হয়েছে- যোগ করেন মন্ত্রী।