কেউ যেন দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে না পারে

মিউনিখে প্রবাসীদের সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার মিউনিখে জার্মান আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
স্বাধীনতা বিরোধীরা যাতে দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাতে জার্মান প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অবশ্যই এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। দেশকে কেউ যেন পেছনের দিকে ঠেলে দিতে ও রাজাকারের দেশে পরিণত করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ফল সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি কখনই ভাবি না আমার কী দরকার, বরং আমি ভাবি যে আমি দেশ এবং এর জনগণের উন্নতির জন্য কী করতে পারি। আওয়ামী লীগ আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। দল ক্ষমতায় থাকায় আমরা কোভিড-১৯ মহামারির মতো বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পেরেছি।' তিনি বলেন, 'যখনই সুযোগ পাই জনগণের কল্যাণে কাজ করি। আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে কারণ তারা প্রয়োজনে দলকে সবসময় পাশে পায়। আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্য শুধু মেগা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা নয়, তৃণমূলেও অগ্রগতি করা।' বিএনপিকে লুটেরাদের দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দল জনগণের কল্যাণে কিছুই করে না, বরং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলে। তারা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষকে পুড়িয়ে মারার কারণে পরাজয়ের ভয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি কারণ তারা জানে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য। গত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা অবাধে ভোট দিয়েছে। এবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় না বসালে ২০০৯ সাল থেকে গত ১৫ বছরে আ'লীগ শাসনামলে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেত। লুটেরা (বিএনপি) সব লুট করে নিত। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত দলগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, 'নির্বাচনের আগেও বলেছে, আন্দোলন করে নাকি আমাদের সরকার উৎখাত করবে। তো আন্দোলন করতে করতে সরকার উৎখাত তো দূরের কথা, জনগণের ভোট যেন আরও কয়েকগুণ বেশি পেল (আওয়ামী লীগ)।' তিনি বলেন, 'এখন আবার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আর আমাদের কিছু খুচরা পার্টি আছে তারা লাফাচ্ছে।' শেখ হাসিনা বলেন, 'গণভবনে তো আপনারা যান। গণভবনে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি সব আছে, বাগান আছে, সবকিছু তৈরি হয়। তো আমার একটা ছাগলের তিনটা বাচ্চা হয়েছে। এখন দেখি দুটা বাচ্চা দুধ খায়। আরেকটা তিড়িং বিড়িং করে শুধু লাফায়। আমাদের দেশেও রাজনৈতিক দল কিছু আছে। একজন যদি কথা বলে তো তারা তিড়িং বিড়িং করে লাফায়। কিন্তু আসলে কিছুই করতে পারে না।' আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'এখানে আরেক মজার ব্যাপার হচ্ছে, একেবারে অতি বাম অতি ডান তারা আবার একসঙ্গে হয়ে যায়। প্রশ্ন করলে বলে, আমরা তো একসঙ্গে হইনি আরেক দিকে মুখ করে ছিলাম। কিন্তু আপনারা দেখেন ওদিকে কমিউনিস্ট পার্টি এদিকে জামায়েত ইসলামী থেকে শুরু করে, সব আবার খুব আদর্শবাদী কথা, বিপস্নব করবে, সব হবে। বিপস্নব করতে করতে তারাও... হওয়ার পথে। আরেক দিকে বিএনপির অবস্থা তো আপনারা জানেনই।' সরকার প্রধান বলেন, 'আমরা যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা দিয়েছি সেই অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের উন্নত সমৃদ্ধি স্মার্ট বাংলাদেশ।' শেখ হাসিনা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং মিউনিখের স্থানীয় মেয়র অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিউনিখ পৌঁছান শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগদানের আগে গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল-রহমান আল-থানি। এছাড়া উইমেন পলিটিক্যাল লিডারসের (ডবিস্নউপিএল) সভাপতি সিলভানা কোচ-মেহরিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।