শুল্ক ছাড় দেওয়ার পর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন দাম আগামী ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে টাস্কফোর্স ও জাতীয় কমিটির সভায় সয়াবিন তেলের দাম কমানোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এনবিআর ভোজ্যতেলের শুল্ক বাবদ ৫ টাকা কমালেও রোজা সামনে রেখে মিল মালিক বা পরিশোধনকারীরা লিটারে ১০ টাকা করে
কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ মার্চ থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।
তাতে সয়াবিন তেল এক লিটারের বোতলে ১০ টাকা কমে ১৬৩ টাকায় বিক্রি হবে। এখন দাম নির্ধারিত আছে ১৭৩ টাকা। আর খোলা সয়াবিন তেল দাম কমার পর বিক্রি হবে ১৪৯ টাকায়।
তবে আপাতত পাম তেলের দাম কমানো হচ্ছে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ তৈরি হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এখন মৌখিকভাবে কথা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত এলে আপনাদের সামনে প্রকাশ করব।'
ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও ভোগ্যপণ্যের সীমান্ত বাণিজ্য সহজ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে নিত্যপণ্য নিয়ে এমওইউর একটি খসড়া আমাদের কাছে এসেছে। আশা করছি, অচিরেই এটি চূড়ান্ত হবে। মিয়ানমারের চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আদা সহজে নিয়ে আসতে পারব আমরা।'
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ আমরা শুরু করেছি। এই রমজানে আরও দুইবার আমরা এটা করব। সেখানে চাল থাকবে ৫ কেজি, তেল থাকবে, ডাল থাকবে, চিনি, খেজুর এবং ছোলা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যারা ব্যবসায়ী আছেন বিভিন্ন পর্যায়ের তারা নিশ্চিত করেছেন- আগামী রমজানে যে পরিমাণ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বাজারে থাকা দরকার বা মজুদ থাকা দরকার বা পাইপলাইনে থাকা দরকার সবগুলোই মোটামুটি পর্যাপ্ত আছে। মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গোলাম মাওলা বলেছেন, উৎপাদনকারী যারা আছেন তাদের সরবরাহ যদি ঠিক থাকে, উনাদের কাছে যে আমদানিকৃত পণ্য আছে এবং যে পরিমাণ মজুদ আছে এটা রমজানের জন্য যথেষ্ট।
টিটু বলেন, মিয়ানমারে সব সময় নিউজ হয় আমাদের বর্ডার ও রোহিঙ্গা নিয়ে। মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমরা যেন বর্ডার থেকে নদী পথে আনতে পারি সে ধরনের একটি এমওইউ ড্রাফট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। উনি বিষয়টিকে পজিটিভভাবে নিয়েছেন। আমাদের নৌ-পরিবহণ মন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে দ্বিপাক্ষিক নৌ-পরিবহণ চুক্তির মাধ্যমে আমরা যেন মিয়ানমার থেকে সহজে পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পারি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের নেতৃত্বে আগামী ২২ তারিখ মৌলভীবাজারে যাব। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করব যাতে তারা পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো ভোক্তাদের জন্য পর্যাপ্ত রাখতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষের পরিচালনায় সভায় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি এফবিসিসিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বড় জোগানদাতা বেসরকারি উদ্যোক্তারা অংশ নেন।