১৩ সদস্য নিয়েই সংসদ কাঁপাতে চায় জাপা

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
নির্বাচিত ১১ জন ও সংরক্ষিত দুই সদস্য (এমপি) নিয়েই সংসদ কাঁপাতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু রোববার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন। নির্বাচিত ১১ জন, সংরক্ষিত মিলে ১৩ জন; এই ১৩ জন মিলে সংসদে কোন উপকার করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, 'যদি সংখ্যার দিকটা দেখেন গত পার্লামেন্টে অপজিশন (বিরোধী) অনেকেই ছিল। কিন্তু দিনের পর দিন সংসদ বর্জন করছে। মাসের পর মাস বছরের পর বছর বর্জন করেছে। অপজিশন লিডার (বিরোধীদলীয় নেতা) পাঁচ বছরে মাত্র ১০ দিন পার্লামেন্টে এসেছিলেন। তাই ওইরকম সংখ্যা দিয়ে লাভ কী, ১৩ জন যদি আমরা অ্যাক্টিভ (সক্রিয়) থাকি, জনগণের পক্ষে কথা বলি, সোচ্চারভাবে সাহসের সঙ্গে জনগণের মনের কথা বলতে পারি, সংখ্যাটা বড় নয়, কম সংখ্যা দিয়েও জনগণের পক্ষে কথা বলা যায়। পার্লামেন্টকে কাঁপানো যায়।' তিনি আরও বলেন, 'নিশ্চয় আপনারা ইতিহাস জানেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন সংসদ নেতা ছিলেন তখন একজন সংসদ সদস্যই, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদ কাঁপিয়েছিলেন। মনে হয় আমরা বর্তমানে পার্লামেন্টে যারা আছি ১১ জন, একজন ছাড়া অন্যরা কয়েকবার সংসদ সদস্য ছিলেন। পার্লামেন্টে কথা বলার মতো ক্যাপাসিটি (সক্ষমতা) আছে। আমরা আগে বলেছি। আশা করি, এদেশের জনগণের কথা বলা, সরকারের দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দেওয়া, সরকারের দুঃশাসন-দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠে গত পার্লামেন্টে বলেছি, এই পার্লামেন্টে নিশ্চয়ই বলবো। আমাদের ওপর জাতি ভরসা রাখতে পারে।' গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা এগিয়ে না নিয়ে জাতীয় পার্টি ধারাবাহিকতা নষ্ট করেছে এমন বিষয় সামনে আনলে জাপা মহাসচিব বলেন, 'আপনি যেটা বলছেন এটা বিএনপির কথা। যারা নির্বাচনে আসেনি। আপনি কী মনে করেন, আমরা নির্বাচনে না এলে যদি দেশে নির্বাচন না হতো তাহলে কী হতো, বিষয়টি একটু চিন্তা করলে উত্তর পেয়ে যেতেন।' তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টির ইতিহাস নির্বাচন বর্জন নয়। কারণ নির্বাচন ছাড়া পার্লামেন্ট রাজনীতিতে ক্ষমতা অদল-বদলের আর কোনো সুযোগ নেই। সেখানে বাংলাদেশে নির্বাচন না হলে এখানে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি কায়েম হওয়ার সুযোগ ছিল। আমি তো মনে করি, আমরা দেশের মানুষের জন্য গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সঠিক কাজ করেছি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা মনে করি গণতন্ত্রকে বাঁচিয়েছি।' এর আগে জাপার সংরক্ষিত দুই নারী আসনের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। চুন্নু বলেন, 'বর্তমান জাতীয় সংসদের আইন অনুযায়ী ৫০ জন সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে আমরা জাতীয় পার্টি দুটি আসন পাই। জাতীয় পার্টি পার্লামেন্টারি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি নুরুন নাহার বেগম; দুইজন আমাদের দলের পরীক্ষিত নিবেদিত পুরোনো কর্মী, তাদের এবার দলের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।' জাতীয় পার্টির নামে ৪-৫টা গ্রম্নপ আছে জাতীয় পার্টিতে রওশনপন্থি অংশের কাউন্সিল প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'আমরা কোনো কাউন্সিল ডাকিনি। বাইরে কে কাউন্সিল ডাকলো বা না ডাকলো, এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।' তিনি বলেন, 'বাইরে ১০টা পার্টি হতে পারে, ১০টা কমিটি হতে পারে। এতে আমাদের কিছু যায় না। জাতীয় পার্টি যেটা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে, আমরা কোনো কাউন্সিল ডাকি নাই। অন্য যারা ডেকেছে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নাই।' রওশনের সংবাদ সম্মেলনে জাপার কো-চেয়ারম্যান ফিরোজ রশীদ ও বাবলার উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ফিরোজ রশীদকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাবলাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় নাই। উনি যদি মূল দলের সঙ্গে থাকতে না চান তাহলে আমার মনে হয় উনার পদত্যাগ করা দরকার ছিল। কেন করেন নাই, আমি জানি না।' বাবলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'যেহেতু তিনি অন্য দলে গেছেন, সেখানে বক্তব্য রেখেছেন, এটা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন।' জাতীয় পার্টির নামে ৪-৫টা দল আছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টি মঞ্জু গ্রম্নপ, জাতীয় পার্টি কাঁঠাল গ্রম্নপ, সাইকেল মার্কা, মই মার্কা এমন অনেক গ্রম্নপ আছে। আরেকটা হতেই পারে। সবার স্বাধীনতা আছে। কেউ জাতীয় পার্টির নামে ব্র্যাকেটবন্দি আরেকটা দল করতেই পারেন। সেখানে আমরা বাধা দিতে পারি না।' কো-চেয়ারম্যান বাবলাকে জাপা থেকে অব্যাহতি দিলেন জিএম কাদের এদিকে রওশ?ন এরশাদের স?ঙ্গে যোগ দেওয়ায় সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা?কে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানসহ দ?লের সব পদ থে?কে অব্যাহতি দি?য়ে?ছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কা?দের। রোববার জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলাকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদসহ দলীয় সব পদপদবি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।'