'মিছিলে অনেক মুখ/দেখো দেখো প্রতি মুখে তার/সমস্ত দেশের বুক থরো থরো/উত্তেজিত/শপথে উজ্জ্বল!/সূর্যের দীপ্তিতে আঁকা মিছিলের মুখগুলি দেখো/দেখো দৃপ্ত বুক তার/দেখো তার পায়ের রেখায়/দেশের প্রাণের বন্যা উচ্ছল উত্তাল।' খ্যাতিমান কবি আহসান হাবীবের বিখ্যাত কবিতা 'মিছিলে অনেক মুখ' এর এই পঙ্তিমালার মতো একুশের ভোরে শহীদ মিনারে জড়ো হওয়া প্রতিটি মানুষের চোখে পূর্ব আকাশে উদীয়মান সূর্যের রাঙা আলোর ছটা।
হাতে রাশি রাশি ফুল, কণ্ঠে অমর একুশের আবেগ জড়ানো গান। নগ্নপদ মিছিল। এই পথ চলায় কোনো ক্লান্তি নেই। দীর্ঘ অপেক্ষায়ও নেই কোনো শ্রান্তি; নেই বিশৃঙ্খলা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারদিকের রাস্তা জুড়ে ছিল সারিবদ্ধ মিছিল। হাজারো মানুষের চোখে-মুখে দৃপ্ত শপথ। হারানোর শোক ছাপিয়ে গৌরবের উচ্ছল আলোর ঝলকানি।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বুধবার সারা দেশ ছিল উদ্বেলিত। সমগ্র জাতি অপার শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করেছে মৃতু্যঞ্জয়ী ভাষাশহীদদের এবং গৌরবোজ্জ্বল সেই দিনটিকে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার পর একুশে ফেব্রম্নয়ারি পালনে এ দিনটিতে এসেছে নতুন ব্যঞ্জনা। গতকাল তাই কর্মসূচি জুড়ে শোক ও শ্রদ্ধা প্রকাশের পাশাপাশি ছিল উৎসবের আমেজ। একুশের চেতনা রক্ষার দৃঢ় অঙ্গীকারও দেখা গেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। তাই বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছিল বিকৃত বাংলা উচ্চারণ বন্ধ, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার এবং বাংলাকে জাতিসংঘের ভাষা হিসেবে দেখার আকুতিও।
প্রথা অনুযায়ী, একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দলের
নেতাদের সঙ্গে করে দ্বিতীয়বার শহীদ-বেদিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শহীদ মিনারে আসার পর পর মিনার চত্বরে বেজে উঠে অমর সঙ্গীত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রম্নয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি'। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকরাও ফুল নিয়ে হাজির হন শহীদ মিনারে। শ্রদ্ধা জানান ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতারা।
ঢাকার দুই সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শহীদ বেদীতে। সহকর্মীদের নিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়, সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।
পরে, ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শহীদ মিনার চত্বর সাধারণ জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হলে, গভীর রাতেই শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিপুল সংখ্যাক মানুষ। নগ্নপদে, অবনত মস্তকে তারা শীহদদের স্মরণ করেন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা। পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, কৃষি ও সমবায় ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সকাল সাড়ে ৯টায় দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এর আগে সকাল ৮টায় আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের কবরে ফাতেহা পাঠ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, আমিনুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নাসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ সময় ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সচিব সেবাষ্টিন রেমা, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক।
রাজধানী ঢাকার বাইরে, বিভিন্ন বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা সদর এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে অমর একুশে। দিবসটি উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরসহ বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনেই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রবাসীরাও বিদেশের মাটিতে শহীদ মিনার গড়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন ভাষার জন্য শহীদদের।
এদিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে ভোর থেকেই ছিল লোকে লোকারণ্য। তরুণ-যুবাদের সঙ্গে এই জনারণ্যে ছিলেন প্রৌঢ় ও শিশুরা। শহীদ মিনার ছাড়াও আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের কবর জিয়ারতও করেছেন তাঁরা।
সকালে শহীদ মিনার এলাকা রূপ নেয় জনসমুদ্রে। হাজার হাজার মানুষ খালি পায়ে, বুকে শোকের প্রতীক কালো ফিতা লাগিয়ে, ফুলের তোড়া হাতে হাজির হয় ভাষাশহীদদের স্মৃতির স্মারকে। প্রভাতফেরির সারি পলাশী পেরিয়ে চলে যায় আজিমপুর পর্যন্ত। দুপুর পর্যন্ত চলে দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বাঙালির গর্বের মিনার। আজিমপুর কবরস্তানে শহীদদের সমাধিও ঢেকে যায় শ্রদ্ধার ফুলে।
এদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাংস্কৃতিক মঞ্চগুলোতে ছিল উপচানো ভিড়। নানা আয়োজনে মুখর ছিল সরকারি ছুটির এ দিনটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও হারিয়ে যেতে বসা ভাষাগুলোকে রক্ষার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ দিবসটিকে এ স্বীকৃতি দেয়। ভাষার জন্য আত্মদানের বাঙালির বেদনাময় অধ্যায়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গৌরবগাথা।
রামপুরার গৃহবধূ সোনিয়া আলম শহীদ মিনারে এসেছিলেন তার স্কুলপড়ুয়া দু'শিশুসন্তান নিয়ে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি বলেন, আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকারের একুশের অনুষ্ঠান দেখাতে সন্তানদের নিয়ে ভোরে বাসা থেকে বের হয়েছি। ওদের স্কুলের অনুষ্ঠান শেষ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছি। সন্তানদের কারো ক্লান্তি নেই। ওরা বইয়ে একুশে ফেব্রম্নয়ারির ঘটনা পড়েছে। কিন্তু এই প্রথম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দেখলো। শিশু সন্তানদের আত্মপরিচয়ের সন্ধান দিতেই বেশকিছু জরুরি কাজ ফেলে তাদেরকে শহীদ মিনারে ছুটে এসেছেন বলে জানান সোনিয়া।
পোশাকে, রঙে, আঁকায় সর্বত্রই ছিল একুশের চেতনা: সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে ও জাতীয় জাদুঘরের সামনে চলতে থাকে দুই গালে শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা বা অ-আ-ক-খ আঁকিয়ে নেওয়া। হাতে তুলি আর রং নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অসংখ্য তরুণ-তরুণী। মানুষের গালে আর কপালে তারা এঁকেছেন বর্ণমালা, পতাকা, শহীদ মিনার আর আল্পনা। হৃদয়ে ধারণ করা একুশের চেতনার অনুবাদ নানা ভাষায়, নানা রঙে প্রকাশ পেয়েছে গতকাল বাংলা একাডেমি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাজুড়ে।
একুশের প্রভাত ফেরিতে অংশ নেওয়া মানুষের পোশাকে ছিল কালো-সাদার প্রাধান্য। বাংলা ভাষায় লেখা সাহিত্য, কবিতার পঙক্তি, গানের কলি পোশাকে ভর করে হেঁটে বেড়িয়েছে। কপাল আর গালে তুলি চালিয়েছেন আঁকিয়েরা। ফুটে উঠেছে শহীদ মিনার, বাংলাদেশের পতাকা আর বর্ণমালা।
সাদা-কালো জমিনে উঠে এসেছে বর্ণমালা থেকে কবিতা, গান। একুশের চেতনা ফ্যাশনেও স্থান করে নিয়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং আশপাশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনে আসা মানুষের পোশাকের রঙে, ভাষায় ছিল একুশের চেতনার প্রকাশ।
এবার মহান শহীদ দিবসের ৭২তম বছর পূর্ণ হচ্ছে। মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা বাংলা মায়ের সাহসী সন্তানদের অনন্য আত্মত্যাগের এই দিনকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকে সারা বিশ্বেই নিজ নিজ মাতৃভাষা নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির ভেতর দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে।
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগের পর পাকিস্তানের পূর্বাংশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিদের ওপরে শোষণ-নির্যাতনের প্রক্রিয়া শুরু করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা। প্রথমেই তারা আঘাত হানেন বাঙালির মাতৃভাষার ওপরে। পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের মার্চে ঢাকা সফরকালে রেসকোর্স ময়দানের ভাষণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে সমাবর্তন ভাষণে 'উর্দুই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে' ঘোষণা দিলে ছাত্র-জনতা এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। তারপর থেকেই মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শুরু হয় বাঙালির আন্দোলন। ছাত্র-জনতার সেই আন্দোলন ধাপে ধাপে বেগবান হয়ে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে।
অবশেষে আসে সেই চরম প্রতিবাদের দিন। ঢাকায় ছাত্র-জনতা শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন। সেই উত্তাল মিছিলে পুলিশ নির্বিচার গুলি চালালে সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বারসহ নাম নাজানা অনেকে শহীদ হন।
শহীদের বুকের তাজা রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হলে সারাদেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। জনগণের সুতীব্র আন্দোলনে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা নতি স্বীকার করেন। বাঙালির দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন। ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে যে আত্মচেতনা ও জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটেছিল, পরবর্তী সময়ে সেটিই স্বাধিকার আন্দোলনে রূপ নেয়। এর চূড়ান্ত বিকাশ ঘটে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভু্যদয়ে।